দূরের সাহিত্য

না ফেরার দেশে 'সিটি অব জয়'-এর স্রষ্টা

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২২ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

--

দমিনিক লাপিয়ের [৩০ জুলাই ১৯৩১-৪ ডিসেম্বর ২০২২]

ফরাসি লেখক দমিনিক লাপিয়ের চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ৪ ডিসেম্বর (রোববার) তাঁর স্ত্রী দমিনিক কশঁ-লাপিয়ের ফরাসি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে ৯১ বছর বয়সে মৃত্যু হয় বিখ্যাত এ ঔপন্যাসিকের।

দমিনিক লাপিয়ের ১৯৩১ সালের ৩০ জুলাই ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলের সমুদ্রতীরবর্তী শাতেলেইলন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মার্কিন লেখক ল্যারি কলিন্সের সঙ্গে যৌথভাবে তাঁর লেখা ছয়টি বই সারাবিশ্বে প্রায় পাঁচ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত 'ইজ প্যারিস বার্নিং?' ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত এ নন-ফিকশন বইটিতে ১৯৪৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ঘটনাবলি বর্ণনা করা হয়। এটা সে সময় যখন নাৎসি জার্মানি ফরাসি রাজধানী প্যারিস ধ্বংসে মেতে ওঠে। ১৯৬৬ সালে প্রখ্যাত ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক রেনে ক্লেমেন্ট বইটিকে চলচিত্রে রূপ দেন। পরে লাপিয়ের-কলিন্স জুটি 'অর আই উইল ড্রেস ইউ ইন মোনিং' (১৯৬৮), 'ও জেরুজালেম' (১৯৭২), 'ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট' (১৯৭৫), 'দ্য ফিফথ হর্সম্যান' (১৯৮০) ও 'ইজ নিউ ইয়র্ক বার্নিং?'-এর মতো সাহিত্য রচনা করেছেন।

লাপিয়ের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত উপন্যাস লিখেছেন। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ টান। কলকাতাকে নিয়ে লেখা 'সিটি অব জয়' উপন্যাসটি যেমন বহু পাঠকের প্রিয়, তেমনি পছন্দ হয়নি অনেকের। মূলত এ উপন্যাসের কারণে তিনি উপমহাদেশের পাঠকদের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯৮৫ সালে ভারতের কলকাতা শহরের এক রিকশাচালকের কষ্টের জীবন নিয়ে 'সিটি অব জয়' উপন্যাসটি লেখেন লাপিয়ের। নগরীতে বসবাস করা মানুষের এক ভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল এ উপন্যাসে। এ উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯২ সালে বিখ্যাত ব্রিটিশ পরিচালক ও প্রযোজক রোনাল্ড জোফে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। লাপিয়ের এ বইটি থেকে পাওয়া রয়্যালটির অর্থ ভারতে মানবিক সহায়তা প্রকল্পের জন্য দান করেছিলেন। তাঁর এ বদান্যতার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ভারত সরকার ২০০৮ সালে তাকে 'পদ্মভূষণ' পদক প্রদান করে।

ল্যাপিয়েরের ভক্তরা তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় ভারতে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লেনাইন লিখেছেন, 'বিশিষ্ট ফরাসি লেখক দমিনিক লাপিয়েরের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত, যিনি সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য ভারতের পদ্মভূষণে ভূষিত হয়েছিলেন। 'দ্য সিটি অব জয়' হিসেবে কলকাতাকে নিয়ে তাঁর বর্ণনা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল গেঁথে থাকবে।'

রাজনীতিবিদ সঞ্জয় কুমার ঝা টুইট করেছেন, 'কলমই ছিল তাঁর শক্তি। তিনি লাখো মানুষের হৃদয়ে রাজত্ব করেছেন, তাঁর মহাকাব্যিক কাজের মধ্য দিয়ে অনেক সংগ্রামের ছোঁয়া পাওয়া যায়। যেমন- ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট, সিটি অব জয় এবং ইজ প্যারিস বার্নিং। তিনি শান্তিতে থাকুক। ওম শান্তি।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com