
কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আ'লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২২ । ১১:২০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ১১ নম্বর বড় মাছুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দু'পক্ষ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সময় একাধিক ককটেলের বিস্ম্ফোরণ ঘটানো হয়। হামলায় আহত হয়েছেন দলের সহযোগী সংগঠনের তিন নেতা। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে গত বছর ইউপি চেয়ারম্যান হওয়া নাসির হোসেন হাওলাদার ও তাঁর সমর্থকরা হামলা চালালে এ সংঘর্ষ বাধে।
আহত তিন নেতা হলেন- ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি বড় মাছুয়া গ্রামের লোকমান হোসেন হাওলাদার, ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাব্বি ঘরামী ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি মিজান। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে লোকমান হোসেনের অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় রাতেই ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মাইনুল ইসলাম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নাসিরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন। আরও ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে বিস্ম্ফোরক আইনে মামলাটি করা হয়। রাতেই চেয়ারম্যান নাসিরের সমর্থক বড় মাছুয়া গ্রামের শাকিল, তামিম ও মুছা নামে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এজাহারে বলা হয়, বাদী মাইনুলের বোন আয়শা আক্তার মনি গত বছর বড় মাছুয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা নাসির। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ নাসির নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মারধরসহ নানা অত্যাচার করে আসছেন। এর মধ্যে বড় মাছুয়া বাজার তলসেট সংলগ্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিস উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌস, উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের নেতৃত্বে বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন।
পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান নাসিরের নেতৃত্বে ৪৫ থেকে ৫০ জনের একটি দল ওই সময় সেখানে ককটেলের বিস্ম্ফোরণ ঘটায় এবং দা, হকিস্টিকসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওই সময় আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীরা পাল্টা ধাওয়া করলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান নাসির সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, দলীয় অফিস উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পর কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী তাঁর সমর্থক যুবলীগ নেতা লোকমানকে বেধড়ক মারধর করেন। এ নিয়ে তাঁর কর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। পরে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, ওই ঘটনার পর প্রতিপক্ষরা বড় মাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও বড় মাছুয়া জামে মসজিদে হামলা চালায় ও ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে দুই ভবনের জানালার গ্লাস ভেঙে গেছে। একটি বৈদ্যুতিক মিটারও ভাঙচুর করা হয়েছে।
মঠবাড়িয়া থানার (ওসি) নুরুল ইসলাম বাদল জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই সময় ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। রাতেই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com