অধ্যাপক তাহের হত্যা: দুই আসামির ফাঁসির রায় স্থগিত

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২২ । ১৩:২৩ | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২২ । ১৩:২৩

সমকাল প্রতিবেদক

অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। আসামিরা হলেন রাবি ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম।

মামলার আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা জানান, দুই আসামির ফাঁসির রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের রায় রিভিউ (পুর্নবিবেচনা) চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। গত ৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন এক আদেশে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি ১৭ নভেম্বর রায় রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। ফলে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের মৃত্যদণ্ড কার্যকরের সুযোগ আপাতত থাকছে না। আদালতে আসামিদের আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ইমরান এ. সিদ্দিক। অধ্যাপক তাহেরের পরিবারের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক তাহেরের মৃতদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে এই হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত এক রায়ে ৪ জনকে ফাঁসি ও ২ জনকে বেকসুর খালাস দেন। খালাস পাওয়া চার্জশিটভুক্ত ২ আসামি হলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী। এরপর নিয়ম অনুযায়ী আসামিদের মৃতুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরাও আপিল করেন। উভয় আবেদনের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল হওয়া দুই আসামি হলেন ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া যে দু’জনের ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন, মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সমন্ধি আব্দুস সালাম।

পরে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে গত ৫ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বধীন আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখা হয়। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বধীন আপিল বিভাগের সাক্ষরের পর ৬৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যবেক্ষণসহ প্রকাশিত হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন নিহত ড. এস তাহের আহমেদ। তিনি জীবিত থাকলে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন কোনোদিন ‘অধ্যাপক’ হতে পারবেন না- এমন আশঙ্কা থেকেই তাহেরকে শিক্ষক মহিউদ্দিন খুন করেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দুই আসামি আপিল বিভাগের রায় রিভিউ চেয়ে আবেদন করেন।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com