
প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই সমন্বিত উদ্যোগ
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২২ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
--

প্রোটিন শরীরের অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের অভাবের পাশাপাশি আছে সচেতনতার অভাব। প্রোটিনসমৃদ্ধ নানা খাবার, যেমন- পোলট্রি মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মাংস নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এগুলো দূর করা প্রয়োজন। সুস্থ-সবল জাতি গঠনে প্রাণিজ প্রোটিন সম্পর্কিত জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম, দুধ ও মাংস দিতে হবে। পোলট্রি শিল্প বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। সরকারের উচিত, এ শিল্পকে সহায়তা দেওয়া।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে 'প্রোটিন সবার অধিকার' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। বৈঠকের আয়োজন করে সমকাল। সহযোগিতায় ছিল পোলট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) ও ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি)।
ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা
২০৪১ সালে যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, সে দেশ গঠনে মেধাসম্পন্ন জাতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সবার প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভিশন হচ্ছে সকলের জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করা। এই ভিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে আমরা কাজ করছি। নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সংরক্ষণ, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জাত উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন নিকট অতীতের চেয়ে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত রমজান মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করা হয়েছে। প্রোটিন যেহেতু মানুষের অধিকার, সে জন্য আমরা এসব উদ্যোগ নিয়েছি। এখন প্রোটিন নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা গেছে কিনা, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা অনেক পরিকল্পনা করছি। উৎপাদনকে আরও সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী করছে সরকার। নীতি-সহায়তার পাশাপাশি নিত্যনতুন প্রযুক্তি দিয়ে খামারিদের সহায়তা করা হচ্ছে। কেউ কাউকে অভিযুক্ত না করে সমন্বিতভাবে প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকেও বড় ভূমিকা রাখতে হবে। প্রাণিসম্পদ খাতের সম্ভাবনার পাশাপাশি সমস্যার কথা গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে এলে সেটি সরকারের জন্য সহায়ক হবে। ব্রয়লার মুরগি-ডিম যে নিরাপদ খাবার, সেটি আমরা অধিদপ্তর থেকে প্রচারণা চালাচ্ছি। আমিষের ন্যায্যতা নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। সবাইকে সবার নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। মানুষের কল্যাণ ও মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
ড. খালেদা ইসলাম
দেশে গ্রামাঞ্চলে ৫০% মানুষের প্রোটিনের চাহিদা এখনও পূরণ হয়নি। প্রোটিন আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রোটিনের অভাব হলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। প্রোটিনের মূল উৎস প্রাণী থেকে আসে। এখানে দারিদ্র্যের পাশাপাশি জ্ঞানেরও অভাব আছে। অনেকে না জানার কারণে প্রোটিনের জন্য টাকা খরচ করতে চান না। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি কিলো ওজনের জন্য এক গ্রাম হিসেবে প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ অনেক বেশি। মুখরোচক খাবার নয়, বরং সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর খাবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদি খাবার প্রোটিনের ভালো উৎস। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ব্রয়লার মুরগির মাংসই
বেশি পছন্দ করে। তা ছাড়া ব্রয়লার মুরগির মাংস দিয়ে যত পদের মজাদার খাবার তৈরি করা যায়, অন্য কিছু দিয়ে হয়তো তা সম্ভব নয়।
