শাহজালালে এ মাসেই চালু ডিজিটাল নিরাপত্তা পাস

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২২ । ১২:১২ | প্রিন্ট সংস্করণ

শহিদুল আলম

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের লক্ষ্যে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নতুন নীতিমালায় যুক্ত হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে আধুনিক (ডিজিটাল) নিরাপত্তা পাস ব্যবহার। এরই মধ্যে নতুন পাস অনুমোদন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়নে বাতিল করা হবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে আগে ইস্যু করা ১০ হাজারের বেশি পাস। চলতি মাসেই আধুনিক পাসের কার্যক্রম উদ্বোধন হবে বলে সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সমকালকে জানান, মূলত উন্নত যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিমানবন্দরে নতুন ডিজিটাল অ্যাক্সেস কন্ট্রোল ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার স্থাপন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, বোর্ডিং কার্ড ইস্যু কাউন্টারসহ বিমানবন্দরের বিভিন্ন নিরাপত্তা গেট। চলতি মাসেই আধুনিক পাস উদ্বোধন হবে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, নতুন ব্যবস্থায় বিমানবন্দর আরও সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হবে। গত পাঁচ বছরে পাস গ্রহীতাদের তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা হয়েছে। নতুন নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ সাপেক্ষে বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের জন্য চিপ-সংবলিত নতুন ডিজিটাল পাস দেওয়া হবে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, প্রায় ১০ হাজার পাস বাইরে আছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একাধিক পাস নিয়ে রেখেছে। কখনও কখনও এর অপব্যবহারও হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া অন্যদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল পাসের ব্যবস্থা থাকে। নতুন নিয়মে পাস নিয়ে অনিয়ম ও অপব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।

বিমানবন্দর কর্মকর্তারা জানান, সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৩০টি এয়ারলাইন্সের জনবল কাজ করে বিমানবন্দরে। এ ছাড়া রয়েছে ব্যাংক, বীমা, হোটেল, রেস্তোরাঁ, কার পার্কিং, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদের প্রত্যেককেই নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের প্যাডে লিখিত দিয়ে নিরাপত্তা পাস নিতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় বিমানবন্দরের ইস্যুকৃত পাস হাতে পাওয়ার আগে পুলিশের ছাড়পত্র লাগে।

বিমানবন্দর গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এত নজরদারির পরও একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে পাস নিয়ে সংরক্ষিত বিমানবন্দর এলাকায় ঢুকে নানা অপকর্ম ঘটিয়ে সটকে পড়ে অপরাধীরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বহিরাগতরাও টাকার বিনিময়ে পেয়ে যায় নিরাপত্তা পাস।

অভিযোগ উঠেছে, এ পাস ব্যবহার করে চোরাচালানসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ হয়ে থাকে। এতে হুমকির মুখে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যমতে, প্রায়ই বিমানবন্দরে ধরা পড়ছে স্বর্ণসহ নানা অবৈধ পণ্যের চালান। এদের মধ্যে অনেকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

বেবিচকের কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় রয়েছে তাঁদের নিজস্ব জনবল। পাশাপাশি শক্তিশালী অ্যাভসেক, এপিবিএন, পুলিশ, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কর্মরত রয়েছেন। বিমানবন্দরে আগের চেয়ে অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য কমেছে বলেও মনে করেন তাঁরা।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com