
জন্মদিন
এই হেমন্তে শুভেচ্ছা সব ঘাসের ডগায় রোদ্দুর মাখানো শিশির
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২১ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলফ্রেড খোকন

প্রশান্ত মৃধা [২০ নভেম্বর, ১৯৭১]
জীবন একরকম নয়; হরেক রকমের। এক রকমের জীবনকে আমরা যারা ভালোবাসতে পারিনি, তারা মূলত তারাই। কখনও মেঘ, কখনও রোদ্দুরে যাই। ক্ষতি কি যাইতে চেয়ে হারাই। হারানোর আছে আদিগন্ত মাঠ- আমরা যারা হারাতে চেয়ে নিয়েছি বিশ্বজোড়া পাঠ। আমাদের এমন কিছু সময়, যা রক্ষিত থাকে মনের আপন বনে। আমি বলি মনে মনে। এই মনে মনে সময়েরা মুখ দিয়ে বেশি কিছু বলে না। মুখের চেয়ে চোখে বলে বেশি। হাত বলতে চায় আরও। মানে হাতের কলম, এই কলমের নিবে তুমি যা দিতে পারো। তাতেই কলম্বাস, মার্ক টোয়েন, ভাস্কো দা গামা। তাতেই কোপার্নিকাস, তাতেই ইবনে বতুতা, তাতেই ডি রোজারিও। আরও আছে দিগন্তের ওপারে বিস্তীর্ণ পৃথিবী, মানে গ্যালিলিও। এইখানে এসে দেখি- আমিও : আমার সময়। মানে আমার সহযাত্রী, কয়েকজন। তারা সকলেই প্রায় কাছাকাছি সময়ে। এক, দুই বছরের সামনে অথবা পেছনের ব্যবধানে। এরা একেকজন একেক রকম জীবন বেছে নিয়েছে। যে জীবনকে আমরা পেশা দিয়ে চিহ্নিত করি। যে জীবনকে আমরা নেশা দিয়ে চিহ্নিত করি। যে জীবনকে আমরা বিষ দিয়ে চিহ্নিত করি। যে জীবনের সঙ্গে আছে সুধা। যে জীবনের সঙ্গে আছে অনেক বন্ধু-পরিজন, আছে প্রশান্ত মৃধা।
কেউ তাকে ডাকে শিক্ষক, কেউ তাকে চেনে লেখক, কেউ তাকে সজ্জন বলে জানে, আবার কেউ ভাবে তাকে দুর্জন। আমরা যারা ওপরে বর্ণিত সব রকমভাবেই অল্পবিস্তর জানি- এই জানার নাম দিই বন্ধুত্ব। প্রশান্ত মৃধার কোনো বন্ধু আছে কিনা জানি না। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি ও আমাদের বন্ধু! এবার কিছু বন্ধু কৃত্য করি।
জগতে কত লোকেরই তো পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয়, পঞ্চাশ ছাপিয়েও যায়। পঞ্চাশকে কেন করব কুর্নিশ। পঞ্চাশ থাকুক না মনে মনে। কিন্তু না চাঁদ কিংবা সূর্যকে বেশিক্ষণ আড়াল রাখা যায় না। যে ছাপিয়ে যায়, তাকে ধরতে চাই প্রকাশ্যে, জনতার কাতারে।
প্রশান্তের পঞ্চাশ! ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা লিখতে এসে প্রথমেই মনে পড়ল, আমার কলেজবেলা। সেই ১৯৮৮ সাল থেকেই ওর নাম পত্রিকার পাতায় ছাপা দেখি। ফলে ওর সঙ্গে ১৯৯৫ সালে দেখা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মনে হতো এই লোকের বয়স ষাটের কম হবে না। এই লেখকের বয়স পঞ্চাশ হয় কী করে! প্রশান্ত মৃধার সঙ্গে সরাসরি দেখা হওয়ার অনেক আগেই ওর নাম মুখস্থ হয়ে গেছে। সেই বহুদিন ধরে নাম জানা লেখকের বয়স এই হেমন্তে হবে পঞ্চাশ! এত দীর্ঘ সময় ধরে একজন লোক লিখেছেন, লিখছেন। এই লিখতে পারা কম বড় নয়।
ওর সঙ্গে যখন ঢাকায় প্রথম আনুষ্ঠানিক দেখা, তখন একটি তরুণী সঙ্গে ছিল। শাহবাগের সদর রাস্তায় প্রশান্তের কাঁধে শান্তিনিকেতনি ব্যাগ। বামপাশজুড়ে টগবগে যে তরুণীর দেখা হয়েছিল, আজও তিনি মৃধার সঙ্গে ওতপ্রোতা। প্রশান্ত মৃধাই প্রথম হাত বাড়িয়েছিল, নাকি আমার হাতের করমর্দনে উভয়ের হাতের তালুতে রক্ত নেচেছিল সম্পর্কের- আজ তা হুবহু মনে নেই। আমাদের চোখের ভাষা অনেক পেছনকে সামনে ডেকে নিয়েছিল, আজও যা অব্যাহত। মনে হয়েছিল আমাদের কতকালের পরিচয়। যেখানে স্বার্থেও বিষ নয়, ছিল উন্মুক্ত, ছিল অভ্যর্থনার উষ্ণ আলিঙ্গনে।
তারপর দেখা হয়েছে অনেক। আমাদের সেই অপ্রয়োজনের দেখাদেখি এতই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে থাকল ক্রমাগত। একটার পর একটা বই বেরোতে থাকল প্রশান্তের। ভালোবাসা ও পুরস্কারে হেমন্তের গোলা ভরে উঠতে থাকল তার। সুনাম ছড়িয়ে পড়ল, দুর্নামও।
চা-খানায়, রাস্তায়, সেমিনারে, পার্কে কিংবা পানশালায় আমাদের দেখাদেখির কাল অতিক্রম করেছি বহুভাবে। প্রশান্তের গদ্যভঙ্গি ইতোমধ্যে পাঠকমন জয় করে নিয়েছে। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, সম্পাদনা আর নতুন নতুন রচনার সম্ভারে নিজেকে বিকশিত করে চলছে সগৌরবে।
২০ নভেম্বর প্রশান্ত মৃধা পঞ্চাশ ছোঁবে। যেভাবেই হোক না কেন, সেটা জীবনের লোভে। হেমন্তে, তার এই জন্মদিনে অপেক্ষমাণ শাদা পৃষ্ঠাগুলো ভরে উঠুক বর্ণমালার মগ্নতায়। পঞ্চাশের অপূর্ণতা পূর্ণতায় ভরে থাকুক প্রশান্তের হেমন্তের বারান্দায়। শুভ জন্মদিন, বন্ধু!
