
সমকালীন প্রসঙ্গ
নির্বাচনী ও ধর্মীয় সহিংসতা উভয়ই পরিত্যাজ্য
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২১ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

নির্বাচনের মাধ্যমে যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করে জনপ্রতিনিধি হিসেবে গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নে ভূমিকা পালনের আগ্রহ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু গভীর পরিতাপের সঙ্গে দেশবাসী লক্ষ্য করছে; নির্বাচন যেন আধিপত্য-ক্ষমতা-অর্থ উপার্জনের একটি বিশেষ ব্যবস্থায় রূপান্তরিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নূ্যনতম নৈতিকতা-আদর্শ-শিক্ষা-দেশপ্রেম ও জনগণের প্রতি শূন্য দায়বদ্ধতাসম্পন্ন কথিত প্রার্থীরা কীভাবে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখে, তা মোটেও বোধগম্য নয়। নির্বাচনী প্রহসনে পেশি-অর্থশক্তির অপপ্রয়োগে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে এসব সহিংসতা-হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা একান্তই জরুরি। দলমত নির্বিশেষে এসব কুৎসিত চরিত্রের ব্যক্তিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচন-পরবর্তী সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা আমরা দেখেছি। শুধু নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণের সময় বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৭ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ভোটের আগে-পরে সহিংসতায় মোট ৬২ জন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাচন বিশ্নেষকদের মতে, বিভিন্ন এলাকায় সরকারি দল থেকে অযোগ্য ব্যক্তিদের প্রার্থী করায় প্রতিদ্বন্দ্বী দলের দ্বন্দ্বে এ সহিংসতার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ইউপি নির্বাচনের ফলাফল বিশ্নেষণে দেখা যায়, নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন সরকারদলীয় মনোনীত প্রার্থীরা। দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ২৫ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহীরা চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন। সরকারদলীয় প্রার্থীর বিজয়ের হার ৫৬ শতাংশ এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিতদের হার ৯ শতাংশ।
নির্বাচনে যেমন সহিংসতা ঘটে, তেমনি ধর্মীয় সহিংসতাও এখানে কম নয়। বস্তুত বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতার পটভূমি সুদীর্ঘ প্রাচীন। ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেশীয় এবং বৈদেশিক অপশক্তির পাপাচার মনোবৃত্তিরই পরিচায়ক হিসেবে প্রচণ্ড নিন্দিত। উল্লেখযোগ্য সহিংসতার দৃষ্টান্ত হিসেবে ১৯৪৬ সালে কলকাতার হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় শতাধিক, ১৯৮০ সালে মুরাদাবাদ দাঙ্গায় আনুমানিক ২ হাজার ৫০০ এবং ভাগলপুরে সহস্রাধিক, ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসে সৃষ্ট দাঙ্গায় প্রায় ২ হাজার, ২০০২ সালে গুজরাটে সহিংসতায় ৭৯০ মুসলিম এবং ২৫৪ হিন্দু, ২০১৩ সালে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজাফফরনগর জেলায় হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্বে ৪২ মুসলমান ও ২০ হিন্দু এবং ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গায় ৫৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা বিশেষভাবে বিবেচ্য।
এখনও সহিংস ঘটনার অপকৌশল অব্যাহত রয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপির বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক বাসিন্দা কর্তৃক ফেসবুক আইডিতে 'কোরআন অবমাননাকর' পোস্টের অভিযোগে ওই গ্রামসহ আশপাশের বৌদ্ধ মন্দির ও বিহারগুলোতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৩টি বৌদ্ধ মন্দির এবং ৩০টিরও বেশি বসতবাড়ি। ঘটনার জেরে পরদিন উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি বৌদ্ধপল্লিতে হামলা চালিয়ে ৭টি বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরের এক হিন্দু জেলে দ্বারা ফেসবুকে ইসলামবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ১৯টি মন্দির ও প্রায় ৩০০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবি অনুযায়ী, সম্প্রতি কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগে দেশব্যাপী তিন দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১০ জানুয়ারি গণভবনে সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে মন্ত্রীদের উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন, 'আমি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই