
বেসরকারি খাতের উন্নয়নে দরকার স্থায়িত্বের কৌশল
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সংলাপে বক্তারা
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২২ । ০৯:৫৩ | আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২২ । ০৯:৫৩
সমকাল প্রতিবেদক

প্রতীকী ছবি
বেসরকারি খাতের উন্নয়নে স্থায়িত্বের কৌশল বা সাসটেইনেবিলিটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি মডেল। এই মডেল অনুসরণে দীর্ঘমেয়াদে মুনাফা আসে ব্যবসা কার্যক্রমে। বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে সাসটেইনেবিলিটি। এর মাধ্যমে ব্যবসা কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদে মুনাফা বাড়াবে। এটি পরিবেশের সুরক্ষা দেবে। ঘনায়মান মন্দা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের এ মুহূর্তে শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে সাসটেইনেবিলিটির চর্চা।
'বাংলাদেশের ব্যক্তি খাতের সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং: প্রত্যাশা ও অভিজ্ঞতা' শিরোনামে এক সংলাপে শনিবার এসব কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ এবং বিশিষ্টজন। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে এই সংলাপের আয়োজন করে। ইউনাইটেড ন্যাশন্স ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ এবং ইউনাইটেড ন্যাশন্স এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম পোভার্টি-এনভায়রনমেন্ট অ্যাকশন সংলাপ আয়োজনে সহযোগিতা দিয়েছে। সংলাপে শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বিভিন্ন করপোরেট হাউসের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, সাসটেইনেবিলিটির মাধ্যমে বেসরকারি খাত এমনভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যেখানে স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি দায় তৈরি না হয়। বেসরকারি খাত স্বপ্রণোদিত হয়ে পরিবেশ, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সুশাসনের মতো বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রতিবেদন দিয়ে থাকে। আন্তর্জাতিকভাবে সাসটেইনেবিলিটির চর্চা থাকলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি তুলনামূলক নতুন।
সংলাপ সঞ্চালনা করেন গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো এবং নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের উত্তরণের প্রক্রিয়ার এ মুহূর্তে অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে সাসটেইনেবিলিটি। ব্যবসা কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদে মুনাফা বাড়াবে। বিষয়টিকে এখনই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা না হলে এক পর্যায়ে হয়তো চাপের ফলে বাস্তবায়ন করতে হবে। তখন নিজেদের মতো করে করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, সাসটেইনেবিলিটিকে কার্যকর করার জন্য একে এসডিজির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। আলাদা আইন করতে হবে। আগামীতে সাসটেইনেবিলিটি বাজেট হতে হবে। সমন্বিত প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। এ নিয়ে সংশ্নিষ্টদের মধ্যে অবহেলা আছে। তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায়ও ব্যর্থতা আছে। এ কারণে বিষয়টিকে ধারণ এবং উৎসাহিত করার জন্য প্রস্তুতি নেই।
সংলাপের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পোশাক রপ্তানিতে মোট মূল্যের ৮০ শতাংশই যায় মধ্যস্বত্বভোগীর পকেটে। মাত্র ২০ শতাংশ পায় বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, অনেক কারখানায় এখনও বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই। যেসব কারখানায় আছে সেগুলোতেও নিয়মিত ব্যবহার হয় না। কারণ ইটিপি ব্যবহার প্রতিদিনকার ব্যয় হয় গড়ে এক লাখ টাকা। কোনো কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শনে দোষী সাব্যস্ত হলে মাত্র দুই হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়। জরিমানা দেওয়াই লাভজনক। কারণ, বেসরকারি খাতের কাছে মুনাফাই শেষ কথা। তবে স্থায়িত্বের কৌশল নেওয়া হলে মুনাফা আরও বেশি হয়।
বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, সাসটেইনিবেলিটি রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে আমলতান্ত্রিক জটিলতা এড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিবর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে রিপোর্ট করার সুযোগ থাকা উচিত।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) সহসভাপতি এম এস সিদ্দিকী বলেন, বিদেশি ব্র্যান্ড ক্রেতারা সাসটেইনেবিলিটি এবং পরিবেশ নিয়ে অনেক কথা বলেন, আবার আলোচনার টেবিলে দাম কম দেওয়ার চেষ্টা করেন। এভাবে সাসটেইনেবিলিটি সম্ভব নয়।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com