
বিডিবিও-সমকাল আয়োজন
খুলনায় প্রাণবন্ত জীববিজ্ঞান উৎসব
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২২ । ২১:২৩ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২২ । ২১:৩১
খুলনা ব্যুরো

‘ব্রেনের নিউরন বিভাজন হয় না- তাহলে ব্রেন ক্যান্সার হয় কেন? হার্টের পেসমেকার চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা যায় না কেন? আমরা জানি, বানর থেকে মানুষে রূপান্তর হয়েছে- তাহলে মানুষ থেকে বানর হয় না কেন? প্রতিবছর বিজ্ঞানবিষয়ক এত অলিম্পিয়াড ও উৎসব হয়, প্রচার চলে, তারপরও মৌলিক গবেষণায় আমাদের দেশ এত পিছিয়ে কেন?’ এ রকম মজা, কৌতূহলী ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নে জমজমাট ছিল খুলনা অঞ্চলের জীববিজ্ঞান উৎসব। শিক্ষার্থীদের ক্ষুরধার প্রশ্ন ও শিক্ষকদের বিজ্ঞানভিত্তিক উত্তরে প্রাণবন্ত এক পরিবেশের দেখা মেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) বিডিবিও-সমকাল বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান উৎসবে। আঞ্চলিক এ উৎসব থেকে পরে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার টিকিট পান ১০০ শিক্ষার্থী।
আজ শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনে হয় এই উৎসব। নির্ধারিত সময়ের আগেই খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে উপস্থিত হয়। সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হয়। উদ্বোধন করেন জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড খুলনা অঞ্চলের সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রহমান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোর্শেদুল ইসলাম, সমকালের খুলনা ব্যুরো প্রধান মামুন রেজা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংগীতের পর সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় এক ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষা। এতে জুনিয়র ক্যাটাগরিতে (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম) ১০৭ জন, মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে (নবম ও দশম) ১৬৯ জন ও উচ্চ মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে (একাদশ ও দ্বাদশ) ৮৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। সকাল সাড়ে ১০টায় পরীক্ষা শেষ হলে সবাই মিলিত হয় খুবির সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে। সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা খুঁজে নেয় অন্যরকম আনন্দ। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রাক্তন ডিন অধ্যাপক ড. রায়হান আলী ও ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রশ্নোত্তর পর্ব চলতে চলতে পরীক্ষার ফল চলে আসে। তিনটি ক্যাটাগরিতে পরে ১০০ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণীতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস। অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন খুবির ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক শরীফ হাসান লিমন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মুখস্ত ও কোচিংনির্ভর শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রকৃত ও বিশুদ্ধ জ্ঞানে বলিয়ান হতে হবে। বায়োটেকনোলজি ও ইনফরমেশন টেকনোলজি এ সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য মানবজাতির কল্যাণ। শিক্ষার্থীদের সেই পথের জ্ঞানী হতে হবে।
প্রতিযোগিতায় জুনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাঁচজন। এর মধ্যে ক্যাটাগরি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন খুলনা করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের রাদওয়া লুবাবা হাসান। অন্য চার চ্যাম্পিয়ন হলো কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ফাহিম তানজিম, সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের চৌধুরী আরাফাত হোসেন, যশোর পুলিশ লাইন্স স্কুলের ফারহানা সুলতানা ও চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা একাডেমির ওবায়দুল আসাদ সৈকত।
মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ছয়জন। তাদের মধ্যে ক্যাটাগরি চ্যাম্পিয়ন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের শাওন রেজা। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খুলনা পাবলিক কলেজের অংকুর দাস, আকিজ কলেজিয়েট স্কুলের রাহাত মাহমুদ রোহান, যশোর পুলিশ লাইন্স স্কুলের তাহসিন আলম ও তৌসিফ রাব্বী এবং ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের সামিন ইয়াসির চমন।
উচ্চ মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে পাঁচজন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের মধ্যে ক্যাটাগরি চ্যাম্পিয়ন হয় নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের জাহিদুজ্জামান জিহাদ। অন্যরা হলো সরকারি এম ইউ ডিগ্রি কলেজের অর্পিতা মজুমদার, খুলনা নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাদ আহমেদ পাঠান, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের মৌমিতা তাবাসসুম ও খুলনা সরকারি এমএম সিটি কলেজের আহলাকুল ইসলাম ফাহিম। বিজয়ীদের হাতে মেডেল ও সার্টিফিকেট তুলে দেন অতিথিরা।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com