টিআইবির সংবাদ সম্মেলন

সোশ্যাল মিডিয়া ও ওটিটি নিয়ে খসড়া নীতিমালা সাংঘর্ষিক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২২ । ২১:৫০ | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২২ । ২১:৫০

সমকাল প্রতিবেদক

'রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস ২০২১' শীর্ষক খসড়া নীতিমালা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রোববার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে এ কথা জানায় সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মুহাম্মদ মনজুর ই-আলম।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই রেগুলেশন চূড়ান্ত হলে একটা নজরদারিভিত্তিক ব্যবস্থা তৈরি হবে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, খসড়া রেগুলেশন অনুযায়ী ডিজিটাল মিডিয়া, সামাজিক যোগযোগমাধ্যম এবং ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্ল্যাটফর্মগুলোর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করাই হবে এর উদ্দেশ্য। ১(৩) ধারায় বলা হয়েছে, এটি মূলত 'ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা প্রদানকারী' যারা অনলাইনে কনটেন্ট, সেবা অথবা বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট প্রদান করবে, তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে। অথচ খসড়া নীতিমালায় 'ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা প্রদানকারী', 'সেবা' অথবা 'অ্যাপ্লিকেশন'-এর মতো শব্দগুলোর সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। ফলে এর প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্নিষ্টদের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হবে। এ ছাড়া বিদেশি মালিকানাধীন বা বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার বাইরে অবস্থানকারী সেবা প্রদানকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বা সহযোগিতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু উল্লেখ নেই। অথচ নীতিমালা প্রয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে সমধর্মী বিদেশি প্ল্যাটফর্ম, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্তির ইঙ্গিত রয়েছে। এর ফলে নীতিমালাটির এই অস্পষ্টতা ও সর্বব্যাপী ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনায় দেশের বাইরের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করবে।

তিনি বলেন, ধারা ৩-এর উদ্দেশ্য যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তার সঙ্গে ইন্টারনেট বা অনলাইনের চেয়ে প্রচলিত টেলিকমিউনিকেশন ও সম্প্রচারের বেশি মিল রয়েছে। অথচ অনলাইনে যে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে কনটেন্ট পরিবেশন করা হয়, তা কোনো অর্থেই প্রচলিত টেলিকমিউনিকেশন বা সম্প্রচার মাধ্যমের অনুরূপ নয়। খসড়া নীতিমালার ধারা ৪ ও ৫-এ এর প্রতিফলন ঘটেছে। কেননা, ধারা দুটিতে নীতিমালার উদ্দেশ্য ও নিবন্ধনের যেসব পূর্বশর্ত দেওয়া আছে, তা মূলত প্রচলিত টেলিকমিউনিকেশন সেবা প্রদানকারী (ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী ও মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর) প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, খসড়ায় যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, তাতে অনেকেই সেল্ফ সেন্সরড হয়ে যাবে। এটা আসলে মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলার মতো।

তিনি বলেন, নীতিমালাটিতে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো বাদ দেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে এটি কার্যকরভাবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে অন্তত দুই বছর সময় দেওয়া উচিত, যাতে সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা, পরিচালন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com