
দিবস
নিরাপদ কর্মপরিবেশ চাই
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২২ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মো. আকতারুল ইসলাম

'নিশ্চিত করি শোভন কর্মপরিবেশ, সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশ'- এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ২৮ এপ্রিল পালিত হচ্ছে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ ও কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সম্পর্কে সমন্বিত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৬ সাল থেকে জাতীয়ভাবে এ দিবসটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৮ সবার জন্য স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিশুশ্রম নিরসন করা এর লক্ষ্য। আমরা জানি, টেকসই উন্নয়নের জন্য টেকসই, শোভন এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি তথা নিরাপদ শিল্পায়নের কোনো বিকল্প নেই। আইএলও সহযোগিতায় কলকারখানা, প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তর কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে চারটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। শ্রম ও পরিদর্শন ব্যবস্থাকে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটির বিষয়কে নিশ্চিত করা হচ্ছে। এসডিজির অভীষ্ট সামনে রেখে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০৩০) প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ, শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে এ কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। ডিজিটাল ডাটাবেজ সম্পন্ন হলে কোন খাতে কত শ্রমিক নিয়োজিত তার প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে। শ্রমিকদের সব রকম সুবিধা প্রদান সহজ হবে। গত নভেম্বর পর্যন্ত ৬২৫০টি কারখানায় সেফটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী শোভন কর্মপরিবেশের পাশাপাশি ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রমমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের আশা করছে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়। এ জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার এবং শ্রমিকের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। গার্মেন্ট শিল্পে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে আমাদের তৈরি পোশাক খাত। শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি নিশ্চিতের জন্য রাজশাহীতে মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ১৯ বিঘা জমির ওপর ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ এ বছরেই শেষ হবে। বিশ্বে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শুরু হয়ে গেছে। এই শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বাংলাদেশের সরকার, মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আগামীর বিশ্বে বাংলাদেশের সমস্যা ও সম্ভাবনা মূল্যায়ন করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। একদিকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে জনমিতিক লভ্যাংশ বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবর্ণ সময় সমাগত। দেশের শিল্প ও শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিক এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ খাতে যুক্ত হবেন সবার জন্যই আগামী ১৫-২০ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং জনমিতিক লভ্যাংশের বিষয়টি মাথায় রেখেই শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দক্ষ জনবল তৈরি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে কর্মসংস্থান অধিদপ্তর গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা ও কর্মক্ষেত্রে কল্যাণমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ উৎপাদনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা জরুরি। এ জন্য নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। এ উদ্যোগে সরকারের পাশাপাশি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক সংগঠন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে বলে মনে করি।
মো. আকতারুল ইসলাম: তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা ও কর্মক্ষেত্রে কল্যাণমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ উৎপাদনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা জরুরি। এ জন্য নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। এ উদ্যোগে সরকারের পাশাপাশি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক সংগঠন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে বলে মনে করি।
মো. আকতারুল ইসলাম: তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com