
ডায়াবেটিস চিকিৎসা: বর্তমান ও আগামীর ভাবনা
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২১ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
--

ডায়াবেটিস আক্রান্তদের চিকিৎসা ও ওষুধের পাশাপাশি বিনামূল্যে ইনসুলিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্চ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা নিতে অক্ষমরা এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল কর্মসূচির আওতায় একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দেশের কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আক্রান্তরা বিনামূল্যে পাচ্ছেন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও ওষুধ। একই সঙ্গে চারটি উপজেলায় পাইলট প্রকল্প আকারে ইনসুলিন বিতরণ কার্যক্রমও চলছে। ধাপে ধাপে এ কার্যক্রম দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে গোলটেবিল আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) ও সমকাল যৌথভাবে এ আয়োজন করে। 'ডায়াবেটিস চিকিৎসা :বর্তমান ও আগামীর ভাবনা' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধ ও ইনসুলিন বিতরণের পাশাপাশি চিকিৎসার গুণগত মান বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ, জনবল বাড়ানো, ওষুধের দাম কমানো, ঝুঁকিপূর্ণ খাবারের ওপর শুল্ক্ক বৃদ্ধি ও ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের মোড়কে ক্ষতিকর বার্তা লেখা, শরীর চর্চার জন্য পর্যাপ্ত মাঠের ব্যবস্থা, জনসচেতনতা বাড়ানোসহ বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। তাদের অভিমত, সরকারের একার পক্ষে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সামাজিকভাবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ জন্য বেসরকারি সংস্থা, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপাসনালয়সহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঘাতক ব্যাধি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অন্যথায় সরকার গৃহীত উদ্যোগও ব্যর্থ হতে পারে।
জাহিদ মালেক
অসংক্রামক রোগের কারণে দেশের অন্তত ৬১ ভাগ মানুষ কোনো না কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। ডায়াবেটিস এমনই একটি নীরব ঘাতক। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় এক কোটি। বাস্তবে আরও বেশি হতে পারে। অল্পবয়সীদের মধ্যেও ডায়াবেটিস হচ্ছে। অনেকেই ডায়াবেটিস নিয়ে জন্ম নিচ্ছে, এর সংখ্যা ১৮ হাজার। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এটি নীরব ঘাতক। এটি নীরবে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। ডায়াবেটিসের কারণে কিডনি রোগী বাড়ছে। উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক ও অন্ধত্ব দেখা দিচ্ছে। দেশের শহরাঞ্চলের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই এ বিষয়ে সচেতন নয়। দেশের মাত্র ১২ ভাগ মানুষের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এটি আমাদের জন্য সতর্কবার্তা। তবে এখন সচেতনতা বেড়েছে। কিন্তু সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। শনাক্তের ওপর জোর দেওয়া উচিত। শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
অনেক মানুষ অর্থাভাবে এ রোগের চিকিৎসা নেন না। এই মানুষদের জন্য দেশে সব সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস রোগের প্রায় সব ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যয়বহুল এ রোগের চিকিৎসায় বিনামূল্যে ইনসুলিনও দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
শিশুরা এখন খেলাধুলার পরিবর্তে আইফোন, ট্যাব, কম্পিউটারে গেম খেলতে পছন্দ করে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয় পান ও ফাস্টফুড গ্রহণ করছে। এতে অল্প বয়সেই তারা মুটিয়ে যাচ্ছে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। সুতরাং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে তাদের এই অভ্যাসের পরিবর্তন করতেই হবে। এ জন্য অভিভাবকদের দায়িত্ব নিতে হবে। হাঁটাচলা, ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। খেলাধুলার জন্য জায়গা দরকার। শহর ও গ্রামে খেলাধুলা ও শরীর চর্চার উন্মুক্ত জায়গাগুলো ক্রমে দালানকোঠার কারণে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। মাঠের সংখ্যা বাড়াতে হবে। করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করছে। এতে তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। অনলাইন ক্লাস আস্তে আস্তে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ইনসুলিন বিতরণের মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ কিংবা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এ জন্য সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
এ কে আজাদ খান
