মগবাজারে বিস্ম্ফোরণ

অবহেলার মামলা পুলিশের তদন্ত কমিটির কাজ শুরু

আরও একজনের লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ৩০ জুন ২১ । ০০:০০ | আপডেট: ৩০ জুন ২১ । ০২:৩৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

বিশেষ প্রতিনিধি

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ম্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রমনা থানায় মামলাটি করা হয়। এতে অবহেলাজনিত প্রাণহানির অভিযোগে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এদিকে বিস্ম্ফোরণে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে নিখোঁজ তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ হাওলাদারের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। গতকাল বিকেলে সিঁড়ির কাছে চিলেকোঠা-সংলগ্ন এলাকায় চাপা পড়া অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। এ নিয়ে এ ঘটনায় আটজন নিহত হলেন। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। চিকিৎসাধীন তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এছাড়া বিস্ম্ফোরণের ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ একাধিক সংস্থা।

পুলিশের মামলার এজাহারে বলা হয়, ধসে পড়া ভবন মালিকের অব্যবস্থাপনা, অতি পুরোনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ব্যবস্থাপনা অথবা ভাড়াটিয়া দোকান শর্মা হাউসের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা; অথবা বেঙ্গল মিটের অননুমোদিত

গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা; নিচতলায় গ্র্যান্ড কনফেকশনারির অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা; অথবা দ্বিতীয় তলায় সিঙ্গার ইলেকট্রনিকসের অননুমোদিত বৈদ্যুতিক সামগ্রী মজুদ রাখা ও অবহেলা, অথবা তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবহেলাজনিত গ্যাস সরবরাহ অথবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানির ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ, অথবা ঘটনাস্থলের সামনে সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত ও গাফিলতিপূর্ণ ড্রেন খনন কাজের জন্য এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, মগবাজারের রেখা নীড় ভবনের কোনো অংশে বিস্ম্ফোরণের বিকট শব্দে ভবনের সামনের ও পেছনের অংশ ধসে পড়ে এবং ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের সামনে তিনটি যাত্রীবাহী বাস ক্ষতিগ্রস্ত ও এর যাত্রীরা আহত হন। আশপাশের কয়েকটি ভবন, তার মধ্যে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৭, ৭৮, ৭৯/১, ৮১ নম্বর ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপারে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ভবনের ক্ষতি হয়।

ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে হারুন অর রশিদ হাওলাদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

হারুন অর রশিদের মেয়ে হেনা বেগম বলেন, গত রোববার ওই বিস্ম্ফোরণের পর থেকে তার বাবা নিখোঁজ ছিলেন। অনেক হাসপাতাল খুঁজেও তাকে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের জানানো হয়। এরপর তারা লাশ উদ্ধার করেছেন।

এদিকে বিস্ম্ফোরণের কারণ নির্নয় ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের তদন্তকারী দলের সদস্যরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পাশের আরেকটি দোতলা ভবন হেলে পড়েছে। ওই ভবনের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।

এছাড়া মগবাজারে বিস্ম্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তাদের প্রাথমিক ধারণা, গ্যাস থেকেই দুর্ঘটনার সূত্রপাত।

ওয়্যারলেস গেটে ভয়াবহ এই বিস্ম্ফোরণে ভবন ধসে হতাহতের ঘটনার কারণ খুঁজতে সোমবার সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে পুলিশ। এর প্রধান করা হয় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামানকে। গতকাল সকালে তার নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা করে ১২ শতাংশ মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে এই গ্যাসের উৎস কী, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।



© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com