
শেয়ারবাজার
স্বেচ্ছায় তালিকাচ্যুতির প্রক্রিয়ায় আরও দুই কোম্পানি
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২২ । ০৮:৫৬ | আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২২ । ০৮:৫৬
সমকাল প্রতিবেদক

প্রতীকী ছবি
সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার কিনে শেয়ারবাজার থেকে চূড়ান্তভাবে তালিকাচ্যুত হওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে যশোর সিমেন্ট। সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার সাড়ে ৫৫ টাকা দরে কিনতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাতলুব আহমাদসহ কোম্পানিটির মূল মালিকপক্ষ ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই ও সিএসই) সঙ্গে চুক্তি করেছে। এ জন্য তাঁরা প্রায় ১৬ কোটি টাকাও জমা দিয়েছেন।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ঘোষিত 'এক্সিট প্ল্যান'-এর আওতায় কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে একেবারে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে আরবি টেক্সটাইল নামের কোম্পানি। এ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার ১০ টাকা দরে কেনার প্রস্তাব করেছেন। উভয় কোম্পানির অধুনালুপ্ত ওটিসি বাজারের শেয়ার ছিল। তবে এ প্রক্রিয়া প্রথম শুরু করে মূল শেয়ারবাজারের কোম্পানি বেক্সিমকো সিনথেটিক্স।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, যশোর সিমেন্ট ও আরবি টেক্সটাইলের বাইরে এক্সিট প্ল্যানের আওতায় আসছে বিডি জিপার, বিডি লাগেজ, বাংলাদেশ ডায়িং অ্যান্ড ফিনিশিং, বিডি প্লান্টেশন, হিল প্লান্টেশন ও আজিদ প্রিন্টার্স। এ ছয় কোম্পানির আবেদন এখন বিএসইসির বিবেচনাধীন।
মূলত যেসব কোম্পানি বছরের পর বছর বন্ধ বা লোকসান করছে বা এজিএম করছে না, শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারছে না- এমন কোম্পানিগুলোর সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার কিনে শেয়ারবাজার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগের নামই এক্সিট প্ল্যান। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর আইন করে এ সুযোগ করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এক্সিট নিতে পারে, এমন ২৯ কোম্পানির প্রাথমিক তালিকা গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করে সংস্থাটি।
এক্সিট প্ল্যানের আওতায় আগ্রহী ক্রেতাকে সংশ্নিষ্ট শেয়ারের অভিহিত বা আইপিও ইস্যু মূল্য বা সর্বশেষ লেনদেন মূল্য বা সর্বশেষ এক বছরের ওয়েটেড অ্যাভারেজ মূল্য বা শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএবি)-এর মধ্যে যে মূল্যটি সবচেয়ে বেশি, সে দরে কিনতে হবে। টানা দুই বছর বন্ধ বা লোকসান থাকলে বা সম্পদমূল্যের থেকে দায় বেড়ে গেলে ওই কোম্পানি এক্সিট প্ল্যানের আওতায় আসতে পারবে।
ঘোষিত এক্সিট প্ল্যান অনুযায়ী, যশোর সিমেন্ট কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৪৮ লাখ শেয়ারের মধ্যে অর্ধেকটা বা ২৪ লাখ শেয়ার রয়েছে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। এর অর্ধেক শেয়ারহোল্ডারের খোঁজ আছে। সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার কিনবেন কোম্পানির চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মারিব আহমেদ এবং নিটল মোটরস।
অন্যদিকে আরবি টেক্সটাইলের মোট শেয়ার ৪৩ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার মাত্র ১৪ হাজার ২০টি, যাদের কোনো খোঁজ নেই। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এই পুরো শেয়ার ১ লাখ ৪০ হাজার ২০০ টাকায় কেনার প্রস্তাব করেছেন।
ডিএসইর কর্মকর্তারা জানান, নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে এ দুই কোম্পানির শেয়ার জমা দিতে হবে আগামী দুই বছরের মধ্যে। কেউ এ সুযোগ না নিলে তিনি সংশ্নিষ্ট কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার থাকবেন। এ বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের দায় থাকবে না। শেয়ার সার্টিফিকেট নষ্ট বা হারিয়ে গেলে সংশ্নিষ্ট শেয়ারহোল্ডার বা তাঁর উত্তরাধিকারীদের উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে কোম্পানির মাধ্যমে ফের শেয়ার সার্টিফিকেট ইস্যু করতে হবে। এরপর ওই শেয়ার জমা দিয়ে টাকা নেওয়া যাবে।
এক্সিট প্ল্যানের আওতায় বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার ঘটনাকে দেশের শেয়ারবাজারের প্রেক্ষাপটে অভূতপূর্ব এক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার। তিনি বলেন, এতদিন এসব কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা না পাচ্ছিলেন লভ্যাংশ, না শেয়ার বিক্রির সুযোগ। এক্সিট প্ল্যান তাঁদের বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার সুযোগ করে দিল।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com