
আকস্মিক বন্যায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২২ । ১৭:৪৩ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২২ । ১৭:৪৪
অনলাইন ডেস্ক

আকস্মিক বন্যায় সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ছবি-সমকাল
উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক ঢলে সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দেশের সাতটি জেলার হাওরে ২ হাজার ৬১৮ কিলোমিটার ডুবন্ত বাধঁ রয়েছে। বাঁধ নির্মাণে ৭২৭ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মধ্যে চারটি পিআইসি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছে মন্ত্রণালয়।
সোমবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে হাওরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক । সংবাদ সম্মেলনে উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ও মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বক্তব্য রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, দেশে ৭টি হাওর জেলার ৩৭৩ টি হাওরের মধ্যে সুনামগঞ্জে সর্বাধিক হাওর রয়েছে। এবছর জেলায় মোট ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল চাষ করা হয়েছে। আকস্মিক বন্যায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
তিনি জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জে হাওরের বাধেঁ ১৩৬ টি স্থানে সিপেজের সৃষ্টি হয়েছে । এর মধ্যে ৮৮টি সম্পূর্ণ মেরামত করা হয়েছে ৩৮ টির কাজ চলমান রয়েছে। ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ অনুযায়ী ৬৪টি জেলায় নদী খননের লক্ষ্যে ৫১১ টি নদীর যায়গায় ৬২৭ টি ছোট নদী-খাল খনন কাজ চলমান রয়েছে।
গত ১ এপ্রিল হতে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত তিন দিনে ১২০৯ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হয়েছে। সীমান্তের পাহাড় পেরিয়ে বৃষ্টির পানি এসে সুনামগঞ্জের হাওর জমা হয়েছে।
জাহিদ ফারুক বলেন, হাওর, নদী, খালে এতো পানি ধারণ করার ক্ষমতা নেই। প্রতিবছর উজান হতে ১দশমিক ২ বিলিয়ন টন পলি আমাদের দেশে চলে এসে জমা হয়। ফলে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে, নদী ও খালে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ড্রেজিং করে এসব নদী ও খাল রক্ষা করার কাজ চলমান রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, সুনামগঞ্জ হাওরে মোট ১হাজার ৭১৮ কিলোমিটার বাধঁ রয়েছে এর মধ্যে ৫৩৫ কিমি বাঁধ নির্মাণ যাচাই বাছাই করা হয়েছে।
তিনি জানান, সুনামগঞ্জ জেলার জন্য ১৫৪৭ কোটি টাকার ১৪টি নদী খনন একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে যার দৈর্ঘ্য ৩২৭ কিমি; সংযুক্ত খাল ২৫০কিমি । নভেম্বরে একনেকে পাশ হলে ২০২৩ সালে কাজ শুরু হবে।
সুনামগঞ্জ হাওরের ১৪ টি নদীতে পানি ধারণ ক্ষমা বৃদ্ধির লক্ষ্যে খনন কাজ চলমান রয়েছে; ইতোমধ্যে ৫টি জেলার নদীর ৩ ৭৪ কিমি খনন চলমান।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, আপদকালীন সময়ে সুনামগঞ্জ জেলার ১১ টি উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ১১ টি টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাওর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ফসলহানির ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। কারো কোনো গাফিলতি পেলে কোনো ক্ষমা হবে না। দুর্নীতি অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরিন এর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য নগদ অর্থসহ কৃষি ঋণ মওকুফসহ যা যা করা দরকার তা করা হবে,কৃষি মন্ত্রণালয় হতে সহায়তা করা হবে বলে জানান এনামুল হক শামীম।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com