
গণসাক্ষরতা অভিযান, সমকাল ও নেট্জ-বাংলাদেশের ওয়েবিনার
সবার সমান শিক্ষার জন্য চাই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২১ । ০০:০০ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২১ । ০১:৪০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সমকাল প্রতিবেদক

'প্রাথমিক শিক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। কিন্তু দেশে সুবিধাবঞ্চিত অনেক শিশুই শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না। করোনাকালে এ বৈষম্য আরও বেড়েছে। অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পরীক্ষানির্ভর সনদ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে গুণগত শিক্ষাকে বিস্তৃত করতে হবে। সবার সমান শিক্ষার জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।'
গতকাল বুধবার 'সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য গুণগত শিক্ষা :কর্ম-অভিজ্ঞতা ও করণীয়' শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। গণসাক্ষরতা অভিযান ও সমকাল আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহায়তা করে নেট্জ-বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে নেট্জ-বাংলাদেশ পরিচালিত সারাদেশের ৩৪টি আনন্দলোক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এ বিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য আনন্দের মাধ্যমে শিশুদের গুণগত শিক্ষাদান। সারাদেশে সৃজনশীল শিক্ষাদান পদ্ধতি নিয়ে যারা কাজ করেছেন, তাদের ভাবনার প্রতিফলন রয়েছে এ স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমে। বক্তারা এই স্কুলের শিক্ষাপদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনা ও সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান।
স্বাগত বক্তব্যে আবু সাঈদ খান বলেন, বাংলাদেশে এখনও শতকরা ২০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। তারা পুরোপুরি শিক্ষার আলো পায় না। এনজিও উদ্যোগে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে কিছু কাজ হচ্ছে বটে, কিন্তু এখনও অনেক শিশু শিক্ষা প্রক্রিয়ার বাইরে। সারাদেশে শিক্ষার হার বাড়লেও মানসম্মত হয়নি। করোনাকালে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আরও পিছিয়ে গেছে। শিশুর পেটে আহার না থাকলে তাকে কোনো শিক্ষাই দেওয়া যায় না। এ জন্য শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ক্ষুধা দূর করা। টিফিন নয়, একবেলা পেটভরে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া দরকার। শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতাও দরকার।
অনুষ্ঠানে আনন্দলোক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম নিয়ে 'আলোকিত বিদ্যাপীঠ' নামে একটি ভিডিও এবং প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন নেট্জ-বাংলাদেশের পরামর্শক গোলাম নবী। ২০০৮ সাল থেকে আনন্দলোক বিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সারাদেশে ৩৪টি আনন্দলোক বিদ্যালয়ে ছয় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এ বিদ্যালয় বদলে দিচ্ছে শিশু ও কমিউনিটিকে। এ বিদ্যালয়ের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য এলাকার অন্য স্টু্কল থেকে এটিকে আলাদা করেছে। বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্টু্কলের পড়া স্টু্কলেই তৈরি করা; শিক্ষার্থী-শিক্ষক সহজ সম্পর্ক; মা ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ; স্টু্কলের উন্নয়নে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর অবাধ ও স্বাধীন অংশগ্রহণ করার সুযোগ; এবং ব্রতচারী পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেরাই নিজেদের গড়ে তোলে, সে ব্যবস্থা করা।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সার্বিকভাবে আমাদের কিছু গোষ্ঠীর কাছে রাজনীতি নতি স্বীকার করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও এটির ব্যতিক্রম ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমতাভিত্তিক সমাজ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। সবার আগে শিক্ষার মধ্য দিয়ে সেটি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কারণ, শিক্ষাই মানুষের মনন তৈরি করে। সবার জন্য সমান শিক্ষা দরকার। সব মিলিয়ে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার এবং সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সেরকম রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় থাকা দরকার। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির কাছে আমরা এ প্রত্যাশা করতেই পারি।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। গণসাক্ষরতা অভিযানের উদ্দেশ্য সুশিক্ষা, সুশাসন, সুস্বাস্থ্য এবং এসবের মধ্য দিয়ে সুনাগরিক গড়ে তোলা। আনন্দলোক বিদ্যালয় একটি আলাদা মানদণ্ড তৈরি করেছে। কিন্তু এসব স্কুলের স্থায়িত্বশীলতা ও মূলধারার সঙ্গে সংযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে। সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের মাধ্যমে জাতীয় পরিকল্পনায়ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য গুণগত শিক্ষার বিষয় আনতে হবে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সাম্যের পক্ষে না হলে আমরা বারবার হোঁচট খাব।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগের সমন্বয় প্রয়োজন। শিক্ষার মান গুণগতভাবে বাড়াতে সরকারকে ভুল ধরিয়ে দিতে হবে। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে গুণগত শিক্ষায় অনেক এগিয়ে যেতে পারব।
শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ঘাটতির বিষয় তুলে ধরে বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্কের (বেন) প্রফেসর ইমেরিটাস ড. মনজুর আহমদ বলেন, এবার করোনার কারণে দুই বছর আমাদের শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। মূলধারার শিক্ষার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিরাট আঘাত থেকে উদ্ধারের বিষয়ে চিন্তা করা দরকার। এখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার। নাগরিক সমাজকেও এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, তাদের পরিবারকেও অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল হালিম বলেন, প্রকৃতপক্ষে শতভাগ সুবিধাবঞ্চিত শিশু শিক্ষার আওতায় আসেনি। করোনাকালে এসব শিশু আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রমজীবী শিশুদের জন্য আলাদা সময়সূচি নির্ধারণ করতে হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক তপন কুমার দাশ বলেন, গণসাক্ষরতা অভিযান সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের গুণগত শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। আমাদের কিছু সহযোগী সংস্থাও গুণগত শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। আমরা সেসব ব্যতিক্রম মডেল সবার কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
নেটজ-বাংলাদেশের পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি গুনগত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। এটি দেশের জন্য একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি। যে শিক্ষা শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে।
আনন্দলোক ট্রাস্টের সদস্য সোহরাব উদ্দীন মণ্ডল সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ২০২২ সাল থেকে আনন্দলোক ট্রাস্ট স্কুলগুলো পরিচালনা করবে বলে আশা করছি। আশা করি এর মধ্যে স্কুলগুলোর রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যাবে। আমরা আরও দক্ষতার সঙ্গে স্কুলগুলো পরিচালনা করতে চাই।
ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন রংপুরের কাউনিয়ার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ সরকার, গাইবান্ধা সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মহিদুল ইসলাম, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মো. আকরাম হোসেন, গাইবান্ধা সদরের কবি সুফিয়া কামাল আনন্দলোক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সানজিদা পারভীন, নীলফামারীর ডোমারের কাজী নজরুল ইসলাম আনন্দলোক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিতু আক্তার ও রংপুরের গঙ্গাচড়ার মোনাজাতউদ্দীন আনন্দলোক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. আল আমীন মিয়া।
গতকাল বুধবার 'সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য গুণগত শিক্ষা :কর্ম-অভিজ্ঞতা ও করণীয়' শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। গণসাক্ষরতা অভিযান ও সমকাল আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহায়তা করে নেট্জ-বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে নেট্জ-বাংলাদেশ পরিচালিত সারাদেশের ৩৪টি আনন্দলোক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এ বিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য আনন্দের মাধ্যমে শিশুদের গুণগত শিক্ষাদান। সারাদেশে সৃজনশীল শিক্ষাদান পদ্ধতি নিয়ে যারা কাজ করেছেন, তাদের ভাবনার প্রতিফলন রয়েছে এ স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমে। বক্তারা এই স্কুলের শিক্ষাপদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনা ও সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান।
স্বাগত বক্তব্যে আবু সাঈদ খান বলেন, বাংলাদেশে এখনও শতকরা ২০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। তারা পুরোপুরি শিক্ষার আলো পায় না। এনজিও উদ্যোগে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে কিছু কাজ হচ্ছে বটে, কিন্তু এখনও অনেক শিশু শিক্ষা প্রক্রিয়ার বাইরে। সারাদেশে শিক্ষার হার বাড়লেও মানসম্মত হয়নি। করোনাকালে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আরও পিছিয়ে গেছে। শিশুর পেটে আহার না থাকলে তাকে কোনো শিক্ষাই দেওয়া যায় না। এ জন্য শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ক্ষুধা দূর করা। টিফিন নয়, একবেলা পেটভরে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া দরকার। শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতাও দরকার।