প্রাণিজ আমিষের প্রধান কয়েকটি উৎস হলো ডিম, মাংস, মাছ, দুধ ও দুধজাতীয় খাদ্য। আমাদের দেশে সাধারণত মাংসের উৎস হচ্ছে- গরু, মহিষ, ছাগল ও মুরগি। পশুর মাংসকে অধিকাংশ সময়েই সম্পূর্ণ প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক ও ভিটামিন-বি এর ভালো উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। রেড মিট বা লাল মাংস- প্রোটিন, ফ্যাট ও শক্তির অন্যতম উৎস হলেও এর অধিকাংশ ফ্যাট সম্পৃক্ত শ্রেণির যেখানে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিডের মাত্রা কম থাকে এবং এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। মুরগির মাংস এ ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম। এতে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমাণ কম থাকে এবং এই চর্বি অসম্পৃক্ত শ্রেণির, যা আমাদের দেহের জন্য উপকারী।
দীর্ঘদিন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হার্টের সুরক্ষার জন্য মুরগির মাংস খুবই উপকারী। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৭২ গ্রামের রান্না করা মুরগির বুকের মাংসে ৫৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে; কিন্তু ১৭২ গ্রামের রান্না করা গরুর মাংসে ৪২ গ্রাম প্রোটিন থাকে। আসলে মুরগির মাংস (হোয়াইট মিট) থেকে লাল মাংসে (রেড মিট), আমিষের তুলনায় চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। মাছ থেকে আমরা প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও বি ভিটামিন পাই। দেশের বাজারে সাধারণত মুরগি ও হাঁসের ডিমই বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে ডিম হলো উৎকৃষ্ট উৎস ও সহজলভ্য। ডিমে ১০০ শতাংশ জৈবিক মান রয়েছে। সম্পূর্ণ প্রোটিন ও ভিটামিন বি ও ডি এর ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। ডিমের কুসুমে চর্বি ও আয়রন পাওয়া যায়। অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে ডিমের কুসুম কখনোই বাদ দেওয়া উচিত নয়। ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলোর পাশাপাশি পথ্য হিসেবে ডিমের কুসুম খাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
ড. শেখ মুসলিমা মুন
দেশের পোলট্রি শিল্পে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ আছে। আমাদের মা ও নানিরা পশু সম্পদ প্রতিপালনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন; কিন্তু অনেক সময় পুষ্টিকর খাবারের বিষয়ে বৈষম্য রয়েছে। আছে অসচেতনতা ও কুসংস্কার। ছেলেদের জন্য মাছের বড় মাথা থাকলেও মেয়েদের জন্য থাকে না। আবার দুধ-ডিমের ক্ষেত্রেও একই রকম বৈষম্য আছে। মেয়েদের কখন, কী খাবার প্রয়োজন কতটুকু, তাও আমরা জানি না। মাসিক কিংবা গর্ভকালে মেয়েদের বেশি পরিমাণে প্রোটিন খেতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সমাজ মেয়েদের অনেকভাবে বঞ্চিত করে। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। মেয়েদেরও জিততে হলে প্রোটিন দিতে হবে। অধিকারে সমতা আনতে হবে। পুরুষদের সচেতন হতে হবে এবং মেয়েদের সব ক্ষেত্রে সহায়তা করতে হবে।
মসিউর রহমান
আমরা সস্তায় নিরাপদ প্রোটিন দিতে চেষ্টা করেছি। আমরা আমাদের ফার্মিং ডিজাইন চেঞ্জ করেছি। এখন মাঝেমধ্যে শোনা যায়, ডিমের দাম বেড়ে গেছে- মাংসের দাম বেড়ে গেছে। কোন জিনিসের দাম বাড়েনি? কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সরকারের যত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে, সেখানে মূলত ডেইরি ও মৎস্য খাতই প্রাধান্য পেয়েছে অথচ আমিষের চাহিদা পূরণে ৪০-৫০ শতাংশ অবদানই পোলট্রি খাতের।
আমরা মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে যুক্ত হতে যাচ্ছি। সামনে এগোতে হলে আমাদের দরকার সুস্থ, কর্মক্ষম এবং মেধাবী জাতি। সে জন্য প্রোটিন ইনটেক বাড়াতে হবে এবং প্রাণিজ প্রোটিনের ইনটেক অন্তত দ্বিগুণ করতে হবে। আমাদের দেশে মুরগির ডিম ও মাংসই হচ্ছে সবচেয়ে সস্তা প্রাণিজ আমিষ। ২০২১, ২০২৫ কিংবা ২০৪১ সালে পোলট্রির ওপর নির্ভরশীলতা আরও বাড়বে। তাই এ শিল্পের ওপর আরও বেশি নজর দিতে হবে। পোলট্রির ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও নির্ভরশীলতা বেড়েছে। কারণ তুলনামূলক কম দামে এ খাতটি উন্নতমানের প্রাণিজ আমিষ সরবরাহ করে আসছে। উৎপাদন খরচ কমিয়ে কীভাবে আরও সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ও মুরগি ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যায়, সে চেষ্টাই আমরা করছি। সরকার আন্তরিকভাবেই সহযোগিতা করছে; তবে তা আরও বাড়াতে হবে। এমন কোনো কিছু করা ঠিক হবে না, যাতে খামারি ও সরবরাহকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। আমরা সবাই এখন একটি সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। কাঁচামালের দাম কমলে, ডলারের দর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে পরিস্থিতি আপনা-আপনি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে হবে; অন্যদিকে পুষ্টিকর খাদ্য ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের উৎপাদন ব্যবস্থাকে সচল রাখতে হবে। অন্যথায় ভয়াবহ খাদ্য ও পুষ্টি সংকটে পড়বে দেশ। প্রচুর মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। সংকটকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারসহ সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিতে আমরা সব চেষ্টাই করছি। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিসহ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ডিম ও মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে; কিন্তু এখনও আমরা ভোক্তার হাতে সস্তায় পণ্য তুলে দিচ্ছি। এ বিষয়ে সবাইকে যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
মোজাম্মেল হোসেন
পোলট্রি, ডেইরি ও মৎস্য খাত এ দেশে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে। দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রাণিজ আমিষের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। এ খাতের প্রসার ও প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিতে সমকাল সচেষ্ট আছে। আমাদের দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন সময়সাপেক্ষ একটি কাজ। এ জন্য পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিকে সিরিয়াসলি কাজ করতে হবে। দেশের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম, দুধ, মাংস দিতে হবে। যেহেতু এই শিল্পটি বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়নে বড় ভূমিকা রেখেছে, তাই সরকারের উচিত এ শিল্পকে সহায়তা প্রদান করা।
ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক
পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়নে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হলে আমাদের প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রাণিসম্পদের মাধ্যমে আমরা দেশের জনগণের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারছি। ক্ষুধা দূরীকরণ, দারিদ্র্যমুক্ত জাতি গঠন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিতকরণের মতো লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে প্রাণিসম্পদ সরাসরি সম্পৃক্ত। খাবার নিয়ে অনেক ভুল বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। ডিম ও দুধের চেয়ে আর কোনো খাবারে এত প্রোটিন নেই। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা দরকার। অনেক সময় বয়স বাড়ার পর প্রোটিন বেশি খাওয়ানো হয়। ১০-১৯ বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রোটিন গ্রহণ করা হলে অধিক উপকার পাওয়া যায়। দারিদ্র্যের কারণে অনেক মানুষ প্রোটিন গ্রহণ করতে পারে না। আবার অনেক সময় টাকা-পয়সা থাকলেও প্রোটিন নিয়ে অনেকে সচেতন নন। এ ছাড়া আমিষ আর নিরামিষ নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। যাঁরা কেবল শাকসবজি খেয়ে জীবনযাপন করেন, তাঁদের বলা হয় ভেজিটেরিয়ান। কিন্তু 'ভেগান' শব্দটির সঙ্গে অনেকেরই পরিচয় নেই। ভেগান ও ভেজিটেরিয়ানরা উভয়ই নিরামিষাশী হলেও তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে। ভেজিটেরিয়ানরা মাছ-মাংস না খেলেও তাঁদের খাদ্যতালিকায় দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য, মধু, ডিম এবং বিভিন্ন প্রাণিজ দ্রব্য থাকে।
আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান
