ঢাকার সঙ্গে পিসিএ চায় ইইউ

সংলাপ বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২২ । ১০:৫৯ | প্রিন্ট সংস্করণ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তাই ঢাকার সঙ্গে অংশীদার ও সহযোগিতা চুক্তি বা পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) করতে চায় ব্রাসেলস। দুই পক্ষের আসন্ন প্রথম রাজনৈতিক সংলাপে ইইউর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার ইইউ দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকার ইইউ ডেলিগেশন প্রধান চার্লস হোয়াটলি সমকালকে বলেন, 'আসন্ন বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার অংশ হিসেবে পিসিএর প্রস্তাব করা হচ্ছে।'

আগামী বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার ইস্যুতে জোর দেবে ইইউ।

সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আর ইইউর পক্ষে সংস্থাটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এনরিকে মোরা। বৈঠকে যোগ দিতে আগামীকাল ঢাকা আসবে ইইউ প্রতিনিধি দল। ২৫ নভেম্বর তাদের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাদের।

ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে সুশাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার। ২০০১ সালে এ বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে দুই পক্ষ সহযোগিতা চুক্তি সই করে। ফলে তিনটি বিষয়কে ভিত্তি ধরেই দুই পক্ষের যে কোনো আলোচনা হয়ে থাকে। এবার সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে চায় সংস্থাটি। আর পিসিএর মূল ভিত্তি হচ্ছে জাতিসংঘের সনদ ও নীতিগুলো মেনে চলা। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার মেনে চলার ওপর ভিত্তি করে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায় ইইউ।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে পিসিএ রয়েছে ইইউর। এ চুক্তির আওতায় দেশগুলোর সঙ্গে বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি পরিবেশ, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাণিজ্য, কর্মসংস্থান, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, শিক্ষা, কৃষি, জঙ্গিবাদ দমন, দুর্নীতি রোধ, সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন, অভিবাসন এবং সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করে থাকে। দেশ ভেদে আলোচনার বিষয়বস্তুতে সংযোজন-বিয়োজন রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, পিসিএ চুক্তিটি দুই পক্ষের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও বড় আকারে করার প্ল্যাটফর্ম দেবে। এতে সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে সম্পর্ক বাড়াতে পারবে ঢাকা-ব্রাসেলস।

দুই পক্ষের সম্পর্ক আরও আইনি ভিত্তি পাবে।

চার্লস হোয়াটলি সমকালকে বলেন, প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটি দুই পক্ষের উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ। এতে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়াদি স্থান পাবে।

জানা গেছে, সংলাপে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানে জোর থাকবে ব্রাসেলসের পক্ষ থেকে।

২০২১ সালের অক্টোবরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ব্রাসেলস সফরের সময় ইইউর সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর দুটি বৈঠক হয়। একটি হচ্ছে জয়েন্ট কমিশন এবং অপরটি কূটনৈতিক কনসালটেশন।

রাজনৈতিক সংলাপে বহুপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় প্রাধান্য পাবে। বিশেষ করে বিভিন্ন বিষয়ে দুই পক্ষের কৌশলগত অবস্থান আলোচিত হবে। এতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে কৌশল, জঙ্গিবাদ দমন, প্রতিরক্ষা, শান্তি রক্ষা ও সংকটে সাড়াদান, কানেকটিভিটি, রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি, ইউক্রেন সংকট, ইউক্রেন সংকটের ফলে প্রভাব, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম, জলবায়ু, মানবাধিকারসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে ঢাকা ও ব্রাসেলস নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরবে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com