
চট্টগ্রামে সমকালের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি শিক্ষার মান
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২২ । ০১:২৬ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২২ । ০১:২৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো

সমকাল চট্টগ্রাম ব্যুরো আয়োজিত 'উচ্চ শিক্ষার মান: প্রেক্ষিত চট্টগ্রাম' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরা অংশ নেন। ছবি- মো. রাশেদ/সমকাল
দেশে একটার পর একটা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলেও শিক্ষার মান বাড়ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়ে উঠছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ঠিকাদারির আখড়া। বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে সনদ বিতরণের কেন্দ্রে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে জোর না দিলে উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হবে না।
মঙ্গলবার সকালে সমকাল চট্টগ্রাম ব্যুরো সম্মেলন কক্ষে 'উচ্চ শিক্ষার মান: প্রেক্ষিত চট্টগ্রাম' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরা এসব মতামত তুলে ধরেন।
সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খানের সভাপতিত্বে এবং সমকাল চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ সারোয়ার সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এতে তিনি শিক্ষা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অযোগ্য ব্যক্তির পদায়ন, রাজনৈতিক বিবেচনা ও নূ্যনতম শর্ত পূরণ ছাড়াই নিয়োগকে গুণগত শিক্ষার অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করেন।আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আবুল মোমেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইসমাইল খান, ইস্টডেল্টা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সিকান্দার খান, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চিটাগাংয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক জাহিদ হোসাইন শরীফ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক গণেশ চন্দ্র রায়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সুনীল ধর, সমকালের চিফ রিপোর্টার লোটন একরাম প্রমুখ।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'উচ্চ শিক্ষার মূল হলো গবেষণা। গবেষণা হয় না, পরিবেশ না থাকলে মানসম্মত শিক্ষা আসবে কীভাবে? যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করতে না পারায় মানও নিশ্চিত করা যায় না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারখানা নয় যে, কিছু পণ্য তৈরি করে বাজারে ছেড়ে দিলেই হলো।'
আবু সাঈদ খান বলেন, 'উচ্চ শিক্ষাকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে গলদ থাকলে উচ্চশিক্ষায় ভালো ফলাফল আশা করা যায় না। স্বাধীনতার পর শিক্ষার সুযোগ বাড়লেও মান বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।' আবুল মোমেন বলেন, 'একটি বাঘের লাগে পাঁচ বর্গকিলোমিটার বিচরণক্ষেত্র, তাহলে একটি শিশুর কতটুকু লাগা উচিত? এখন শিশুরা ফ্ল্যাটে বড় হচ্ছে। স্কুল কারাগার; কোচিং সেন্টার তো তাদের জন্য কনডেম সেল। একজন বন্দি মানুষ কী করে শিক্ষা গ্রহণ করবে?'
ইসমাইল খান প্রাথমিক পর্যায় থেকে শিক্ষার মান নিশ্চিতে জোর দেন। অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম প্রতিটি জেলায় টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করার তাগিদ দেন। অধ্যাপক গণেশ চন্দ্র রায় শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমন্বয় চান। আলোচনায় লোটন একরাম চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় দুটি বিতর্কিত প্রশ্নপত্রের উদাহরণ টেনে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আবু সাঈদ খানের সঙ্গে সুহৃদ সমাবেশের মতবিনিময়: সমকাল সুহৃদ সমাবেশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর শাখার সদস্যদের সঙ্গে গতকাল মতবিনিময় করেছেন আবু সাঈদ খান। এ সময় সুহৃদের চবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক লায়লা খালেদা, মহানগর শাখার সভাপতি আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে সুহৃদ সমাবেশের সদস্যদের উদ্যোগে নাচ-গান ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান হয়।
এজেন্ট-হকারদের মতবিনিময়: সমকাল চট্টগ্রাম ব্যুরো কার্যালয়ে গতকাল সন্ধ্যায় উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খানের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সংবাদপত্র এজেন্ট-হকাররা। এ সময় বাংলাদেশ সংবাদপত্র এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আইয়ুব খান, সহসভাপতি আল হারুন, সংবাদপত্র এজেন্ট নজরুল ইসলাম (ইসহাক এজেন্ট), চট্টগ্রাম হকার্স সমিতির সভাপতি ইউসুফ আলী, সম্পাদক নজরুল ইসলাম লিটন, চট্টগ্রাম সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, সম্পাদক ওসমান গনি টিপু, সংবাদপত্র এজেন্ট কাজী আবদুর রহিম, মেসার্স নিউজ একাডেমির পরিচালক মরতুজা আলী সজীব, নিউজ পেপার এজেন্ট আল হারুনের ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম ত্বোহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com