
বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
প্রকাশ: ২৪ জুন ২২ । ১৮:৫৯ | আপডেট: ২৪ জুন ২২ । ১৮:৫৯
সমকাল প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
টানা দুই সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাসাতে রেখেই তার চিকিৎসা চলবে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার।
বিকেলে এভারকেয়ার হাসপাতাল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান জানান, করোনা ঝুঁকির কারণেই অসুস্থ খালেদা জিয়াকে তার বাসায় স্থানান্তর করা হচ্ছে।
গত ১০ জুন দিবাগত রাতে মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেখানে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম সম্পন্ন করা হয়। এ সময় তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি ব্লক ছিল ৯৯ শতাংশ। সেটিতে রিং পরানো হয়।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ম্যাডাম এখনও অসুস্থ। তিনি যে অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন, সেই অবস্থা এখন স্থিতিশীল। কিন্ত অন্যান্য উপসর্গ যেমন লিভার সিরোসিসের রক্তক্ষরণ বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। কিডনি সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। হার্টের দুইটা ব্লক এখনও রয়ে গেছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি কভিড বাড়ছে বলে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে আপাতত বাসায় নেওয়া হোক। পরে যদি কোনো কমপ্লিকেশন হয়, তাহলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলে জানান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণের ঝুঁকি খুবই উচ্চ। তিনি ঝুঁকিতে আছেন। বাসায় থাকলেও পুরো মনিটরিংয়ে তাকে রাখতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বলেন, আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী অপর দুইটা ব্লকের ক্ষেত্রে, যাদের লিভার ডিজিস নাই, কিডনি ডিজিস নাই, চান্স অব হার্ট ফেইলিউর নাই, তখন করে থাকি। কিন্তু খালেদা জিয়ার একটা ব্লক অপসারণ করতে গিয়ে তার কিডনি সাটডাউন হয়ে পড়ে, হার্ট ফেইলিউর হয়েছে, রক্তক্ষরণ হয়েছে। ওই দুইটা যদি করতাম, তার কিডনি টোটাল সাটডাউন হয়ে যেত। সেজন্য আমরা ওই দুইটা ব্লক অপসারণ করিনি।
মেডিকেল বোর্ড সদস্য অধ্যাপক এএফএম সিদ্দিকী বলেন, ম্যাডামের অনেক জটিল অসুস্থতা আছে। তার রেনাল ফিইলিউর, তার রক্তক্ষরণের আশঙ্কা, লিভার সিরোসিসতো আছেই। এই লিভার সিরোসিসের কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা শুধু তার রক্তক্ষরণ এলাকায় লাইগেশন করে বন্ধ রেখেছি। সেগুলো কি অবস্থায় আছে গত ৬ মাসে আমরা তার ফলোআপ করতে পারিনি। এখন এই কার্ডিয়ার কন্ডিশনের জন্য তার ফলোআপ করাটা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তারা বারবার বলছেন, খালেদা জিয়ার সব জটিলতার চিকিৎসা উন্নত সেন্টারে করতে হবে। যেখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক যে অবস্থা আছে, তাতে তাকে এখনও বিদেশে নেওয়া সম্ভব। অর্থাৎ এখনও তাকে প্লেনে উঠানোর মতো অবস্থা আছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ছাড়াও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. আল মামুন এবং হাসপাতালের মেডিকেল প্রমোশন বিভাগের প্রধান বিনয় কাউল উপস্থিত ছিলেন।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত বছরের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। ওই সময়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন টানা ৮১ দিন। এর আগেও করোনাক্রান্ত হয়ে জটিল অবস্থায় তাকে দুই দফায় হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com