
ইবিতে শাপলা ফোরামের নির্বাচন, পুনরায় ভোটগণনার দাবি
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২১ । ১৫:১৪ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২১ । ১৫:১৪
ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের-২০২১ এর কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে রাত ১০টার দিকে ফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে ভোটগণনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুনরায় গণনার দাবি জানিয়েছে ফোরামের একাংশের শিক্ষক নেতারা।
প্রতিবারের মতো এবারও দুটি প্যানেলের অধীন ৩০ জন শিক্ষক ফোরামের নির্বাচনে অংশ নেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বর্তমান উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষপন্থীদের নয়জন এবং সাবেক উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পন্থীদের ছয়জন শিক্ষক জয়ী হন। নির্বাচন কমিশন জানায়, ২৩১ জন ভোটারের মধ্যে ২০৯ জন ভোটে অংশ নেয়ন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিজন ভোটারকে অবশ্যই ১৫টি ভোট প্রদান করতে হবে। এর মধ্যে ভোট প্রদানে ভুল করায় ১০টি ব্যালট ও ৬২টি ব্যক্তিগত ভোট বাতিল করা হয়েছে। ফল ঘোষণার পর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক প্রশাসনপন্থী শিক্ষকরা। ফোরামের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক রেজওয়ানুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবর রহমানসহ অন্যান্যরা পুনরায় ভোট গণণার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এসময় তারা বলেন, ভোটগণনায় প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা সময় নেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত ভোট বাতিল হয় কিভাবে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। ভোটগণনা ফেসবুক লাইভে দেখানোর কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। ভোটের সার্বিক বিষয় নিয়ে আমাদের সংশয় তৈরি হয়েছে। শুরু থেকে আমরা অনেক কিছু অসঙ্গতি লক্ষ করেছি। তাই তিনজন নির্বাচন কমিশন ও দুইজন পর্যবেক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে ব্যালটগুলো বাক্সবন্দি করে রাখার দাবি জানাই। সেইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষ দিয়ে ভোটগণনার দাবি জানাচ্ছি।
দাবি জানানোর পর ফোরামের বর্তমান কমিটির নেতারা সাংবাদিকদের প্রেসব্রিফিং করেন। এতে সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, নিয়ম হচ্ছে ১৫টি ভোট যদি কেউ না দেন তাহলে সেই ব্যালটটি বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু ব্যক্তিগত ভোট বাতিল হচ্ছে অথচ ১৪টি ভোটকে কাউন্ট করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত ভোট বাতিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আমার ২৩ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি কখনও শুনিনি। যতদিন এখানে নির্বাচন হয়েছে আমরা দুইজন করে পর্যবেক্ষক রেখেছিলাম। কিন্তু এবার আমাদের একজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ৬২টি ভোট বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যখ্যা দেয়নি। বরং আমরা এটা জিজ্ঞাসা করায় তারা কষ্ট পেয়েছেন। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পর উনারা আমাদের সঙ্গে ফাইনাল কথা না বলে চলে গিয়েছেন।
অপরদিকে এই ঘটনার পর বর্তমান প্রশাসনপন্থী শিক্ষকরা পাল্টা প্রেসব্রিফিং করেন। এতে নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বর্তমান প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে নির্বচন কমিশন এই গণনার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তারা ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটা ফলাফল ঘোষণা করেছেন। যে ফলাফল ঘোষণার সময় ওখানে কারো দ্বিমত ছিল না। কিন্তু আমাদের কতিপয় বন্ধুরা হয়ত মনক্ষুন্ন হয়েছেন। এটি একটি গণতান্ত্রিক ফোরাম। একবছর একজন জিতবে আর একবছর অন্যজন জিতবে। এই সহজ বিষয়টিকে যারা মেনে নিতে পারে না, আমি মনে করি তাদের শাপলা ফোরাম করার কোনো যোগ্যতা নেই।
এদিকে ফল ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক অধ্যাপক সারওয়ার মোর্শেদ বলেন, অনেক শিক্ষক ভোটের স্থানে টিক না দিয়ে সিরিয়াল নাম্বারে টিক দিয়েছেন। আমার মনে হয় এসব বাইরে বললে আপনারা ক্ষুব্ধ হবেন। এতো ট্রেনিং দিয়েও তারা ভোট দিতে পারেন না। সঠিক ফলাফল দেওয়ার জন্য যা যা করণীয় আমরা তাই করেছি। সার্বক্ষণিক কাজ করেছি।
এদিকে রোববার বেলা ১২টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আহসান-উল-আম্বিয়ার কাছে ভোট প্রদান ও গণনার নিয়মাবলী অনুসরণ করে ভোট পুনঃগণনার দাবিতে লিখিত আবেদন দেন একাংশের শিক্ষকরা। এতে তারা উল্লেখ করেন, নির্বাচনে ৬২টি ব্যক্তিগত ভোট বাতিল করা হয়েছে, যা রিটার্নিং অফিসের কার্যালয় থেকে প্রচারিত ভোট প্রদান ও গণনার নিয়মাবলী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ পরিপন্থী বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। তাই ভোট পুনঃগণনা করে ফলাফল প্রকাশের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
ভোট প্রদানের নিয়মাবলীতে ৫ নম্বর- এ বলা হয়েছে, ব্যালট পেপারের নির্ধারিত টিক চিহ্নের বাইরে বা অন্য কোথাও টিক চিহ্ন প্রদান করলে উক্ত ব্যালটটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
অধ্যাপক আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, তারা আমার কাছে একটি খাম দিয়েছে। আমি ওটা ওরকমই রেখে দিয়েছি। ব্যস্ততার কারণে মৌখিকভাবে শোনাও হয়নি। আমি নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ককে এটি দেব।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com