মানবদেহে ইনসুলিন নামক হরমোনের ঘাটতি হলে কিংবা উৎপাদিত ইনসুলিন কার্যকরভাবে শরীরে ব্যবহূত না হলে অথবা শরীরের ইনসুলিন নিষ্ফ্ক্রিয় থাকলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। এ গ্লুকোজ পরে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। এ অবস্থার নামই ডায়াবেটিস। একবার কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে সারাজীবন তাকে এ রোগ বহন করতে হয়। তবে টাইপ-১ বা ইনসুলিননির্ভর ডায়াবেটিস অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জীবনযাত্রার পরিবর্তন করে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সুতরাং সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ জন্য ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস দিবস পালন আমার চিঠি দেওয়ার কারণেই শুরু হয়। ২০০৬ সালে এটি গৃহীত হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে দিবস পালন হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারই ইউএন রেজ্যুলেশনের উদ্যোক্তা। ইউএন রেজ্যুলেশনের অংশ হিসেবে সরকার এ-সংক্রান্ত পলিসি নির্ধারণ করবে। অথচ দেশে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও ন্যাশনাল পলিসি-সংক্রান্ত খসড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে। উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই, ফাস্টফুডের প্যাকেটে খাদ্যের ভ্যালু লিখে দেওয়া হোক। মানুষ এটি দেখলে ফাস্টফুড কম খাবে। এরপরও যারা ফাস্টফুড গ্রহণ করবে, তাদের বেলায় বলতে হবে, জেনেশুনে করেছি বিষপান। জেনেশুনে এই বিষ হয়তো কিছু মানুষ কম খাবে। যা হোক, ওই ন্যাশনাল পলিসি বাস্তবায়ন করা জরুরি। আশা করি, এ বছর এটি বাস্তবায়ন হবে।
মোহাম্মদ রোবেদ আমিন
বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। পৃথিবীতে ৫৪ কোটি মানুষ এ ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত। এর মধ্যে অর্ধেক মানুষ শনাক্তের বাইরে রয়েছে। ৬০-৭০ ভাগের রোগ নিরাময়যোগ্য। ৫০ ভাগ রোগীর কোনো উপসর্গই থাকে না। এ রোগের কারণে প্রতি আট সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যাচ্ছেন। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যয়ের ১০ শতাংশ ডায়াবেটিসের পেছনে ব্যয় হচ্ছে। টাইপ-১ এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিসও সমান হারে বাড়ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ডায়াবেটিস বাড়ার হার অত্যন্ত বেশি এবং তা প্রায় ২৫ শতাংশ। ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮৪ লাখ ডায়াবেটিস রোগী আছে। ২০৪৫ সাল নাগাদ দেশের দেড় কোটি মানুষের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু ডায়াবেটিস আছে কিনা, তা জানেন মাত্র ১০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ।
এ অবস্থায় সারাদেশে ব্যাপক সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও ওষুধ বিনামূল্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে বিনামূল্যে ইনসুলিন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে সরকার। এর অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে দেশের চারটি উপজেলায় এনসিডিসি বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকেও রয়েছে ডায়াবেটিস শনাক্তের ব্যবস্থা। শনাক্ত হওয়া রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাচ্ছেন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও ওষুধ। একই সঙ্গে এক লাখ ইমামকে সচেতনতায় যুক্ত করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে ২০০ মানুষকে সচেতন করতে পারলেও দুই কোটি মানুষ উপকৃত হবে। এ ছাড়া নিয়মিত উঠান বৈঠকেও মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা, বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধ প্রদানসহ সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে।
শারফুদ্দিন আহমেদ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একক প্রচেষ্টায় কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছেন। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে ওষুধ ও সেবা দেওয়া হচ্ছে, এটি অনেকে জানেন না। এটি জানানো প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সেবা নিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। অনেকেই জানেন না, তার শরীরে ডায়াবেটিস আছে। ফলে ডায়াবেটিস শনাক্ত করাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দ্রুত শনাক্ত এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে গ্রামের মানুষ মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তি পাবে। ধূমপান বন্ধ করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটতে হবে, তবে গ্রামেও এখন মানুষের হাঁটা কমে গেছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শারীরিক পরিশ্রম করতেই হবে।
এ এইচ এম এনায়েত হোসেন
বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস মহামারি আকার ধারণ করছে। এটি একসময় ধনীদের রোগ ছিল; কিন্তু বর্তমানে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। শুরুতে শনাক্ত করা গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নির্মূল করা সহজ হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমরা সচেতনতা বাড়াতে স্কুলগুলোতেও কাজ করেছি। শিক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন দিয়েছি। তবে সম্প্রতি করোনার কারণে এ কার্যক্রম বন্ধ আছে। এনসিডিসি কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পেরেছি। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সেবাগুলো সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন না। চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যাভাস, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, খেলাধুলা, এলাকাভিত্তিক হাঁটা ও ব্যায়ামের চর্চা করলে ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
এম এম ফয়েজ
ডায়াবেটিস সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োগ হচ্ছে না। বাড়ির কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগ নির্ণয় করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বছরের পর বছর সেবা দেওয়া হচ্ছে। এত কিছুর পরও মাত্র ১২ শতাংশ রোগীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে। দেশের সব উপজেলায় রোগ নির্ণয় করে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া গেলে দ্রুত রোগ নির্মূল করা যাবে। এটি অনেক সহজ হবে। এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, একশ বছর আগে একটি ইউনিয়নে যে জনসংখ্যা ছিল, তা এখন তিন গুণ। সবাইকে এ বিষয়ে কাজ করতে হবে। আরও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী দরকার। কমপক্ষে তিন বছরের প্রশিক্ষিত একটি মেডিকেল অফিসার যেন কমিউনিটি ক্লিনিকে থাকেন।
শাহ্ মনির হোসেন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়মতান্ত্রিক লাইফস্টাইল থাকতে হবে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটিকে যুক্ত করতে হবে। কীভাবে এ বিষয়ে কমিউনিটিকে আরও শক্তিশালী করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। কমিউনিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গেলেও সারাদেশে স্বাস্থ্যকর্মীর অনেক পদ খালি পড়ে আছে, জনবল বাড়াতে হবে। জনবল কম থাকায় মানসম্মত সেবা নিয়ে কখনও কখনও প্রশ্ন ওঠে। ডায়াবেটিস রোগীদের এক মাসের চিকিৎসা দিলে হবে না, নিয়মিত ফলোআপে রাখতে হবে। গ্রামের রোগীদের ক্ষেত্রে ফলোআপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকেই নিশ্চিত করতে হবে।
আহমেদুল কবীর
ডায়াবেটিস চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসির কার্যক্রম বেশ প্রশংসনীয়। বিনামূল্যে ডায়াবেটিস শনাক্ত করার সুবিধার আওতায় মানুষকে আনা গেলে প্রাথমিকভাবে এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ডায়াবেটিস সারাজীবনের রোগ। একবার কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে সারাজীবন তাকে এ রোগ বহন করতে হয়। তবে সুষম খাবার গ্রহণ, নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন, ব্যায়াম এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়েও সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন সম্ভব। অতিরিক্ত ওজন, মেদবাহুল্য, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, উচ্চ শর্করা ও কম আঁশযুক্ত খাদ্যাভ্যাস থাকলে মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। ডায়াবেটিস যাতে না হয়, যথাযথ নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত।
ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ
বাংলাদেশে মাত্র আটটি মেডিকেল কলেজে ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগ আছে। প্রতিটি কলেজে এ বিভাগ চালু হলে ডায়াবেটিস চিকিৎসার খুঁটিনাটি শিক্ষার্থীরা শিখতে পারবে। এ ছাড়া প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করতে হবে। ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ মারাত্মক অর্থনৈতিক চাপে থাকে। কিন্তু ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যয় হয় ২০ শতাংশ টাকা। আর বাকি টাকা ব্যয় হচ্ছে ডায়াবেটিসের কারণে হওয়া অন্যান্য রোগে। সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস বিষয়ক সেবা উন্নত করতে হবে।
রুহুল আমিন
দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি কর্নার রয়েছে। কিন্তু ডায়াবেটিস যে হারে বাড়ছে, তাতে কর্নার নয়, হাসপাতালগুলোতে আলাদা ডায়াবেটিস বিভাগ রাখা উচিত। এতে দ্রুত রোগ শনাক্ত হবে। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ৫-৭ বছরে আউটডোরে ডায়াবেটিস রোগী ১০ গুণ বেড়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে যদি ডায়াবেটিস বিভাগ হয়, তাহলে দ্রুত শনাক্ত হবে। সারাদেশে চিকিৎসকদের ডায়াবেটিস বিষয়ক প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।
সায়েফ উদ্দিন
