রুশ বাহিনীর দখলে নেওয়া ইউক্রেনের ৪ অঞ্চলে গণভোট চলছে

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২২ । ২০:৪৫ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২২ । ২০:৪৫

অনলাইন ডেস্ক

দনিয়েৎস্কের বাসিন্দারা ভোট দিচ্ছেন- বিবিসি

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের অনেক অংশ দখলে নিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে রাশিয়া যেসব এলাকা পুরোপুরি কিম্বা আংশিকভাবে দখল করে নিয়েছে সেসব জায়গায় আজ থেকে স্বঘোষিত এক গণভোট শুরু হয়েছে। এসব অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়া হবে কি না এই প্রশ্ন রাখা হয়েছে এই গণভোটে।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা করে বলছে এই গণভোট অবৈধ এবং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ইউক্রেনীয় অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করে নেওয়ার প্রথম ধাপ। যে চারটি অঞ্চলে এই গণভোট হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে ডনবাস অঞ্চলের দুটো প্রদেশ- দনিয়েৎস্ক ও লুহান্সক এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝা ও খেরসন। এই চারটি অঞ্চলেই যুদ্ধ চলছে।

কিয়েভ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার সৈন্যরা রণাঙ্গনে পরাজয়ের শিকার হওয়ার পর এই কৌশল গ্রহণ করেছে। গণভোটের ফল কী হবে তা অনেকটাই নিশ্চিত। ফলাফলে এই অঞ্চলগুলোকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার কথাই বলা হবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে তিন লাখের মতো রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশের এক নির্দেশ দেওয়ার দু'দিন পর বিতর্কিত এই গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বুধবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, মাতৃভূমির আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করতেই তিনি রিজার্ভ সৈন্যদের ডেকে পাঠাচ্ছেন।

এ নিয়ে একটি ডিক্রিতেও সই করেছেন তিনি এবং ইতোমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তথাকথিত এই গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের এই চারটি এলাকা রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে একীভূত করে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর সেসব জায়গায় আক্রমণ চালানো হলে রাশিয়া দাবি করতে পারবে যে তাদের ভূখণ্ডে চালানো হামলায় পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

এর ফলে যুদ্ধ আরো বেশি তীব্র হয়ে উঠতে পারে। এর আগে গণভোটের মাধ্যমে ক্রাইমিয়াকেও রাশিয়া একীভূত করে নিয়েছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ইউরি সাক বলেছেন, এই তথাকথিত গণভোট ব্যর্থ। তিনি বলছেন, রুশ দখলকৃত চারটি প্রদেশের স্থানীয় জনগণের সবাই ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার পক্ষে। এবং একারণেই এই অঞ্চলগুলিতে এতো জোরালো গেরিলা প্রতিরোধ হচ্ছে।

রুশ কর্মকর্তারা বলছেন ভোট কেমন হচ্ছে তা দেখার জন্য বিভিন্ন দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনো দেশই এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেনি।

শুক্রবার থেকে এই গণভোট শুরু হয়েছে এবং আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচদিন ধরে ভোট-গ্রহণ চলবে। ভোট-গ্রহণ চলাকালে এখনও পর্যন্ত কোথাও বড় ধরনের কোনো হামলার খবর পাওয়া যায়নি।

রুশ টিভি চ্যানেল আরটি-এর এক খবরে বলা হয়েছে 'দনিয়েৎস্ক প্রজাতন্ত্রের' প্রধান ডেনিস পুশিলিন বৃহস্পতিবার রাতে বলেছেন তার অঞ্চলে ‘কিয়েভ খুব শিগগিরই আক্রমণ’ করতে পারে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, গণভোটে মানুষ যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন সেজন্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধারণা করা হচ্ছে বুধবার এসব গণভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com