ফের গ্রেপ্তার হলেন আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী

রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে অস্থায়ী জামিন নেয়ার পর নিম্ন আদালতে জামিন না নেয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান জানান, সোমবার রাত ১২টার দিকে মেয়রের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিম্ন আদালত থেকে তিনি জামিন নেননি।

জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহিদুজ্জামান শাহিদকে পরাজিত করে মুক্তার আলী মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনের আগে বোমাবাজি, হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। নির্বাচনের পরে এক কলেজ শিক্ষককে মারধরের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। গত বছরের ৯ জুলাই গ্রেপ্তার হন তিনি।

গত বছরের ৬ জুলাই রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আড়ানী পৌর এলাকার পিয়াদাপাড়ায় মুক্তার আলীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তার বাড়ি থেকে নগদ টাকা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে ছিল অবৈধ বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটার গান, দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক, একটি এয়ার রাইফেল, শর্টগানের ২৬ রাউন্ড গুলি, চারটি পিস্তলের ম্যাগজিন, পিস্তলের ১৭ রাউন্ড গুলি, চারটি গুলির খোসা, ১০ গ্রাম গাঁজা, সাত পুরিয়া হেরোইন, ২০ পিস ইয়াবা, নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং মেয়রের সই করা দু’টি চেক জব্দ করা হয়। চেকে টাকার পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ।

এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান মুক্তার আলী। পরে মেয়র মুক্তারের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০) এবং দুই ভাতিজা সোহান (২৫) ও শান্তকে (২৩) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত বছরের ৯ জুলাই গ্রেপ্তার হন মুক্তার আলী। এরপর ১২ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়।

দীর্ঘদিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। হাইকোট বিভাগে রিট পিটিশনের আদেশক্রমে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই প্রত্যাহার আদেশের চিঠি পেয়ে এ বছরের ২২ মার্চ থেকে নিজ কর্মস্থালে যোগদান করেন মুক্তার আলী। কিন্তু উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পর নিম্ন আদালতে জামিন নেননি তিনি।