
স্বাস্থ্য খাতে টেকসই পরিবর্তন
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২২ । ১২:২০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ডাক্তারবাড়ি ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তন, বিশুদ্ধ পানির অপ্রতুলতা ও কভিড-১৯ মহামারির মতো পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা খাতে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে অনুন্নত আর উন্নয়নশীল দেশের বাসিন্দাদের। স্বাস্থ্যসেবায় বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা এবং টেকসই ও সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশে সরকারের পাশাপাশি জোরালো ভূমিকা রাখছে বেসরকারি সংস্থা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নিত্যব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল)।
মানুষের স্বাস্থ্য, আত্মবিশ্বাস ও সুস্থতার উন্নয়নে এসব ব্র্যান্ড ধারাবাহিকভাবে যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, হাত ধোয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ডায়রিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ কমিয়ে আনা, প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ভাসমান হাসপাতাল চালু, ওরাল হেলথ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ক্যাম্পেইন, স্যানিটেশন ব্যবস্থার প্রসার, নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহে উদ্যোগ, তরুণদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলা, মায়েদের পুষ্টি সম্পর্কে সচেতন করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ত্বকের যত্ন ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকতে নিয়মিত হাত ধোয়ার কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, সাবান ও নিরাপদ পানির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত থাকার মাধ্যমে অন্তত ৯ শতাংশ অসুস্থতা এবং ৬ শতাংশ মৃত্যু প্রতিহত করা সম্ভব। সারাবিশ্বে শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া। বছরে ৫ বছরের কম বয়সী ৭ লাখ ৮০ হাজার শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জীবন হারায়। অভিভাবক ও শিশুদের মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলে সহজেই এই মৃত্যু এড়ানো যায়।
আর তাই ইউনিলিভারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্র্যান্ড লাইফবয় ১৯৯০ সাল থেকে হাত ধোয়ার ক্যাম্পেইন শুরু করে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি শিশুকে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতি শিখিয়েছে। পাশাপাশি প্রান্তিক মানুষকে সরাসরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে ভাসমান 'লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল'। 'লাইফবয়' পরিচালিত এই হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা চরাঞ্চলের দুর্গম এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেন। প্রতিবছর এই হাসপাতালটি ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নানামুখী সেবা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশে দাঁত ও মুখের যত্নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে পেপসোডেন্ট। বিনামূল্যে দাঁতের চিকিৎসা ক্যাম্প ও সচেতনা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির (বিডিএস) সঙ্গে ১৯৯৮ সাল থেকে কাজ করছে ব্র্যান্ডটি।
সাধারণ মানুষের জন্য দাঁতের চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বিগত বছর সেনসিটিভ এক্সপার্ট বাই পেপসোডেন্ট বিডিএসের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে বিনামূল্যে ৩৩৪টি ডেন্টাল ক্যাম্প আয়োজন করেছে। এ ক্যাম্পগুলোর মাধ্যমে ১০ লাখ মানুষকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। ব্র্যান্ডটির লক্ষ্যমাত্রা ২০২২ সালে ৩০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁঁছানো। নিরাপদ স্যানিটেশনের অভাবে কলেরা ও টাইফয়েডের মতো রোগের সংক্রমণ হয় আর ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এস রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি। তাই ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড 'ডোমেক্স' ২০২১ সালে ভূমিজের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ৬টি আধুনিক ও বহুমুখী ওয়াশ অবকাঠামো তৈরি করেছে।
এসব অবকাঠামোর মাধ্যমে প্রতি মাসে ২৬ হাজার ৪৯০ জন নিম্ন আয়ের মানুষ স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছেন। সবার আয়ত্তের মধ্যে অন্তত একটি পানির উৎস থাকা উচিত বলে মনে করে ইউনিলিভার। কারণ নিরাপদ পানির অভাবে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে দেশের ৪২.৬ শতাংশ মানুষের কাছে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পান করার পানির উৎস রয়েছে। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ ও সহজলভ্য পানির ব্যবস্থা করার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে।
পানি সংকট সমাধানে নিত্যনতুন চিন্তাধারা ও উদ্ভাবন নিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছে ইউনিলিভারের নিরাপদ পানির ব্র্যান্ড 'পিওরইট'। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে পিওরইট ও বাংলাদেশ ওয়াটার মাল্টি-স্টেকহোল্ডার্স পার্টনারশিপের সাত সদস্য সম্মিলিতভাবে তরুণদের জন্য 'ওয়াটার ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশিন-২০২১ (ডব্লিউআইসিসি)' নামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
ইউনিলিভারের পুষ্টিপণ্য ব্র্যান্ড হরলিক্স সারাদেশে ২৫ লাখ মা'কে সঠিক খাদ্য ও পুষ্টির ব্যাপারে সচেতন করার লক্ষ্য গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে মায়েরা অনেক সময়েই তাদের শিশুদের ও পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিষয়ে সঠিক ধারণা দিতে পারেন না। আর তাই হরলিক্স একটি বিস্তৃত সচেতনতামূলক প্রকল্প স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে পুষ্টি প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন পরিবারকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া গর্ভবতী ও মাতৃদুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান পুষ্টি ব্র্যান্ড হিসেবে হরলিক্স মাদারস প্লাস ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্ব মাতৃদুগ্ধপান সপ্তাহ উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে মাতৃদুগ্ধ পানে মায়েদের সক্রিয়ভাবে সাহায্য করতে স্বামী ও পুরুষদের উৎসাহিত করা, মাতৃদুগ্ধপানের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। া
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com