
এক গোলাপের দাম ১৬০ টাকা!
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২২ । ২২:৫৫ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২২ । ২৩:১৮
সমকাল প্রতিবেদক

ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে শুধু ঢাকায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। সারা দেশে এই বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা হতে পারে বলে জানান ফুল ব্যবসায়ীরা।
পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে গতকাল রাজধানীর শাহবাগ, শেরে বাংলা নগরসহ পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে ছিল ফুলের রমরমা ব্যবসা। প্রত্যেকটা দোকানে ছিল ফুলপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়। কেউ নিজের জন্য কিনেছেন। আবার কেউ নিয়েছেন পছন্দের মানুষকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। বেশিরভাগই ছিল গোলাপ ফুলের ক্রেতা।
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তন্বী কয়েকটি গোলাপ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন শাহবাগ মোড়ে।
তিনি সমকালকে বলেন, তিনটি চায়না গোলাপ ফুল কিনেছেন ৪৮০ টাকা দিয়ে। এই হিসেবে একটি গোলাপের দাম পড়েছে ১৬০ টাকা। তবে বিশেষ দিনে টাকার হিসাব না কষে পছন্দের মানুষকে সারপ্রাইজ দেওয়াই মূল লক্ষ্য বলে মনে করেন তিনি।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে দেখা গেছে, মান ভেদে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা গোলাপের পিস বিক্রি হয়েছে। শাহবাগ একেকটি চায়না গোলাপ বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে দেশি গোলাপের পিস ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সারা বছর ফুল বিক্রি হলেও রোজ ডে, পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, পয়লা বৈশাখ- এসব বিশেষ দিনকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশি ফুল বেচাকেনা হয়। এসব দিবসের বাইরে গায়ে হলুদ, বিয়ে ও হালখাতাসহ নানা উৎসবেও বেশি ফুল বিক্রি হয়।
এ বছর ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী উভয়ে স্মরণকালে ফুলের সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন বলে জানান, বাংলাদেশ ফ্লাওয়ারস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইমামুল হোসেন। সমকালকে তিনি বলেন, গতবারের মত এবারও পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস- একই দিনে পড়েছে।
তারপরও সারাদেশে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। তবে একুশে ফেব্রুয়ারি সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে ফেব্রুয়ারি শেষে বিক্রির পরিমাণ দুইশ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
গত বছর পাইকারি পর্যায়ে ফুলের শ'এক-দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হয়েছে আড়াই হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত। চায়না গোলাপ বিক্রি হয়েছে সাত থেকে আট হাজার টাকায়।
করোনায় দুই বছর লোকসান হওয়ায় চাষীরা উৎপাদন কমিয়েছে। বৃষ্টির কারণে ফলন ব্যাহত হয়েছে। ফলে এবার ফুলের কিছু সংকট দেখা গেছে।
এ কারণে ফুলের দাম বেশি। বাংলাদেশে ফ্লাওয়ার সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, অন্যান্য বছর ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে শুধু যশোর জেলা থেকে ১২ থেকে ১৩টি ফুলভর্তি ট্রাক যেত ঢাকায়। এ বছর পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রাক গেছে। এ কারণে ফুলের দাম বেশি।
সবচেয়ে বেশি দাম ছিল চায়না গোলাপের। খুচরা পর্যায়ে এককেটি গোলা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা দরে পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে বলে জানান, ঢাকা ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি এবং বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি শ্রী বাবুল প্রসাদ।
তিনি সমকালকে বলেন, এবার উৎপাদন কম হয়েছে। তাই দাম বেড়েছে। তবে করোনা শুরুর আগের ফেব্রুয়ারিতে এসব বিশেষ দিনে ঢাকায় প্রায় ৪০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হত। এ বছর বিক্রি হতে পারে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা।
বাবুল প্রসাদ বলেন, গত বার পাঁচ বছর আগে দেশে ফুলের অভ্যন্তরীণ বাজার ছিল প্রায় ১২০০ কোটি টাকার। এখন তা বেড়ে ১৫০০ কোটি টাকার মত হয়েছে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com