শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বৈঠক

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২২ । ১৬:০৭ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২২ । ১৬:০৭

শাবি প্রতিনিধি

শাবি সঙ্কট নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল। শুক্রবার বিকেল ৩টায় সিলেট সার্কিট হাউজে এ বৈঠক শুরু হয়।  বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ফেরদৌস আহমেদ উপস্থিতি আছেন।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর, শাহরিয়ার আবেদীন, আমেনা বেগম, মীর রানা ও জাহেদুল ইসলাম অপূর্ব।

এর আগে শুক্রবার সকালে সিলেট যান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে বিমানে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন তিনি। তার সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ রয়েছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধে শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী সিলেটে যান। 

শাবির চলমান সঙ্কট মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন এই বৈঠকে। চলমান সংকট সমাধানে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে রাত ৮টা ২০ মিনিটে একটি ফ্লাইটে করে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। 

শিক্ষামন্ত্রীর এ সফরে- ক্যাম্পাসে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিসহ বেশ কিছু দাবিতে চলমান যে আন্দোলন তার সমাধান আসতে পারে বলে আশা করছেন শিক্ষার্থীরা। মন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষার্থী বলছেন,আমরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানাচ্ছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগ, মামলা প্রত্যাহার এবং বন্ধ অ্যাকাউন্ট খোলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও রক্তিম হস্তছাপ দেন। গত ১৬ জানুয়ারি যে স্থানে পুলিশের হামলার শিকার হন, ঠিক সেখানেই তারা হাতে লাল রং মেখে দেয়ালে দেয়ালে তার ছাপ দেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের সমস্যা নিয়ে ছাত্রীরা প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার সঙ্গে কথা বলে এবং সে সময় প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করে এমন অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা তিনদফা দাবিতে আন্দোলন করে। এরপরে গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্য অবরুদ্ধ হলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে হামলার পর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে।

সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা প্রায় ১৬৩ ঘণ্টার বেশি সময় আমরণ অনশন করেন। পরে তারা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যান। গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের দাবি দাওয়া এবং সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।  কিন্তু সে সময় অনশনরত এক শিক্ষার্থী মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে ছেড়ে বাকি শিক্ষার্থীরা ঢাকা যাবার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন এবং বিনয়ের সঙ্গে মন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে আসার জন্য অনুরোধ করেন।

এরপর গত ২৩ জানুয়ারি রাতে অনলাইনে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হলেও কোনো সমাধান না আসায় শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন এবং অনশন চালিয়ে যান। পরবর্তীতে ১৬৩ ঘণ্টার বেশি সময় অনশন শেষে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক এসে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। সেসময় শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়া হবে, সরকার মহল থেকে এমনটি আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বলে জানান শিক্ষার্থীরা।


© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com