দারোয়ান সেজে মোটরসাইকেল চুরি, শেষে ডিবির হাতে ধরা

প্রকাশ: ১০ জুন ২১ । ২১:৪৯

সমকাল প্রতিবেদক

রাজধানীতে মোটরসাইকেল চোর চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।

মোটরসাইকেল চুরির উদ্দেশ্যে আবাসিক ভবনে দারোয়ান বা কেয়ারটেকারের চাকরি নিচ্ছিল
রাজধানীর মোটরসাইকেল চোর চক্রের সংঘবদ্ধ সদস্যরা।



পরে হাতিরঝিলের মধুবাগ এলাকায় চোরাই মোটরসাইকেল বেচাকেনার তথ্য পায় ডিবির লালবাগ
বিভাগ।পরে ক্রেতা সেজে চোর চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।



তাদের দেওয়া তথ্য ধরে পরে গ্রেপ্তার করা হয় আরও তিন জনকে।পরে তাদের কাছ থেকে
১৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে ডিবি সদস্যরা।



গ্রেপ্তার হওয়া ৮ সদস্য হলেন, দল নেতা ফারুক হোসেন ও সদস্য আবুল কালাম আজাদ,
মোঃ রুবেল, সাগর মিয়া ওরফে ভাষানী, মোঃ বাবু, আফজাল হোসেন, রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসেল
এবং হেলাল হোসেন।



বৃহস্পতিবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করা হয়।



ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ সমকালকে বলেন, ‘এই চক্রের
কোনো কোনো সদস্য একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে চুরির ঘটনায়। জামিনে বেরিয়ে ফের একই কাজ
শুরু করে তারা। চক্রটি অভিনব কৌশলে মোটরসাইকেল চুরি করে। কে কী দায়িত্ব পালন করবে তা
আগে থেকেই বণ্টন করা থাকে।



তিনি জানান, চক্রের আট সদস্য গ্রেপ্তার হলেও এখনও অনেকেই পলাতক রয়েছে। তাদের
গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।



রাজীব আল মাসুদ জানিয়েছেন, যাদের মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে, উদ্ধার হওয়া গাড়ির
মধ্যে তাদের গাড়ি আছে কিনা ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর দেখে যাচাই করে নিতে পারবেন।



ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জুন হাতিরঝিলের মধুবাগ এলাকায় চোরাই মোটরসাইকেল
বেচাকেনার তথ্য পায় ডিবির লালবাগ বিভাগ।সেদিন বিকালে সেখানে অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য
আবুল কালাম, রুবেল, সাগর, বাবু, আফজাল ও রাশেদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে ৫টি
মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।



পরে তাদের দেওয়া তথ্যে কুমিল্লা থেকে তাদের দল নেতা ফারুক ও চোরাই মোটরসাইকেল
বিক্রির দায়িত্বে থাকা হেলালকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার করা হয়।



পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, চোরাই মোটরসাইকেল তারা নিজেরাই চালিয়ে
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তী এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর চক্রটি দলনেতা ফারুক মোটরসাইকেলের
বাহ্যিক কিছু বিষয় পরিবর্তন করে চাঁদপুর, নোয়াখালী ও কুমিল্লায় বিক্রি করে।



এসব মোটরসাইকেল ভারত সীমান্ত দিয়ে আনা হয়েছে বলে ক্রেতাদের জানানো হয়। এছাড়া
মোটরসাইকেলে নতুন পলি স্টিকার লাগিয়ে নতুন গাড়ির মত করে তুলে ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে।



কখনও চোরাই মোটরসাইকেল কাস্টমস থেকে নিলামে কেনা হয়েছে বলেও জানানো হয় ক্রেতাকে।
সেক্ষেত্রে নিলামের স্টিকার, ভুয়া কাগজপত্রও তৈরি করা হয়।



তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দারোয়ানের চাকরি নেওয়ার পাশাপাশি একাধিক কৌশল
নেয় চক্রটি। ঢাকার অনেক বাড়িতে দারোয়ান থাকে না, কিন্তু মোটরসাইকেল রাখা হয়। এসব বাড়ির
বিষয় দিনে খোঁজখবর নেয়। সেসব ভবনের গেটের তালা ভেঙে ঢোকে তারা।



মোটরসাইকেলের সেল্ফ'র সঙ্গে ব্যাটারির তারের সঙ্গে লাগিয়ে মোটরসাইকেল স্ট্রাট
করে নিয়ে যায়। দিনেও তারা মোটরসাইকেল চুরি করে। সেক্ষেত্রে 'মাস্টার কি' ব্যবহার করা
হয়। এছাড়া যে বাড়ির গ্যারেজে একাধিক মোটরসাইকেল থাকে, তার আশপাশে কোনো ভবনে ভাড়াটে
হিসেবে ওঠে। দিনরাত খোঁজ খবর রাখে সেখানে। সুযোগ বুঝেই চুরি করে।



 



 

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com