প্রোটিনের অধিকার সবাইকে পেতে হবে; কিন্তু সবাই পাচ্ছে না। অধিকার আদায়ে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি; কিন্তু আমরা বড় সংকটের মধ্যে দিন পার করছি। কভিড মহামারির ধকল যখন কিছুটা সহনীয় হতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ফিড তৈরির কাঁচামালের দাম হু-হু করে বাড়তে থাকে। যেহেতু ফিড তৈরির অত্যাবশ্যকীয় কাঁচামাল ভুট্টা, সয়াবিনসহ অধিকাংশ উপকরণই আমদানিনির্ভর; তাই কাঁচামালের দর বৃদ্ধি ছাড়াও জাহাজ ভাড়া ও ডলারের দর বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খাদ্য রপ্তানিকারক দেশগুলোও রপ্তানিতে মাঝেমধ্যেই রাশ টেনে ধরছেন। কাঁচামালের দর বৃদ্ধিতে ফিড মিলগুলোই যে শুধু বিপাকে পড়েছে, তাই নয়। ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের উৎপাদন চেইন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে; কিন্তু যখন দাম বাড়ে, তখন আমাদের দোষ দেওয়া হয়। আমাদের বলা হচ্ছে, আমরা নাকি সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বাড়িয়েছি। সিন্ডিকেট করার ক্ষমতা যদি আমাদের থাকত, তাহলে আমরা আরও আগে তা করলাম না কেন? আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এটা ঠিক না। উৎপাদন খরচ কম হলে উৎপাদন বাড়বে। তাহলে সবার প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত হবে। নেতিবাচক প্রচারণা বেশি হয় সত্য, তবে ইতিবাচক সংবাদকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের বাজার বড় হচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। তারা একটু একটু করে খেলেও মার্কেট আরও বড় হবে। ফলে এ সেক্টর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে।
দিবা ইয়ানুলিস
সুস্থ-সবলভাবে বাঁচতে হলে পর্যাপ্ত এবং মানসম্পন্ন প্রোটিন গ্রহণের বিকল্প নেই। শিশুর দৈহিক গঠন ও মেধার বিকাশে এবং প্রসূতি মায়েদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার। প্রোটিন ঘাটতির কারণে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, সে বিষয়েও সচেতন থাকা প্রয়োজন। খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে ভোক্তাদের এমনভাবে সমন্বয় ঘটাতে হবে, যেন নিরাপদ ও মানসম্পন্ন খাদ্য সবার জন্য সুলভ করা যায়।
মো. আহসানুজ্জামান
আমরা এখন লোকসান দিয়ে ব্যবসা করছি। ডিমের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে একটি গোষ্ঠী বলছে, একশ্রেণির ব্যবসায়ী নাকি হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। মিডিয়াও এটি ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা। এখানে কোনো সিন্ডিকেট হয়নি। আমরা খুবই কষ্টে আছি। সংবাদপত্রগুলো নেতিবাচক সংবাদ প্রচার না করে যেন সঠিক সংবাদ প্রকাশ করে- এটা আমাদের অনুরোধ। মুরগির ডিম উৎপাদনের মূল উৎস হলো খাবার; কিন্তু এই খাবারের দাম ৯০ শতাংশ বেড়ে গেছে। অন্য অনেক পণ্যে ভেজাল দেওয়া গেলেও মুরগিকে ভেজাল খাওয়ানো যায় না। ফিড তৈরিতে যে পরিমাণ খরচ হয়, তার প্রায় ৮০ শতাংশই হয় কাঁচামাল ক্রয়বাবদ; কিন্তু এই কাঁচামালের এখন অগ্নিমূল্য। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (ক্যাব) সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। কারণ ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের উৎপাদন খরচ বাড়লে তা সাধারণ ভোক্তাদের কাঁধে গিয়েই পড়বে।
ড. ইলিয়াস হোসেন
সুস্থ থাকতে ডিমের কোনো বিকল্প নেই। ২৫ গ্রাম প্রোটিন একজন মানুষের জন্য দৈনিক দরকার। ইলিশ দিয়ে প্রোটিন পূরণ করতে ১৩০ টাকা খরচ করতে হবে। দুধের জন্য ৬৫-৭০ টাকা। মাংসের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা লাগবে। ডিমে লাগবে ৪০-৫০ টাকা। ডিম খেলে মেধাবী জাতি গঠন হবে। আমাদের চাহিদা ও উৎপাদনে ফারাক আছে। তবে উৎপাদন বাড়াতে হলে অনেক সমস্যা হয়। স্কুল ফিডিংয়ে বাচ্চাদের জন্য একটি করে ডিম দেওয়া কেন হচ্ছে না। অ্যান্টিবায়োটিকের যথাযথ ব্যবহারের পাশাপাশি মুরগির জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে খামারিদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
কে বি এম সাইফুল ইসলাম
সঠিক ও নিরাপদ প্রোটিন আমাদের অধিকার। প্রোটিন সমভাবে বণ্টন করতে হবে। শরীরে পানির পরে সবচেয়ে দরকার প্রোটিন; কিন্তু আমরা অনেক সময় আন্তর্জাতিক মানের প্রোটিন সাপ্লাই দিতে পারছি না। প্রোটিনের অধিকার আদায়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের খাদ্যের মাঝে বৈচিত্র্য আনতে হবে। আমরা অনেক সময় পোলট্রি শিল্প নিয়ে নেগেটিভ প্রচারণায় সরব থাকি। ব্রয়লার মুরগি শরীরের জন্য ভালো নয়- এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমাদের মানসিকতার মধ্যে আছে লেয়ার মুরগি, ফার্মের দুধ-ডিম ভালো না। এ ভ্রান্ত ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। এমন বিভ্রান্তি দূর করতে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। প্রোটিনের অধিকার আদায়ে মিডিয়াকেও দাঁড়াতে হবে।
