
সরকারি প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত শহুরে কৃষক
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২২ । ০০:০০ | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২২ । ১৩:৩৭ | প্রিন্ট সংস্করণ
আহমেদ কুতুব, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মহানগরে পাঁচ বছর আগে ১১ হাজার কৃষক ছিলেন। এখন সেই সংখ্যা নেমে এসে দাঁড়িয়েছে চার হাজারে। প্রতিবছরই নগর কৃষকের সংখ্যা কমছে। সেই সঙ্গে সংকুচিত হয়ে আসছে নগর কৃষি সেক্টর। নগরে কৃষকের সংখ্যা কমার পেছনে একটি বড় কারণ সরকারি প্রণোদনা না পাওয়া। উপজেলা পর্যায়ের কৃষকরা বীজ, সারসহ সরকার থেকে প্রতিবছর ১২ থেকে ১৫ ধরনের প্রণোদনা পেয়ে থাকেন। তবে নগর কৃষকরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
চট্টগ্রাম জেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে হাইব্রিড বোরো ধানের উৎপাদন বাড়াতে ৪৮ হাজার কৃষককে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকার প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৯৬ হাজার টন বীজ ও সার দেওয়া হয়। তবে এসব প্রণোদনা শুধু পাচ্ছেন উপজেলা পর্যায়ের গ্রামের কৃষকরা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে রবি, খরিফ-১, খরিফ-২ ধানের উৎপাদন বাড়াতে চট্টগ্রাম জেলায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এতেও চট্টগ্রাম নগর কৃষকদের জন্য এক টাকাও বরাদ্দ নেই। একইভাবে উচ্চ ফলনশীল ধানের ফলন বাড়াতে জেলার ২৫ হাজার কৃষককে ১২৫ টন বীজসহ ১ কোটি ৫১ লাখ টাকার আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন উৎপাদনে বিনামূল্যে ৬৪ লাখ টাকার আর্থিক প্রণোদনা দেয় সরকার। নগর কৃষকরা তার কিছুই পাচ্ছেন না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান সমকালকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে যেসব কৃষক আছেন, তাঁরা সরকারের আর্থিক প্রণোদনা পান না।
নগরে সরকার সেই সুযোগ রাখেননি। তবে সরকার নগর কৃষি চালুর চিন্তা ভাবনা করছে। সেটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলার কৃষকদের মতো নগর কৃষকরাও নানা কৃষি সহায়তা ও প্রণোদনা পাবেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পাঁচলাইশ মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, তাঁর জোনে ১ হাজার ২০০ জন কৃষক রয়েছেন। এখানে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও ৬৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। এ ছাড়া সারাবছরই সব ধরনের ফসল ও সবজি চাষ করছেন নগর কৃষকরা। তাঁরা সরকারি প্রণোদনা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তবে রাজস্ব খাত থেকে খুবই সামান্য কিছু সহায়তা করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তাই নগর কৃষকের সংখ্যা প্রতিবছরই কমছে।
চট্টগ্রাম নগরে পাঁচলাইশ ছাড়া আরও দুটি মেট্রোপলিটন কৃষি অফিস রয়েছে। এর মধ্যে পতেঙ্গা ও ডবলমুরিং কৃষি অফিসের অধীনে যথাক্রমে ১ হাজার ২৭৫ ও ১ হাজার ৫২০ জন কৃষক রয়েছেন। তবে পাঁচ বছর আগে এ সংখ্যা দ্বিগুণ ছিল। তাঁরা বোরো, রবিসহ সব ধরনের ফসল চাষাবাদ করছেন।
২০২২-২৩ অর্থবছরের রবি মৌসুমে বোরো আবাদ বাড়াতে চট্টগ্রামে ৮০ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক কৃষককে ১০ কেজি ডিএপি, সমান পরিমাণ এমওপি ও ৫ কেজি উফশী জাতের বীজ দেওয়া হচ্ছে। এই খবরে নগর কৃষকদের মন খারাপ করা ছাড়া কিছুই করার নেই।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com