যখন জানি যে ইলেকশন ৭ মার্চ হচ্ছে। এটা আমাদের জাতির পক্ষে বড় জিনিস। এর ওপর জাতির সফলতা ব্যর্থতা নির্ভর করে।... আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমার দেশ চলবে। এটা যে শুধু আমার কথা, তা নয়। যে শাসনতন্ত্র আমরা দিয়েছি সে শাসনতন্ত্রে সেটা প্রত্যেক অক্ষরে অক্ষরে গ্রহণ করা হয়েছে।... এটা শাসনতন্ত্রের মূলনীতি।... যে শৃঙ্খলাকে ভিত্তি করে শাসনতন্ত্র দিয়েছি, যার জন্য আমরা স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছি, এত শহীদ হয়েছে, এত রক্ত দিয়েছি, এটা মিথ্যে হয়ে যাবে যদি আমরা আমাদের আদর্শ এবং মূলনীতি থেকে দূরে সরে যাই।... এই নির্বাচন যদি শান্তিপূর্ণ হয়। এই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়, আপনারা করতে পারেন তাহলে দুনিয়ার কাছে আপনাদের ইজ্জত বেড়ে যাবে, যা আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, সেটা আমরা বিশ্বাস করি তারপর আপনাদের এবং দেশের সাড়ে সাত কোটি লোকের ইজ্জত দুনিয়াতে বেড়ে যাবে।'
উল্লেখ্য, ভাষণে বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, 'যতগুলো সেন্টার আছে, সবটাতে সেন্টার গার্ড আপনাদের দিতে হবে এবং দেখতে হবে মানুষ যেন ঠিকমতো ভোট দিবার পারে। অল রেসপন্সিবিলিটি ইউর। কোনো রকম গোলমাল সৃষ্টি কেউ করতে না পারে এবং যাতে ভোটগুলো সুন্দরভাবে কাউন্টিং হয়। ... আপনাদের খুব ভালো করে খেয়াল করে কাজ করতে হবে এবং আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, আপনারা ইম্পারশিয়াল হন। আমি প্রধানমন্ত্রী আছি বলে আর আমার পার্টি আছে বলেই আপনারা অন্ধ হয়ে যাবেন এই যে তা নয়। আইনে যেটা আছে সেটা ঠিকমতো করতে হবে। আপনাদের কোনো ভয়ের কারণ নাই।... একটা জিনিস মনে রাখবেন নির্বাচনে সব সময় দেখা যায়, যে পার্টি হেরে যায় সে পার্টি গোলমাল করে। ... যখন হেরে যায় গোলমাল করে নির্বাচন পণ্ড করা যায় কিনা চেষ্টা করে। নির্বাচনে যে জিতবে সে কিন্তু গোলমাল করে না, সে চেষ্টা করে কী করে নির্বাচনটা হয়। যারা হেরে যায় তারা ফাউল করে, গোলমাল সৃষ্টি করে।'
নির্বাচন সংক্রান্ত বঙ্গবন্ধুর অমূল্য নির্দেশনা ও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আহ্বান যদি দেশবাসীর উপলব্ধির গভীরে যথার্থ প্রোথিত করা যায়; দেশের অগ্রগতির পথকে সুগম-নিস্কণ্টক করার ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় উদ্যোগ আর কিছু হতে পারে না। বর্তমান বিশ্বপরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তিকে অধিকতর মর্যাদাশীল করার উদ্দেশ্যে সব নাগরিকের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর-কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান করতে হবে। দেশে অসাম্প্রদায়িক হামলাও চলতে পারে না। আমাদের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার শিক্ষাও আজ জরুরি।
সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচন-পরবর্তী সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা আমরা দেখেছি। শুধু নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণের সময় বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৭ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ভোটের আগে-পরে সহিংসতায় মোট ৬২ জন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাচন বিশ্নেষকদের মতে, বিভিন্ন এলাকায় সরকারি দল থেকে অযোগ্য ব্যক্তিদের প্রার্থী করায় প্রতিদ্বন্দ্বী দলের দ্বন্দ্বে এ সহিংসতার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ইউপি নির্বাচনের ফলাফল বিশ্নেষণে দেখা যায়, নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন সরকারদলীয় মনোনীত প্রার্থীরা। দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ২৫ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহীরা চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন। সরকারদলীয় প্রার্থীর বিজয়ের হার ৫৬ শতাংশ এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিতদের হার ৯ শতাংশ।
নির্বাচনে যেমন সহিংসতা ঘটে, তেমনি ধর্মীয় সহিংসতাও এখানে কম নয়। বস্তুত বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতার পটভূমি সুদীর্ঘ প্রাচীন। ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেশীয় এবং বৈদেশিক অপশক্তির পাপাচার মনোবৃত্তিরই পরিচায়ক হিসেবে প্রচণ্ড নিন্দিত। উল্লেখযোগ্য সহিংসতার দৃষ্টান্ত হিসেবে ১৯৪৬ সালে কলকাতার হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় শতাধিক, ১৯৮০ সালে মুরাদাবাদ দাঙ্গায় আনুমানিক ২ হাজার ৫০০ এবং ভাগলপুরে সহস্রাধিক, ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসে সৃষ্ট দাঙ্গায় প্রায় ২ হাজার, ২০০২ সালে গুজরাটে সহিংসতায় ৭৯০ মুসলিম এবং ২৫৪ হিন্দু, ২০১৩ সালে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজাফফরনগর জেলায় হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্বে ৪২ মুসলমান ও ২০ হিন্দু এবং ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গায় ৫৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা বিশেষভাবে বিবেচ্য।