ড. আনোয়ারুল হক বেগ
প্রাণিজ প্রোটিন শরীরের জন্য খুবই জরুরি। ডিমের ভেতরে অজানা অনেক কিছু আছে, যা এখনও আবিস্কার হয়নি। এত সস্তা প্রোটিন আর কিছুতে নেই। ডিম আদর্শ খাবার। পৃথিবীতে কে নোবেল পুরস্কার পায়? নোবেল পুরস্কার পায় তারা, যারা দুধ ও ডিম বেশি খায়। এ কারণে আমেরিকা ও ইউরোপজুড়ে নোবেল পুরস্কার বেশি পাচ্ছে। আমাদের মাংস ও দুধের উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রোটিন আমাদের মেধার বিকাশের জন্য প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দরকার। প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে দরকার। সুতরাং প্রোটিন আমাদের অধিকার। প্রতিদিন খাবার টেবিলে যেন প্রোটিন থাকে। বর্তমানে ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ১১ টাকা ১১ পয়সা। কাজেই উৎপাদন ব্যয় না জেনে কথা বলা ঠিক না।
মনিরুল ইসলাম
প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিতে সব পক্ষের সঙ্গে সংযোগ দরকার। আমাদের কোনো কিছুর অভাব নেই; কিন্তু অনেক সময় আর্থিক সমস্যার কারণে অনেকে খেতে পারে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়। অনেক সময় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারকে অনিরাপদ বলে প্রচারণা চালানো হয়। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। ডিমের মতো এত সস্তা খাবার পৃথিবীতে আর নেই। খাবার নিরাপদ করতে উদ্যোক্তাদের বড় ভূমিকা আছে। প্রাণীকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়াতে হবে। আমাদের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
রুহিনা বিনতে এ গনি
১০ বছর ধরে আমি পুষ্টি নিয়ে কাজ করেছি। প্রোটিন গ্রহণে নারী-পুরুষের বৈষম্য এখন অনেকটা কমে এসেছে; কিন্তু প্রোটিন নিয়ে অনেকের জ্ঞান থাকলেও চর্চা নেই। একটি পরিবারে সবচেয়ে বেশি কাজ মায়েরাই করেন। সবাইকে দেওয়ার পরই মায়েরা খান। ফলে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে অনেক সময় মায়েরা পিছিয়ে থাকেন। অনেক সময় জ্ঞান থাকার পরও মায়েরা খান না। এ মুহূর্তে প্রোটিন নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোই জরুরি। আমরা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিষয়গুলো মানুষের দোরগোড়াই নিয়ে যাচ্ছি। খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও প্রোটিন নিরাপত্তায় পিছিয়ে আছে। আমরা ব্র্যাকের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করাসহ নানা রকম কাজ করছি।
খাবিবুর রহমান
আমরা ফুড ও ফিড সেক্টর নিয়ে কাজ করছি। সবার জন্য প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিতে আমরা বিভিন্ন দেশে টেকনিক্যাল সেমিনার, কর্মশালা ও সচেতনতামূলক কাজ করছি। পোলট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে রূপান্তরিত করে প্রাণিজ প্রোটিন উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রাণিখাদ্য উৎপাদনে অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ হচ্ছে সয়াবিন। ফিডে ব্যবহূত কাঁচামালে সয়াবিন সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রই মার্কেট লিডার। পুষ্টি চাহিদা পূরণে পোলট্রি অনেক বড় ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে অপুষ্টি দূরীকরণে এ খাতের অবদান অনুস্বীকার্য। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য পোলট্রি অনেকটাই আশীর্বাদস্বরূপ। ইউএসএসইসি চেষ্টা করছে স্বল্পমূল্যে সবার জন্য প্রোটিন কীভাবে নিশ্চিত করা যায়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অকৃত্রিম উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশের কৃষি খাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার
আমাদের এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়, যাতে হৃদযন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এটি খুবই জরুরি। মায়ের অপুষ্টিজনিত সমস্যা থাকলে সন্তানের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। প্রতিটি খাদ্য উপাদানের ভালো-মন্দ দুটো দিকই আছে। খাওয়া নিয়ে বাড়াবাড়ি থাকলেও এ সম্পর্কে জানার নেই কোনো আগ্রহ।
