বড়লেখায় আশ্রয়ণের ঘর ভাঙার অভিযোগে প্রশাসনের মামলা

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২৩ । ২১:০১ | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২৩ । ২১:০১

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

ভেঙে পড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর - সমকাল

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের দরজা, জানালা, টিনের চালসহ আসবাব ভাঙচুর ও চুরির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন। এতে দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর গ্রামের বাসিন্দা মো. সাদিক, আবদুল মালিক, মো. রেজা ও জাসমিন বেগমকে আসামি করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর দাবি, মামলার এজাহারে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। এলাকার লোকজন ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের মামদনগরে (মোহাম্মদনগর) প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে থাকেন পারভীন নেছা। ওই এলাকার বাসিন্দা মো. সাদিক ও তাঁর বাবা আবদুল মালিক পারভীন নেছার পাশের ঘরে থাকেন। মো. রেজা ও জাসমিন বেগম তাঁদের আত্মীয়।

গত ১৮ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৮টা থেকে ৯টার দিকে মো. সাদিক, আবদুল মালিক, মো. রেজা ও জাসমিন বেগম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পারভীন নেছাকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ছেড়ে যেতে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাঁরা পারভীন নেছার জন্য বরাদ্দ হওয়া বসতঘরে হামলা চালিয়ে দরজা, জানালা, টিনের চালসহ আসবাব ভাঙচুর করেন। পাশাপাশি তাঁরা (আসামিরা) বসতঘরসংলগ্ন সবজিগাছ কেটে ৮০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করেন। ঘরের বাসনপত্র ও নগদ টাকা চুরি এবং পাঁচ হাজার টাকার বাঁশঝাড় কেটে নেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, পারভীন নেছার ঘরের বারান্দার তিনটি পিলার ভেঙে আছে। বারান্দার চাল মাটিতে পড়ে আছে। তবে দরজা, জানালা ও দেয়াল অক্ষত রয়েছে। চারাগাছও অক্ষত।

এজাহারে ঘটনার সময় উপকারভোগী পারভীন নেছাকে ঘরে উপস্থিত থাকার কথা এবং ১ নম্বর সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পারভীন নেছার দাবি, ওই দিন তিনি বাড়িতে (আশ্রয়ণে) ছিলেন না। ফোনে পারভীন নেছা বলেন, 'যে দিন বারান্দা ভাঙছে ওই দিন আমি ওখানে (ঘটনাস্থলে) ছিলাম না। গাজিটেকায় ছিলাম। আমি পরের দিন গিয়া দেখছি বারান্দা ভাঙা। কীভাবে ভাঙছে তাও জানি না। এসিল্যান্ড স্যার ও তহশিলদার মরির (মহুরি) দিয়া মামলা লেখাইছন। তাঁরা মামলাত কিতা লেখছইন (লিখেছেন) আমি কইতাম পারতাম নায়।'

সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম চৌধুরী দাবি করেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করেছেন তিনি। এর বেশি কিছু বলতে পারবেন না।

প্রকল্পের পাশের মসজিদের ইমাম মো. আবদুল মন্নানের ভাষ্য, ঘরের বারান্দা যে দিন ভেঙে পড়েছে, তখন আনুমানিক দুপুর দেড়টা হবে। মসজিদের সামনে ছিলেন তিনি। লোকজন বাঁশ কাটছিল। কয়েকটি বাঁশ বিদ্যুতের লাইনে পড়ে ঘরের বারান্দায় টান খায়। এরপর বারান্দাটি পড়ে যায়। কেউ ইচ্ছা করে ভাঙেনি। মারামারির ঘটনায়ও ভাঙেনি।

মো. সাদিক বলেন, প্রশাসন ঘর ভাঙচুর ও চুরির অভিযোগ এনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তা মিথ্যা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল মন্নান বলেন, এখানে কেউ হামলা করে ঘর ভাঙেনি। মূলত নিম্নমানের কাজ ঢাকতেই প্রশাসন হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে মামলা করেছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেইন দাবি করেন, উপকারভোগী পারভীন নেছা তাঁদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন- পাশের ঘরের লোকজন তাঁকে ভয়ভীতি দেখায়। তাঁকে থাকতে দেয় না। বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা করে। এ হিসেবে ধারণা করেছেন, এটি তারা (আসামিরা) করেছে। এটি এখন আদালতের বিষয়।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com