ভারতে সংখ্যালঘু তকমা চাইছে হিন্দুরা, দাবি বিজেপি নেতার

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২২ । ১৭:০১ | আপডেট: ২৯ মার্চ ২২ । ১৭:০১

কলকাতা সংবাদদাতা

ভারতের ৬টি রাজ্য এবং ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণার দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। 

ভারতের যেসব রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হিন্দুরা বর্তমানের সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে সেসব জায়গায় হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণার মাধ্যমে সবধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এই বিজেপি নেতা। 

সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার আগে বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় ভারতের কেন্দ্রিয় সরকারের কাছে একই আর্জি নিয়ে দ্বারস্থ হয়েছিলেন। 

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কিছুদিন আগেই বিবৃতির মাধ্যমে সাফ জানিয়ে দেয় সমগ্র ভারতের জনসংখ্যার নিরিখে ভারতীয় হিন্দুদের সংখ্যালঘু মনে করে না কেন্দ্রীয় সরকার। সঙ্গে এও জানানো হয় যদি রাজ্যভিত্তিক সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলো হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণা দেয় এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিজনিত কোনোরকম পদক্ষেপ নেয় সেক্ষেত্রে বাধা হবে না কেন্দ্র। 

সংবিধান মোতাবেক বর্তমান পরিস্থিতিতে হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণার মত কাজ করতে পারে না কেন্দ্র। 

কেন্দ্রের এমন দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। 

সর্বশেষ ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ৬টি রাজ্য পাঞ্জাব, মনিপুর ,অরুণাচল প্রদেশ , মেঘালয় ,মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং তিনটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল  লাদাখ , জম্মু কাশ্মীর, লাক্ষাদ্বীপে এই মুহূর্তে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। পাঞ্জাবে সংখ্যাগুরু জনসংখ্যা এই মুহূর্তে শিখ ধর্মালম্বীরা। হিন্দুরা পাঞ্জাবে রয়েছেন মাত্র ৩৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। 

মেঘালয়,নাগাল্যান্ড, মনিপুর এবং অরুণাচল প্রদেশে এই মুহূর্তে সংখ্যাগুরু জনসংখ্যা খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা। হিন্দু জনসংখ্যা এখানে রয়েছে যথাক্রমে মাত্র ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ,  ৪১ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও ২৯ দশমিক ০৪ শতাংশ।   

অরুণাচল প্রদেশে ১৯৭১ সালের জনগণনা অনুযায়ী খ্রিস্টান ধর্মের লোক সংখ্যা ছিল মাত্র ১ শতাংশ। মাত্র ৫১ বছরের ব্যবধানে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা এখানে বেড়েছে ৭০ শতাংশের বেশি। 

জম্মু কাশ্মীর এবং লাদাখ বিভাজনের পর জম্মু-কাশ্মীরে ইসলাম ধর্মালম্বীরা এবং লাদাখে বুদ্ধিস্ট ধর্মালম্বীরা সংখ্যাগুরু জনসংখ্যা। যদিও ২০২১ সালে নির্ধারিত জনগণনা না হওয়ায় হিন্দুদের প্রকৃত অবস্থান এই সব এলাকায় জানা যায়নি। লাক্ষাদ্বীপেও সংখ্যাগুরু ইসলাম জনগোষ্ঠী। যেখানে হিন্দু জনসংখ্যা মাত্র ২ দশমিক ৭ শতাংশ। 

ভারতীয় সংবিধানের দুই নম্বর ধারার ‘গ’ উপধারায় ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটিস অ্যাক্ট- ১৯৯২ অনুযায়ী অনুসারে ভারত সরকার ৫টি ধর্ম - ইসলাম, বুদ্ধিস্ট, শিখ ,খ্রিস্টান, পার্সিকে ভারতের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সংখ্যালঘু স্বীকৃতি দেয়। এছাড়াও সম্প্রতি একাধিক রাজ্যে ইহুদি ধর্মকেও সংখ্যালঘু স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতে স্বীকৃত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সরকারি অনুদান , প্রাথমিক এবং উচ্চ শিক্ষায় সরাসরি সরকারি সহযোগিতা, সরকারি চাকরিসহ একাধিক সুযোগ সুবিধা লাভ করে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com