আদমজী ইপিজেড

পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ৩০, সড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ১২ জুন ২১ । ২২:৫৭

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

গার্মেন্ট মালিকপক্ষের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শনিবার ছিল বকেয়া বেতন পরিশোধের দিন। তাই সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার আদমজী ইপিজেডের সামনে জড়ো হন শ্রমিকরা। কিন্তু ইপিজেডের আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এ সময় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

সকাল ৮টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গার্মেন্ট মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনরত শ্রমিকদের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। ৯টার দিকে পুলিশ সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরানোর চেষ্টা করলে শুরু হয় শ্রমিকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা। এক পর্যায়ে তা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়। পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন আনসার সদস্যরাও। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শটগানের গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। বেলা ১১টার দিকে ছত্রভঙ্গ হয়ে সড়ক ছেড়ে যান শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের অভিযোগ, পোশাক কারখানা কুনতুনের (সাবেক ফ্যাশন সিটি) মালিকপক্ষের দেওয়া সময় অনুযায়ী গতকাল ছিল বকেয়া পাওনা পরিশোধের দিন। কিন্তু মালিকপক্ষ তাদের বেতন না দিয়ে পুলিশ-আনসার দিয়ে তাদের রক্ত ঝরিয়েছে। আহত শ্রমিকরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পোশাক শ্রমিক মনি আক্তার জানান, তিনি ৪ বছর এ কারখানায় কাজ করেছেন। এ সময় তার প্রায় ১ লাখ টাকা বকেয়া জমেছে। তানিয়া ও রিনা জানান, ৯ বছর কাজ করে তাদেরও লাখ টাকার বেশি পাওনা রয়েছে।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, শ্রমিকরা জানিয়েছে, মালিকপক্ষ তাদের বারবার সময় দিয়েও পাওনা পরিশোধ করছে না। মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ('ক' সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে আগুন দিয়ে অবরোধ করে এবং ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১২ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে এবং ১১টি টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পরে পরিস্থিতি এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষ কিছুই জানায়নি।

এ বিষয়ে বেপজার জিএম আহসান কবির জানান, কারখানা বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ। তবে পাওনা পরিশোধের নির্ধরিত কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com