তেঁতুলতলার আন্দোলন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়: সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের বিবৃতি

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২২ । ১৮:২৬ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২২ । ১৮:২৬

অনলাইন ডেস্ক

তেঁতুলতলা থাকছে শিশুদের...এমন ঘোষণার পর শিশুদের উল্লাস। ছবি-সংগৃহীত

রাজধানীর কলাবাগানে তেঁতুলতলা মাঠ ঘিরে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা যে আন্দোলন করছেন তা কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয় বলে মন্তব্য করেছেন ১৯ জন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, কলাবাগান খেলার মাঠ ঘিরে চলমান আন্দোলন একটি সামাজিক আন্দোলন। সমাজের সার্বিক বিকাশের জন্য উত্থাপিত দাবি, কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়।

তেঁতুলতলা মাঠে আন্দোলনকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠলে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা এই বিবৃতি দেন। 

তারা বলেন, খেলার মাঠ ঘিরে সামাজিক উদ্যোগ যেমন সবার সাধুবাদ দাবি করে, তেমনি আন্দোলনের সুযোগে কারও কারও উদ্দেশ্যমূলক তৎপরতা সম্পর্কে আমরা নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন-আব্দুল গাফফার চৌধুরী, সৈয়দ হাসান ইমাম,অনুপম সেন, রামেন্দ মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোওয়ার আলী, আবেদ খান, সেলিনা হোসেন, আবদুস সেলিম, লায়লা হাসান, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, শফি আহমেদ,শাহরিয়ার কবীর,মুনতাসীর মামুন, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ, হারুন হাবীব। 

তারা বলেন, শিশু-কিশোরদের সুস্থ শারীরিক ও মানসিক গঠনের জন্য খেলার মাঠ অপরিহার্য। এ ধরনের সামাজিক ক্রীড়াস্থান ব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনের সদস্যদের সন্তানরাও রাষ্ট্রের সুুযোগ্য নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠার সুযোগ পায়। মাঠ, পাঠাগার, ব্যয়ামাগার ইত্যাদি শিশু-কিশোরদের সুস্থ নাগরিক বিকাশের প্রধান শর্ত।  

কলাবাগানের এই মাঠটিতে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরেই প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলছিল। 

গত রোববার আন্দোলনে অংশ নেওয়া সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে ইসা আব্দুল্লাহ পিয়াংসুকে আটক করে পুলিশ। আটকের ১৩ ঘণ্টা পর 'আর আন্দোলন করব না'- এমন মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরপর থেকে আন্দোলন আরও জোরালো হতে থাকে। 

আন্দোলনের মধ্যে তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করে দেয় কলাবাগান থানা।

পরে নানা ঘটনাপ্রবাহের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানার জন্য ভবন নির্মাণ করা হবে না। মাঠটি যেভাবে ছিল সেভাবেই থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্দেশনা দিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে আর কোনো নির্মাণকাজ হবে না। মাঠটি যেভাবে ব্যবহার করা হতো সেভাবেই ব্যবহার হবে। সেখানে আর থানার ভবন হবে না। খেলার মাঠই থাকবে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্দেশ দিয়েছেন। 

তিনি জানান, জায়গাটি পুলিশকে অধিগ্রহণ করে দেওয়া হয়েছে। তাই জায়গাটি পুলিশেরই থাকবে। এ নিয়ে তিনি বলেন, মাঠের মালিকানা পুলিশের, আর এই মাঠ ব্যবহার করবে এলাকাবাসী। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, থানা ভবন নির্মাণের জন্য আলাদা জমি তারা খুঁজে নেবেন। 

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার আলোকে আমরা আশা করব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অতি শিগগির কলাবাগান থানার জন্য একটি বিকল্প স্থান খুঁজে নেবেন ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় থানা নির্মাণ করবেন। 

থানা ভবন নির্মাণে জমি বরাদ্দের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, আমরাও এটা মনে করি যে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনা জন্য, নাগরিকদের দেখভাল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ ও থানা রাষ্ট্রের অপরিহার্য অঙ্গ। তাই অত্র এলাকায় থানা ভবন নির্মাণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটি জায়গা বরাদ্দের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাচ্ছি।


 

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com