
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষত
'বইন্নায় রাস্তাডা ভাঙছে অ্যাহন কামাই বন্ধ'
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২২ । ১১:৫৩ | প্রিন্ট সংস্করণ
জিতেন্দ্র নাথ রায়, বাউফল (পটুয়াখালী)

ছবি: ফাইল
'মুই রিকশা চালাইয়া যা পাই, হেই টাকা দিয়া সংসার চালাই। বইন্নায় রাস্তাডা ভাঙছে, অ্যাহন মোর কামাই বন্ধ। একটু ঠিক কইরা দিলে মোরা গাড়ি চালাইয়া খাইতাম।' কথাগুলো পটুয়াখালীর বাউফল এলাকার রিকশাচালক রফিক সর্দারের। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় তাঁর মতো আরও অনেকে বিপদে পড়েছেন। আয় বন্ধ হওয়ায় অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাউফলের নওমালা সড়কের অলিপুড়া এলাকায় সুরক্ষা দেয়াল ধসে পড়েছে। এতে একটি অটোরিকশাকে পাশ কাটাতে গিয়ে উল্টে যায় অটোরিকশা। যাত্রী ছিটকে পড়েন সড়কের পাশে। এ সময় সড়কে অটোরিকশা, টমটম ও হোন্ডা আটকে পড়ায় সড়কে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সুরক্ষা দেয়াল ধসে পড়ায় সড়কটি সংকুচিত হয়ে গেছে।
সিত্রাংয়ের কারণে উপজেলার কেশবপুর, কালাইয়া, চন্দ্রদ্বীপ, ধুলিয়া, কাছিপাড়াসহ প্রায় সবক'টি ইউনিয়নে সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে উপজেলা বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নাজিরপুরের জিসি সড়কের বেশ কিছু অংশের পাথর, বিটুমিন ও খোয়া উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। ধুলিয়া-কেশবপুর সড়কের কালামিয়ার বাজারের পশ্চিমে জোয়ারের তোড়ে প্রায় ৫০ ফুটজুড়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।
বাউফল-লোহালিয়া সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, পেট চালাতে সড়কে নেমে যাত্রীদের গালাগাল শুনতে হচ্ছে। পৌরসভার মধ্যে প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কে কার্পেটিংয়ের জন্য খোয়া ফেলে রেখেছে। তবে রোলার না দেওয়ায় ধুলোবালিতে যাত্রীরা অতিষ্ঠ। ভাঙাচোরায় ঝাঁকুনি খেলে যাত্রীরা গালি দেয়।
কেশবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন পিকু বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাঁর এলাকার ৬-৭টি পাকা সড়কে খানাখন্দ রয়েছে। সদর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, পটুয়াখালীর সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বাউফল-অলিপুড়া-নওমালা-লোহালিয়া সড়কের পাশে দুটি গাছ উপড়ে পড়ে কার্পেটিংসহ সুরক্ষা দেয়াল নষ্ট হয়েছে। কিন্তু গাছটিও কাটছে না কর্তৃপক্ষ।
ধুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন দেওয়ান বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ১০-১২টি সড়কের বিভিন্ন অংশের কার্পেটিং, পাথর, ইট সরে গেছে। এসব পাকা সড়ক সংস্কার না হওয়ায় মানুষের খুবই কষ্ট হচ্ছে। তবে টমটম, রিকশা ও অটোচালকদেরও বেহাল দশা।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, সিত্রাংয়ের ক্ষত সারাতে জরুরি মেরামতের জন্য মাসিক উন্নয়ন সভায় উপজেলা প্রকৌশলীকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান আহম্মেদ বলেন, সিত্রাংয়ে বেশ কিছু পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে। তবে মেরামতের জন্য কোনো ফান্ড না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com