ডায়াবেটিস সমিতি ১৯৫৬ সাল থেকে কাজ করছে। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও ব্যাপক কাজ করছে। খুবই দক্ষতার সঙ্গে তারা কাজ করছে। এ বছর ইনসুলিন আবিস্কারের শততম বছর। কিন্তু ৮০ শতাংশ রোগীর ইনসুলিন কিংবা ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই। এটি নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে মসজিদের ইমামদের প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে তারা সমাজে ডায়াবেটিস বিষয়ক সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখবেন। মসজিদের একটি কক্ষ ডায়াবেটিস কর্নার হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সেখানে ডায়াবেটিস শনাক্তের সুযোগ থাকতে পারে। এতে ডায়াবেটিস শনাক্ত সহজ হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে যেন মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়। ডায়াবেটিস সমিতির পক্ষ থেকে আমরা দেশের সাড়ে ১৮ হাজার চিকিৎসককে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আশা করব, নতুন ডায়াবেটিস রোগী যেন কমে আসে।
বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা কত, তা নিয়ে পরিসংখ্যানগত তারতম্য থাকলেও মোট জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তা স্পষ্ট। আবার আক্রান্তের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ জানে না যে তিনি আক্রান্ত। এই না জানার বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, আক্রান্তের কথা জানা থাকলে ওই ব্যক্তি সতর্ক হতে পারতেন; নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে পারতেন। এতে তিনি সুস্থ জীবনযাপন করার সুযোগ পেতেন। সুতরাং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য বিষয়টি জানা জরুরি। সব মিলিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
ফারুক পাঠান
দুই বছর আগে একটি জরিপ করেছিলাম। তাতে দেখা গেছে, ২৫ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস আছে কিনা, জানেই না। বাস্তবে এ চিত্র কয়েক কোটি গুণ বেশি। আবার শনাক্ত হলেও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে ডায়াবেটিসের ওষুধগুলো সহজলভ্য করতে হবে। অনেক শিশু ডায়াবেটিস নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। সুতরাং মায়েদের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীর আয়ু কমে যাচ্ছে, অকালে প্রাণ যাচ্ছে। অথচ দেশকে আরও অনেক দেওয়ার কথা ছিল তাদের, তা দিতে পারছে না। এটি দেশের অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনছে। ডায়াবেটিস যাতে না হয়, সে বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। পরিমিত খাবার, পরিশ্রম করা, ব্যায়ামের ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। সহজ ভাষায়, জনগণের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। ডায়াবেটিস রোগের উপকরণ সহজলভ্য করতে হবে। মানসম্মত ওষুধ নিশ্চিত করতে হবে। এসব ওষুধের ওপর ট্যাক্স ফ্রি করে দেওয়া যেতে পারে। কোমল পানীয় ও জাঙ্ক ফুডের বিষয়ে আরও সচেতন করতে হবে। এগুলোর ওপর ট্যাক্স বাড়িয়ে দিতে হবে।
সোহেল রেজা চৌধুরী
৫৪টি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আমরা ডায়াবেটিস সেবায় কাজ করছি। প্রথমদিকে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ ছিল। চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ছিল না। পলিসিগত সমস্যা ছিল। এখন এনসিডিসি থেকে বিনামূল্যে এক মাসের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা হেলথ সার্ভিসে এখন লোকজন অনেক খুশি। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধের সরবরাহ বাড়াতে হবে। ফলোআপে এক মাস পর ফোন করলেও রোগী আসে না। মানুষ বলে অনেক দূরে। ফলে কমিউনিট ক্লিনিক থেকে সেবা দেওয়া যেতে পারে।
বিশ্বজিৎ ভৌমিক
ডায়াবেটিস সমিতির পক্ষ থেকে অনেক কাজ করছি। কিন্তু ডায়াবেটিস চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও জ্ঞানের অভাব আছে। দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি করতে হবে। প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভাষা নিয়েও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি ও ডায়াবেটিক সমিতির মাধ্যমে সারাদেশে ৪২০ উপজেলায় এক লাখ মানুষের মধ্যে জরিপ করে দেখা যায়, প্রতি পাঁচজনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ ছাড়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে তিনটি জরিপ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, পাঁচজন নারীর মধ্যে একজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এক বছর ধরে তাদের পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শতকরা ১০ জন নারী টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। যে মায়েরা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন, তাদের শিশুদেরও পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
সৈয়দ মাহফুজুল হক
ডায়াবেটিসের কারণে অকালমৃত্যু হচ্ছে। যখন তারা সমাজকে আরও কিছু দেবেন, তখনই তাদের হারাচ্ছি। ৪০-৪৫ বছরেও অনেক মানুষকে হারাচ্ছি। পুরো সমাজকে এ বিষয়ে সচতেন করতে হবে। সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সরকারের অনেক কিছু করার আছে। নীতি পরিবর্তন করা যেতে পারে। কোমল পানীয়ের ওপর ট্যাক্স বাড়ানো যেতে পারে। এতে আমাদের রাজস্ব বাড়বে, ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমবে। যারা শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের যেন সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নেওয়া যায়। যাতে অর্থের অভাবে কেউ বঞ্চিত না হন। রোগীদের নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে।