কেউ তাকে ডাকে শিক্ষক, কেউ তাকে চেনে লেখক, কেউ তাকে সজ্জন বলে জানে, আবার কেউ ভাবে তাকে দুর্জন। আমরা যারা ওপরে বর্ণিত সব রকমভাবেই অল্পবিস্তর জানি- এই জানার নাম দিই বন্ধুত্ব। প্রশান্ত মৃধার কোনো বন্ধু আছে কিনা জানি না। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি ও আমাদের বন্ধু! এবার কিছু বন্ধু কৃত্য করি।
জগতে কত লোকেরই তো পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয়, পঞ্চাশ ছাপিয়েও যায়। পঞ্চাশকে কেন করব কুর্নিশ। পঞ্চাশ থাকুক না মনে মনে। কিন্তু না চাঁদ কিংবা সূর্যকে বেশিক্ষণ আড়াল রাখা যায় না। যে ছাপিয়ে যায়, তাকে ধরতে চাই প্রকাশ্যে, জনতার কাতারে।
প্রশান্তের পঞ্চাশ! ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা লিখতে এসে প্রথমেই মনে পড়ল, আমার কলেজবেলা। সেই ১৯৮৮ সাল থেকেই ওর নাম পত্রিকার পাতায় ছাপা দেখি। ফলে ওর সঙ্গে ১৯৯৫ সালে দেখা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মনে হতো এই লোকের বয়স ষাটের কম হবে না। এই লেখকের বয়স পঞ্চাশ হয় কী করে! প্রশান্ত মৃধার সঙ্গে সরাসরি দেখা হওয়ার অনেক আগেই ওর নাম মুখস্থ হয়ে গেছে। সেই বহুদিন ধরে নাম জানা লেখকের বয়স এই হেমন্তে হবে পঞ্চাশ! এত দীর্ঘ সময় ধরে একজন লোক লিখেছেন, লিখছেন। এই লিখতে পারা কম বড় নয়।
ওর সঙ্গে যখন ঢাকায় প্রথম আনুষ্ঠানিক দেখা, তখন একটি তরুণী সঙ্গে ছিল। শাহবাগের সদর রাস্তায় প্রশান্তের কাঁধে শান্তিনিকেতনি ব্যাগ। বামপাশজুড়ে টগবগে যে তরুণীর দেখা হয়েছিল, আজও তিনি মৃধার সঙ্গে ওতপ্রোতা। প্রশান্ত মৃধাই প্রথম হাত বাড়িয়েছিল, নাকি আমার হাতের করমর্দনে উভয়ের হাতের তালুতে রক্ত নেচেছিল সম্পর্কের- আজ তা হুবহু মনে নেই। আমাদের চোখের ভাষা অনেক পেছনকে সামনে ডেকে নিয়েছিল, আজও যা অব্যাহত। মনে হয়েছিল আমাদের কতকালের পরিচয়। যেখানে স্বার্থেও বিষ নয়, ছিল উন্মুক্ত, ছিল অভ্যর্থনার উষ্ণ আলিঙ্গনে।
তারপর দেখা হয়েছে অনেক। আমাদের সেই অপ্রয়োজনের দেখাদেখি এতই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে থাকল ক্রমাগত। একটার পর একটা বই বেরোতে থাকল প্রশান্তের। ভালোবাসা ও পুরস্কারে হেমন্তের গোলা ভরে উঠতে থাকল তার। সুনাম ছড়িয়ে পড়ল, দুর্নামও।
চা-খানায়, রাস্তায়, সেমিনারে, পার্কে কিংবা পানশালায় আমাদের দেখাদেখির কাল অতিক্রম করেছি বহুভাবে। প্রশান্তের গদ্যভঙ্গি ইতোমধ্যে পাঠকমন জয় করে নিয়েছে। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, সম্পাদনা আর নতুন নতুন রচনার সম্ভারে নিজেকে বিকশিত করে চলছে সগৌরবে।
২০ নভেম্বর প্রশান্ত মৃধা পঞ্চাশ ছোঁবে। যেভাবেই হোক না কেন, সেটা জীবনের লোভে। হেমন্তে, তার এই জন্মদিনে অপেক্ষমাণ শাদা পৃষ্ঠাগুলো ভরে উঠুক বর্ণমালার মগ্নতায়। পঞ্চাশের অপূর্ণতা পূর্ণতায় ভরে থাকুক প্রশান্তের হেমন্তের বারান্দায়। শুভ জন্মদিন, বন্ধু!
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com