শেষ হলো আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্মেলন

শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ বেকারত্ব-নিরক্ষরতা

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২২ । ২২:০১ | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২২ । ২২:০১

সমকাল প্রতিবেদক

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত দু'দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। দিনভর অনুষ্ঠিত পৃথক সেশনে একাধিক আলোচনায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা যেন বাংলাদেশ পেতে পারে, তার কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এতে বিশেষজ্ঞ আলোচকরা বলেন, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে হবে। আমাদের মজুত প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে আর বছর দশেক চলবে। তাই গ্যাসের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। বেকারত্ব মোচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। তবে শিল্পবিপ্লবের সুবিধা পেতে বেকারত্ব ও নিরক্ষরতা বড় চ্যালেঞ্জ। আলোচকরা রাজনৈতিক অস্থিরতা, চাকরির বাজারের অস্থিরতা, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুনাজ আহমেদ নূর এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

আবদুস সবুর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে উপমহাদেশে প্রথম কোনো রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটি প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছে, যা যে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আওয়ামী লীগ শুধু মাঠে মিছিল সভা নিয়ে ব্যস্ত থাকে না। গবেষণা ও সৃজনশীল কাজও করে থাকে।

সম্মেলনের তৃতীয় এবং সমাপনী দিনের প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার। এর পর ১০টি আলাদা ভেন্যুতে ৭০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। দুপুর আড়াইটায় চতুর্থ এবং শেষ মূল প্রবন্ধ করেন আইইইর ইতিহাসের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট ড. সাইফুর রহমান। এরপর পৃথক ১০টি ভেন্যুতে ৭৩টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন গবেষকরা। দু'দিনব্যাপী এই সম্মেলনে প্রায় ২৫২টি গবেষণাপত্র উপস্থাপিত হয়েছে। এসব গবেষণাপত্র থেকে যেসব সুপারিশ আসবে, সেগুলো আওয়ামী লীগের দপ্তর সেল এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটি।

শনিবার সকালের প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে 'চতুর্থ শিল্পবিপ্লব; বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জসমূহ' শীর্ষক মূল প্রবন্ধে বুয়েট উপাচার্য বলেন, নানা কারণে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা পেতে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। আবার বেশকিছু চ্যালেঞ্জও আছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের সুবিধা বাংলাদেশ নিতে পারে। গত কয়েক দশকে শিক্ষা, গবেষণা, অবকাঠামো, শিল্পায়ন প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়েছে। স্মার্ট কৃষিব্যবস্থা, শহর ও নৌবন্দর গড়ে উঠেছে। তবে কর্মসংস্থানের চ্যলেঞ্জ আছে। আমাদের এখানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন এবং রোবোটিপ তথা শিল্প রোবটের সুবিধা এখানে নেই।

অপর এক সেশনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) উদ্যোগ তুলে ধরেন এর চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়েছে। ২০২২ সালের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেপে ১৬০টি দেশের মধ্যে ৩৪তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বোচ্চ। আইটিইউ গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেপ র‌্যাঙ্কিং (জিসিআই) এ ১৮২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৩তম।

তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ মোল্লা বলেন, গ্যাসের দক্ষ ব্যবহার ও গ্যাস সঞ্চয়ের জন্য সুযোগ দরকার। সরকারি হিসাবে আমাদের হাতে ১০ টিসিএফ গ্যাস মজুত আছে। প্রতিবছর আমাদের লাগে এক টিসিএফ। সেই হিসাবে আরও ১০ বছরের গ্যাস আমাদের মজুত আছে। সঠিক লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com