তাজুল ইসলাম
ডায়াবেটিসের মানসম্মত ও টেকসই চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য ব্যবহার করে পরিকল্পনা করতে হবে। বছরে দু'বার ডায়াবেটিস শনাক্তমূলক কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে। চিকিৎসাসেবায় দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে। রোগীর সঙ্গে কমিউনিকেশন ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, তা দেখতে হবে। রোগীর লাইফস্টাইল কিংবা খাবার-দাবারসহ অন্যান্য বিষয়ে গভীরভাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা কথা বলছেন কিনা, তা মনিটর করতে হবে। রোগীকে হতাশ না করে সান্ত্বনা দিতে হবে। ডায়াবেটিস শুরুতেই শনাক্ত করা গেলে এতটা বাড়বে না।
রাজশ্রী দে সরকার
সারাবিশ্বে ৫৪ কোটি, বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত। সচেতনতা, শিক্ষা, মানসম্মত চিকিৎসা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের প্রচুর অনুপ্রেরণা দেয়। নভোনরডিস্ক তিন হাজার গরিব শিশুকে বিনামূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ করছে। আগামী দিনে সরকার বিনামূল্যে ইনসুলিন দেবে, এটা বেশ ভালো উদ্যোগ। দেশে মানসম্মত ইনসুলিন উৎপাদন করাও জরুরি।
এইচ এম নাজমুল আহসান
সবার জন্য ডায়াবেটিস সেবা উন্মুক্ত করতে হবে। কয়েক বছরে আমরা কয়েক হাজার নার্সকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সরকার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডায়াবেটিসের সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। বান্দরবানের লামা কিংবা হাওর এলাকার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এনসিডিসি কর্নারের মাধ্যমে সরকার ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও ব্যয়বহুল ওষুধ বিনামূল্যে পৌঁছে দিচ্ছে। ডায়াবেটিসের বিষয়ে সরকার অত্যন্ত সচেতন। প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ডায়াবেটিস সেবা পরিচালিত হচ্ছে। কাউন্সেলিং, মনিটরিং, সেবাসহ সব কার্যক্রম চালু আছে। কিন্তু এটি অনেকেই জানেন না। এটি সবাইকে জানাতে হবে।
মুস্তাফিজ শফি
আজকের আলোচনায় সমস্যার পাশাপাশি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উঠে এসেছে। বিশেষ করে সবাই সচেতনতার ওপর জোর দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সমকাল সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গণমানুষের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ- দুটোই আমাদের করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে সমকাল কাজ করে যাবে।
প্রধান অতিথি
জাহিদ মালেক
স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সভাপতি
অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান
সভাপতি, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন
লাইন ডিরেক্টর, নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ
কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
সঞ্চালক
মুস্তাফিজ শফি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
সমকাল
আলোচক
অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ
উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন
মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর
অধ্যাপক ডা. এম এম ফয়েজ
সাবেক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
অধ্যাপক ডা. শাহ্ মনির হোসেন
সাবেক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর
অধ্যক্ষ, মুগদা মেডিকেল কলেজ
অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ
বিভাগীয় প্রধান, এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন
পরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড রিসার্চ
কাউন্সিল (বিএমআরসি)
সায়েফ উদ্দিন
মহাসচিব, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি
ডা. ফারুক পাঠান
অধ্যাপক, এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগ
বারডেম হাসপাতাল
ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী
অধ্যাপক, ইপিডেমিওলজি বিভাগ
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন
ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক
পরিচালক, সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক
এনপিও, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশ
ডা. তাজুল ইসলাম
পরামর্শক, জাইকা বাংলাদেশ শাখা
রাজশ্রী দে সরকার
মহাব্যবস্থাপক, নভোনরডিস্ক বাংলাদেশ শাখা
ডা. এইচ এম নাজমুল আহসান
সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
অনুলিখন
রাজবংশী রায়
সিনিয়র রিপোর্টার ও
জাহিদুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com