মতবিনিময় সভায় বক্তারা

শিশুশ্রম বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২২ । ২০:০৮ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২২ । ২০:০৮

সমকাল প্রতিবেদক

সংগৃহীত ফাইল ছবি

দেশে বর্তমানে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪৭ লাখ। একসময় শিশুশ্রমের যে করুণ অবস্থা ছিল, এখন তা অনেক কমেছে। তবে এখনও যে সেক্টরগুলোতে শিশুশ্রম বিদ্যমান, সেগুলো সুনির্দিষ্ট করে যদি সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তবে এটি বন্ধ করা সম্ভব। নয় তো আমাদের জন্য শিশুশ্রম ‘অভিশাপ’ হিসেবেই থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা।

শনিবার সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তারা এ কথা বলেন। ‘শিশুশ্রম নিরসনে ট্রেড ইউনিয়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে যৌথভাবে বাংলাদেশ কাউন্সিল ও লেবার রাইটস সাংবাদিক ফোরাম (আইটিইউসি)।

আইটিইউসি চেয়ারম্যান ও শ্রমিক নেতা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন লেবার রাইটস সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আবদুল হান্নান, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদলসহ সংশ্নিষ্ট ছয়টি ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে সাকিল আখতার চৌধুরী বলেন, সরকারি হিসাব মতে দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ১৩ লাখ। এরমধ্যে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুর সংখ্যা পাঁচ কোটি ২৩ লাখ (বিবিএস ২০১৬-১৭)। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাই শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য ও অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুশ্রম নিরসনে সব শিশুর জন্য শিক্ষার অবারিত সুযোগ তৈরি করা; দারিদ্রতা দূরীকরণে সার্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া; শিশুশ্রম নিরসনে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানো; আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিক করা; শিশু পাচারে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেওয়া এবং সরকার, মালিক পক্ষ, ট্রেড ইউনিয়ন, গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্নিষ্ট বেসরকারি সামাজিক সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওমর ফারুক বলেন, রাজধানীর যেসব এলাকায় আগে অনেক শিশু শ্রমিক কাজ করত, সেখানে এখন আগের চেয়ে অনেক কমেছে। তবে এখনও যেগুলো আছে, সেগুলো নিরসনে কী করা যায়, তা সুস্পষ্ট করে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আর সরকারকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে, কেননা এখানে সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমরা পরিবহনখাতে কোনো শিশু শ্রমিক দেখতে চাই না। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসেও পরিবহনখাতে বহু শিশু শ্রমিক দেখা যায়। বিশেষ করে লেগুনাগুলোতে। পরিবহনখাত শিশুশ্রমমুক্ত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও কাজ করতে হবে। কোনো পরিবহনে হেলপার ও ড্রাইভার হিসেবে যেন কোনো শিশু না থাকে, সে ব্যাপারে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা যে টাকা পরিশ্রম করে উপার্জন করে, সেই পরিমাণ অর্থ তাদের দিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, কোন শিশুর উদ্ভাবন চিন্তা কেমন আমরা বলতে পারি না। তাদের মেধা বিকাশে যদি আমরা সাহায্য করি, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে এবং শিশুশ্রম দূর হবে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com