টিআইবি-বাপার সভায় বক্তারা

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের নীতি কাঠামো অনেকটাই জিম্মি

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২২ । ২৩:১৪ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২২ । ২৩:১৪

সমকাল প্রতিবেদক

দেশে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের পরিকল্পনা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন দাতা এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীর ওপর নির্ভরশীল। ফলে এ খাতের নীতি-কাঠামো তাদের কাছে অনেকাংশেই জিম্মি। আইনি দুর্বলতা, নীতি-কাঠামোর জিম্মিদশা এবং স্বচ্ছতার ঘাটতিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে ক্ষতি হচ্ছে রাষ্ট্র ও জনগণের।

বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'বাংলাদেশে কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্পে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ: আইইপিএমপি প্রণয়নে শুদ্ধাচার নিশ্চিতে করণীয়' শীর্ষক এক সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত এ সভায় তাঁরা আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সবার আগে প্রয়োজন কার্যকর জাতীয় নীতি এবং এর আলোকে ইন্ট্রিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টারপ্ল্যান (আইইপিএমপি) প্রণয়ন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুশাসন নিশ্চিতে এই মুহূর্তে আমাদের জাতীয় নীতি তৈরি করা প্রয়োজন। সেই নীতি হতে হবে বাংলাদেশের স্বপ্ন ও লক্ষ্যমাত্রাকে মাথায় রেখে। আমরা জলবায়ু নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যতটা সোচ্চার, দেশের ভেতর পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে ততটা তৎপর নই।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন' এর দায়মুক্তির বিধানটি বাতিল করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং পরিবেশ সাংঘর্ষিক বিষয় নয়। পরিবেশ নষ্ট না করেও যে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায় তা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা দেখেছি। তিনি বলেন, দেশীয় সক্ষমতা অর্থাৎ নিজেদের গ্যাস সম্পদকে কাজে না লাগিয়ে বৈদেশিক এলএনজি-নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যা মূলত ব্যবসায়িক স্বার্থসিদ্ধির দিকে ইঙ্গিত করে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, শুধু জিডিপিভিত্তিক উন্নয়নের মধ্যে আটকে না থেকে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং পরিবেশের ক্ষেত্রেও উন্নয়ন আমরা প্রত্যাশা করি।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের একনায়কতান্ত্রিকতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারকের উদ্যোগী হতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ২০১২ সালে সমুদ্র বিজয়ের পর থেকে আমরা তা নিয়ে বহু উল্লাস-উদযাপন করেছি। কিন্তু গত ১০ বছরে আমরা কি সেই সমুদ্রসীমা কাজে লাগিয়েছি? পাশের দেশগুলো যেখানে গ্যাস উত্তোলন করছে আমরা ঠিক তার পাশেই এত দিনে কী করেছি? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা জরুরি।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, কাজ করলে কিছু ভুলত্রুটি থাকবেই। গঠনমূলকভাবে আমাদের সেই ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া হলে আমরাও তা সংশোধনে আগ্রহী।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com