বাধা হয়নি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২২ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দাবিয়ে রাখতে পারেনি। দুর্ঘটনার হাত-পা হারানোর পরও থেমে থাকেনি জীবন। নিজের চেষ্টা আর মনের জোরে হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা। তাঁর নাম আশেক আলী। তাঁর জীবনের গল্প শুনেছেন মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

২০০০ সালে মিঠাপুকুর ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন আশেক। রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামে তাঁর বাড়ি। ছয় ভাই- বোনের মধ্যে সবার ছোট। বাবা এলাহী মন্ডল বেঁচে নেই। স্থানীয় শাল্টিরহাট বাজারে 'আলিফ টেলিকম' নামে একটি দোকান ছিল তাঁর। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে সুখেই কাটছিল তাঁর দিনগুলো। তখন তিনি বিদ্যুতের লাইন মেরামতের কাজ করতেন।

২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ১১ হাজার কেভি হাইভোল্টেজ লাইন মেরামত করতে পোল-খুঁটিতে ওঠেন আশেক। সে সময় অনাকাঙ্ক্ষিত একটি দুর্ঘটনায় বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে তাঁর দুটি হাত ও একটি পা সম্পূর্ণ ঝলসে যায়। তিনি প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ঝুলে ছিলেন। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন আশেক। তাঁর শরীরে ৯ বার সার্জারি করা হয়। অবশেষে দুটি হাত ও একটি পা কেটে ফেলতে হয়।

অসুস্থ হওয়ার আগে ১০ শতাংশ জমি কিনেছিলেন আশেক; যা ছিল তাঁর স্ত্রীর নামে। কিছু অর্থও স্ত্রীর কাছে জমা রেখেছিলেন। নিজের পঙ্গুত্বের সঙ্গে যেন সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যায়। ভালোবাসার মানুষটি তাঁকে ছেড়ে যান। আশেক বলেন, 'এক পর্যায়ে নিজেকেই নিজে সান্ত্বনা দিই। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে।' মেজ ভাইয়ের ছেলে খাইরুলকে সঙ্গে নিয়ে আশেক স্থানীয় বাজারে একটি ইলেকট্রিক মালপত্রের দোকান দেন। এরই মধ্যে এক পা দিয়ে মোবাইল চালনা রপ্ত করেন। আরও টুকটাক কিছু কাজ শিখে ফেলেন। এ সময় তিনি হাতে পান 'নগদ' উদ্যোক্তার কাগজপত্র। এখান থেকেই বদলে গেল আশেকের সময়। শুরু হলো উদ্যোক্তা হিসেবে তাঁর নতুন যাত্রা। া

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com