এখনও সহিংস ঘটনার অপকৌশল অব্যাহত রয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপির বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক বাসিন্দা কর্তৃক ফেসবুক আইডিতে 'কোরআন অবমাননাকর' পোস্টের অভিযোগে ওই গ্রামসহ আশপাশের বৌদ্ধ মন্দির ও বিহারগুলোতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৩টি বৌদ্ধ মন্দির এবং ৩০টিরও বেশি বসতবাড়ি। ঘটনার জেরে পরদিন উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি বৌদ্ধপল্লিতে হামলা চালিয়ে ৭টি বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরের এক হিন্দু জেলে দ্বারা ফেসবুকে ইসলামবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ১৯টি মন্দির ও প্রায় ৩০০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবি অনুযায়ী, সম্প্রতি কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগে দেশব্যাপী তিন দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১০ জানুয়ারি গণভবনে সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে মন্ত্রীদের উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন, 'আমি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই যখন জানি যে ইলেকশন ৭ মার্চ হচ্ছে। এটা আমাদের জাতির পক্ষে বড় জিনিস। এর ওপর জাতির সফলতা ব্যর্থতা নির্ভর করে।... আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমার দেশ চলবে। এটা যে শুধু আমার কথা, তা নয়। যে শাসনতন্ত্র আমরা দিয়েছি সে শাসনতন্ত্রে সেটা প্রত্যেক অক্ষরে অক্ষরে গ্রহণ করা হয়েছে।... এটা শাসনতন্ত্রের মূলনীতি।... যে শৃঙ্খলাকে ভিত্তি করে শাসনতন্ত্র দিয়েছি, যার জন্য আমরা স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছি, এত শহীদ হয়েছে, এত রক্ত দিয়েছি, এটা মিথ্যে হয়ে যাবে যদি আমরা আমাদের আদর্শ এবং মূলনীতি থেকে দূরে সরে যাই।... এই নির্বাচন যদি শান্তিপূর্ণ হয়। এই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়, আপনারা করতে পারেন তাহলে দুনিয়ার কাছে আপনাদের ইজ্জত বেড়ে যাবে, যা আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, সেটা আমরা বিশ্বাস করি তারপর আপনাদের এবং দেশের সাড়ে সাত কোটি লোকের ইজ্জত দুনিয়াতে বেড়ে যাবে।'
উল্লেখ্য, ভাষণে বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, 'যতগুলো সেন্টার আছে, সবটাতে সেন্টার গার্ড আপনাদের দিতে হবে এবং দেখতে হবে মানুষ যেন ঠিকমতো ভোট দিবার পারে। অল রেসপন্সিবিলিটি ইউর। কোনো রকম গোলমাল সৃষ্টি কেউ করতে না পারে এবং যাতে ভোটগুলো সুন্দরভাবে কাউন্টিং হয়। ... আপনাদের খুব ভালো করে খেয়াল করে কাজ করতে হবে এবং আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, আপনারা ইম্পারশিয়াল হন। আমি প্রধানমন্ত্রী আছি বলে আর আমার পার্টি আছে বলেই আপনারা অন্ধ হয়ে যাবেন এই যে তা নয়। আইনে যেটা আছে সেটা ঠিকমতো করতে হবে। আপনাদের কোনো ভয়ের কারণ নাই।... একটা জিনিস মনে রাখবেন নির্বাচনে সব সময় দেখা যায়, যে পার্টি হেরে যায় সে পার্টি গোলমাল করে। ... যখন হেরে যায় গোলমাল করে নির্বাচন পণ্ড করা যায় কিনা চেষ্টা করে। নির্বাচনে যে জিতবে সে কিন্তু গোলমাল করে না, সে চেষ্টা করে কী করে নির্বাচনটা হয়। যারা হেরে যায় তারা ফাউল করে, গোলমাল সৃষ্টি করে।'
নির্বাচন সংক্রান্ত বঙ্গবন্ধুর অমূল্য নির্দেশনা ও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আহ্বান যদি দেশবাসীর উপলব্ধির গভীরে যথার্থ প্রোথিত করা যায়; দেশের অগ্রগতির পথকে সুগম-নিস্কণ্টক করার ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় উদ্যোগ আর কিছু হতে পারে না। বর্তমান বিশ্বপরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তিকে অধিকতর মর্যাদাশীল করার উদ্দেশ্যে সব নাগরিকের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর-কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান করতে হবে। দেশে অসাম্প্রদায়িক হামলাও চলতে পারে না। আমাদের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার শিক্ষাও আজ জরুরি।
সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com