
নির্মম নির্যাতনে আহত হোসিয়ারি শ্রমিকের মৃত্যু
প্রকাশ: ২৩ মে ২২ । ০৯:৩৭ | আপডেট: ২৩ মে ২২ । ০৯:৩৭
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রতীকী ছবি
চার মাস আগে সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে প্রতিপক্ষ কাউন্সিলরের পক্ষে কাজ করায় বিজয়ী প্রার্থীর অনুসারী সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছিল সুব্রত মণ্ডল (১৮) নামের এক হোসিয়ারি শ্রমিককে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে মারা যান তিনি। তিনি নগরের দেওভোগ লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়ার দীঘিরপাড় এলাকার সুরেশ মণ্ডলের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, গত ১৫ মে মধ্য রাতে টেলিফোন করে সুব্রতকে নগরের লক্ষ্মীনারায়ণ দীঘিরপাড়ের ভাড়া বাসার বাইরে এনে বাসার সামনে থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় বিজয়ী কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরের অনুসারী সায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম ও তার সহযোগীরা। এরপর পাশের পালপাড়া এলাকায় নিয়ে রাস্তায় ফেলেই কেটে দেওয়া হয় বাম হাতের তিনটি আঙ্গুল। কুপিয়ে ও পিটিয়ে তার সারা শরীর রক্তাক্ত জখম করা হয়।
পরে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা তাকে তার বাড়ির বাইরে ফেলে যায়। এরপর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে ৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল বিকেলে মারা যান তিনি।
মারা যাওয়ার আগে সুব্রতের জবানবন্দি রেকর্ড করেন তার এক বন্ধু। তাতে সুব্রত তাকে অপহরণ, মারধরের কারণ এবং কারা তাকে মারধর করেছে, তার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এদিকে গতকাল বিকেলে সুব্রতের মরদেহ এলাকায় পৌঁছলে তার লাশ নিয়ে খুনিদের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে। ছেলের লাশ দেখে বারবার মূর্ছা যান তার মা গৌরী মণ্ডল। বিলাপ করে কেঁদে খুনিদের বিচার চান বড় দুই বোন শম্পা মণ্ডল ও লিপি মণ্ডল।
সুব্রতকে হত্যার ঘটনায় শম্পা মণ্ডল বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামিরা হলেন- সায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম (৩০), সাজিদ ভূঁইয়া (৩৬), নাইম উদ্দিন বাবু (৩৫), দোলন (২৫), আল আমিন (২৫), নোমান (২২), প্রণয় (২২), রাকেশ (২০), সুদেব (৩২), অনিক রাজিব (২৬) ও মানিক (২৫)।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় সুব্রত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধানের পক্ষে কাজ করেন। শফিউদ্দিন প্রধান বলেন, অসহায় দরিদ্র একটি ছেলেকে নির্মমভাবে খুন করা হলো। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
এ ঘটনায় অভিযোগের তীর ওঠা ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরও অবশ্য এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছেন। তিনি বলেন, এলাকায় আমার কোনো বাহিনী নেই। সুব্রত হাসপাতালে থাকার সময় তিনি তার বাড়িতে গিয়েছেন এবং তাঁকে সহায়তা করেছেন। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন, অপরাধী যেই হোক, তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com