রিকশাচালক সেজে আসামি ধরল পুলিশ

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২২ । ০৩:২৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো

১৫ মামলার দুই আসামি ধরতে রিকশাচালক সাজেন এক পুলিশ সদস্য। যাত্রীও পুলিশ - সমকাল

লুঙ্গি পরে এলাকায় দুই দিন ফল বিক্রি করেছেন এএসআই সাদ্দাম হোসেন। একটি ভ্যান নিয়ে দুই দিন সড়কের ওপর আলু, বেগুন, শসা বিক্রি করেছেন এএসআই বেলায়েত হোসেন। লুঙ্গি পরে আবাসিক এলাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা। আবার রিকশার চালক আর যাত্রীর আসনেও ছিলেন পুলিশ সদস্য। সেই রিকশা ঘুরেছে পুরো এলাকা। দৃশ্যটি সিনেমার মতো মনে হলেও চট্টগ্রামের খুবই ধূর্ত প্রতারক স্বামী-স্ত্রীকে ধরতে এভাবে জাল পেতেছিল পুলিশ। এর আগে একাধিকবার পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে তারা পালালেও এবার আর শেষ রক্ষা হয়নি।

মঙ্গলবার সিনেমা স্টাইলে রেকি করে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে প্রথমে প্রতারক স্বামীকে ধরার পর তার দেওয়া তথ্যে প্রতারক স্ত্রীকেও হেফাজতে নেয় পুলিশ। সীতাকুণ্ড উপজেলার শীতলপুর এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নগরীর আকবর শাহ থানার ওসি জহির হোসেন বলেন, মুহিব খান-দিলশাদ বেগম দম্পতির বিরুদ্ধে ১৫টি আর্থিক ও চেক প্রতারণার মামলায় পরোয়ানা ছিল থানায়। দু'বার তাদের অবস্থান শনাক্ত করলেও বারবারই হাত ফসকে যাচ্ছিলেন। পরে আমরা কৌশল পাল্টে ছদ্মবেশ নিতে বাধ্য হই।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের এসআই অর্ণব বড়ূয়ার নেতৃত্বে এএসআই সাদ্দাম ও বেলায়েত হোসেন নানা ছদ্মবেশে এলাকায় নজরদারি চালান। ১৫ থেকে ২০ দিন তাদের অবস্থান শনাক্ত করে নজরদারি চালানো হয়। সীতাকুণ্ড থানার শীতলপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

এএসআই সাদ্দাম বলেন, শীতলপুর এলাকায় দুই দিন লুঙ্গি পরে কখনও ফল বিক্রি করেছি, কখনও সবজি বিক্রি করেছি, কখনও রিকশায় যাত্রী নিয়ে আবাসিক এলাকার এক গলি থেকে অন্য গলিতে নজরদারি চালিয়েছি। আসামি খুবই ধূর্ত হওয়ায় তাকে হেফাজতে আনতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। একসঙ্গে তিন-চারজন দেখলেই সে আর ওই এলাকায় এক মুহূর্তের জন্যও থাকত না। ছদ্মবেশ না ধরলে তাদের ধরা খুব কঠিন হতো।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছয় মামলায় দণ্ডিত পোর্ট সিটি বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহিব খানের বিরুদ্ধে মোট সাতটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তিনি আকবরশাহ থানার পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনির রেজিস্ট্রার অফিস এলাকার বাসিন্দা। সাত মামলায় দণ্ডিত মুহিব খানের স্ত্রী দিলশাদ বেগমের বিরুদ্ধে মোট আটটি পরোয়ানা রয়েছে।

দুটি মামলায় মুহিব খানের এক বছর ১০ মাস কারাদণ্ড ও ২৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা অর্থ দণ্ড হয়। দিলশাদ বেগমের দুটি মামলায় এক বছর ১০ মাস, অনাদায়ে ২৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ডেভেলপার ব্যবসার নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে এক কোটি ২০ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করায় তাদের দুই বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে ১০টি চেক প্রতারণা মামলায় সাজা ও দুটি প্রতারণা মামলায় মোট ১১ বছর সাজা হয়। তিনটি চেক প্রতারণা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com