মৌলভীবাজারে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারে ফলন বেশি, খরচ কম

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২২ । ১২:১৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের আজমেরু এলাকায় এক মেশিনে ধান কাটা-মাড়াই করছেন কৃষক-সমকাল

মৌলভীবাজারে কৃষি খামারে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের ফলে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে একদিকে যেমন কমছে শ্রমজীবী মানুষের ওপর নির্ভরশীলতা, অন্যদিকে বেড়েছে উৎপাদন। তাই দিন দিন কৃষি খাতে কারিগরি বিষয়ে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা বাড়ছে। আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের ফলে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।


সদর উপজেলার আজমেরু এলাকায় পাতাকুঁড়ি এগ্রোর সহযোগিতায় খামার যান্ত্রিকীকরণের আওতায় আমনের চারা রোপণের পর কাটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় গত ২২ নভেম্বর। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কৃষকদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ প্রমুখ।


খামার যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোক্তা এস এম উমেদ আলী জানান, এ বছর নিজস্ব ১২৩ বিঘা জমিতে হাইব্রিড ব্রি ৭৫ জাতের ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে ৮৩ বিঘায় রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার দিয়ে চারা রোপণ করা হয়েছিল। এখন ওই জমির ধান কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে কাটা হচ্ছে। ধান কাটা, মাড়াই ও চিটা ঝাড়াই এক মেশিনে একসঙ্গে হয়ে যায়। এতে শ্রমিক কম লাগে। ফলে কৃষি উৎপাদনে খরচ কম হয়। তিনি আরও জানান, হাইব্রিড ধানের ফলন ভালো হয়। তবে প্রতি কেজি বীজ ৩০০-৪৩০ টাকায় কিনতে হয়। যে বীজ বিএডিসি থেকে ৬০-৬৫ টাকায় কেনা সম্ভব। তাই সরকারিভাবে হাইব্রিড বীজ উৎপাদন ও প্রান্তিক কৃষক পর্যায়ে পর্যাপ্ত বীজ সরবরাহের দাবি জানান তিনি।


উপকারভোগী কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার মেশিনে কম বয়সী চারা রোপণ করা যায়। এতে ফলনও ভালো হয়। আগে যে জমিতে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান উৎপাদন হতো। এখন ওই জমিতে ২২-২৪ মণ উৎপাদন হয়। শ্রমিকরা কাজ করতে অনাগ্রহী হওয়ায় বেশি দামে শ্রমিক সংগ্রহ করায় খরচ বেশি হতো। যান্ত্রিকীকরণের ফলে সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব হচ্ছে বলে জানান, সদর উপজেলার শেরপুর গ্রামের কৃষক মুস্তাকীম মিয়া।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ জানান, অনুকূল পরিবেশ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে প্রতি বছর অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ বৃদ্ধি ও ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে চাষিরা খুশি। এ বছর জেলায় আমন ধানের চাষাবাদে জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৪০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৬০০ হেক্টরে। সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টন।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com