ডা. মো. তাহেরুল ইসলাম খান
অনেক সময় আমরা না জেনে প্রোটিন বেশি গ্রহণ করি। সেটাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমরা এত বেশি খাচ্ছি, তাতে আমাদের ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ নানা রোগ হচ্ছে। এ বিষয়গুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। প্রোটিন গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। বাড়াতে হবে সচেতনতা। সম্মিলিত উদ্যোগই পারে দেশের মানুষের প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত করতে।
গৌতম বি. মণ্ডল
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োচিত বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকের আলোচনায় প্রায় সবার কথায় উঠে এসেছে- আমাদের প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না, এটি নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে, সচেতনতার বিষয়ে অনেকে কথা বলেছেন। আমাদের সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হবে। প্রোটিন আমাদের শুধু অধিকার নয়, প্রোটিনকে নিরাপদ করতে হবে। নিরাপদ প্রোটিন আমাদের অধিকার, এটিই বরং বলতে হবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে, ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। প্রোটিন নিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। স্কুল ফিডিং আবার চালু করে, তাতে প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখতে হবে। ব্রয়লার মুরগির মান নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। আমরা সংকটকালে রয়েছি। ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, প্রাণিজ খাদ্যের দাম বেশি হওয়ার কারণে উদ্যোক্তারা চ্যালেঞ্জে আছেন। নীতিনির্ধারকরা নিশ্চয় বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবেন।
প্রধান অতিথি
ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা
মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর
আলোচক
মসিউর রহমান
সভাপতি, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)
ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক
পরিচালক (উৎপাদন)
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর
ডা. মো. তাহেরুল ইসলাম খান
পরিচালক
বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ
ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার
অধ্যাপক, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
ড. শেখ মুসলিমা মুন
উপসচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
ড. আনোয়ারুল হক বেগ
অধ্যাপক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
মনিরুল ইসলাম
সাবেক মেম্বার ডিরেক্টর
কৃষি গবেষণা কাউন্সিল
অধ্যাপক কে বি এম সাইফুল ইসলাম
চেয়ারম্যান, ডিপার্টমেন্ট অব মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ড. ইলিয়াস হোসেন
অধ্যাপক, পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
খাবিবুর রহমান
বাংলাদেশ প্রধান, ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি)
দিবা ইয়ানুলিস
হেড অব মার্কেটিং
সাউথ এশিয়া সাব-সাহারা
ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল
আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার
সিনিয়র সহসভাপতি
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
মো. আহসানুজ্জামান
সিনিয়র সহসভাপতি, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ
রুহিনা বিনতে এ গনি
কর্মসূচি ব্যবস্থাপক, ব্র্যাক
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক
ড. খালেদা ইসলাম
অধ্যাপক, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান
ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সভাপতি
মোজাম্মেল হোসেন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সমকাল
সঞ্চালনা
গৌতম বি. মণ্ডল
বার্তা সম্পাদক, সমকাল অনলাইন
অনুলিখন
জাহিদুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল
ইভেন্ট সমন্বয়
হাসান জাকির, সমকাল
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com