অনুষ্ঠানে আনন্দলোক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম নিয়ে 'আলোকিত বিদ্যাপীঠ' নামে একটি ভিডিও এবং প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন নেট্জ-বাংলাদেশের পরামর্শক গোলাম নবী। ২০০৮ সাল থেকে আনন্দলোক বিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সারাদেশে ৩৪টি আনন্দলোক বিদ্যালয়ে ছয় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এ বিদ্যালয় বদলে দিচ্ছে শিশু ও কমিউনিটিকে। এ বিদ্যালয়ের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য এলাকার অন্য স্টু্কল থেকে এটিকে আলাদা করেছে। বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্টু্কলের পড়া স্টু্কলেই তৈরি করা; শিক্ষার্থী-শিক্ষক সহজ সম্পর্ক; মা ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ; স্টু্কলের উন্নয়নে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর অবাধ ও স্বাধীন অংশগ্রহণ করার সুযোগ; এবং ব্রতচারী পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেরাই নিজেদের গড়ে তোলে, সে ব্যবস্থা করা।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সার্বিকভাবে আমাদের কিছু গোষ্ঠীর কাছে রাজনীতি নতি স্বীকার করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও এটির ব্যতিক্রম ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমতাভিত্তিক সমাজ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। সবার আগে শিক্ষার মধ্য দিয়ে সেটি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কারণ, শিক্ষাই মানুষের মনন তৈরি করে। সবার জন্য সমান শিক্ষা দরকার। সব মিলিয়ে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার এবং সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সেরকম রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় থাকা দরকার। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির কাছে আমরা এ প্রত্যাশা করতেই পারি।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। গণসাক্ষরতা অভিযানের উদ্দেশ্য সুশিক্ষা, সুশাসন, সুস্বাস্থ্য এবং এসবের মধ্য দিয়ে সুনাগরিক গড়ে তোলা। আনন্দলোক বিদ্যালয় একটি আলাদা মানদণ্ড তৈরি করেছে। কিন্তু এসব স্কুলের স্থায়িত্বশীলতা ও মূলধারার সঙ্গে সংযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে। সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের মাধ্যমে জাতীয় পরিকল্পনায়ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য গুণগত শিক্ষার বিষয় আনতে হবে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সাম্যের পক্ষে না হলে আমরা বারবার হোঁচট খাব।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগের সমন্বয় প্রয়োজন। শিক্ষার মান গুণগতভাবে বাড়াতে সরকারকে ভুল ধরিয়ে দিতে হবে। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে গুণগত শিক্ষায় অনেক এগিয়ে যেতে পারব।
শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ঘাটতির বিষয় তুলে ধরে বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্কের (বেন) প্রফেসর ইমেরিটাস ড. মনজুর আহমদ বলেন, এবার করোনার কারণে দুই বছর আমাদের শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। মূলধারার শিক্ষার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিরাট আঘাত থেকে উদ্ধারের বিষয়ে চিন্তা করা দরকার। এখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার। নাগরিক সমাজকেও এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, তাদের পরিবারকেও অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল হালিম বলেন, প্রকৃতপক্ষে শতভাগ সুবিধাবঞ্চিত শিশু শিক্ষার আওতায় আসেনি। করোনাকালে এসব শিশু আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রমজীবী শিশুদের জন্য আলাদা সময়সূচি নির্ধারণ করতে হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক তপন কুমার দাশ বলেন, গণসাক্ষরতা অভিযান সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের গুণগত শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। আমাদের কিছু সহযোগী সংস্থাও গুণগত শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। আমরা সেসব ব্যতিক্রম মডেল সবার কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
নেটজ-বাংলাদেশের পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি গুনগত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। এটি দেশের জন্য একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি। যে শিক্ষা শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে।
আনন্দলোক ট্রাস্টের সদস্য সোহরাব উদ্দীন মণ্ডল সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ২০২২ সাল থেকে আনন্দলোক ট্রাস্ট স্কুলগুলো পরিচালনা করবে বলে আশা করছি। আশা করি এর মধ্যে স্কুলগুলোর রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যাবে। আমরা আরও দক্ষতার সঙ্গে স্কুলগুলো পরিচালনা করতে চাই।
ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন রংপুরের কাউনিয়ার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ সরকার, গাইবান্ধা সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মহিদুল ইসলাম, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মো. আকরাম হোসেন, গাইবান্ধা সদরের কবি সুফিয়া কামাল আনন্দলোক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সানজিদা পারভীন, নীলফামারীর ডোমারের কাজী নজরুল ইসলাম আনন্দলোক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিতু আক্তার ও রংপুরের গঙ্গাচড়ার মোনাজাতউদ্দীন আনন্দলোক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. আল আমীন মিয়া।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com