
আপন দর্পণ
'আত্মবিশ্বাস আর আশাবাদ...'
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নাসরীন জাহান

নাসরীন জাহান [জন্ম :৫ মার্চ ১৯৬৪]
নাসরীন জাহান ১৯৬৪ সালের ৫ মার্চ ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে শিশু একাডেমির পত্রিকায় শিশু পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় ছোটগল্প 'ছাপানো গল্পটা' প্রকাশের মধ্য দিয়ে তাঁর সাহিত্য ভুবনে পদার্পণ। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস 'উড়ুক্কু'। উপন্যাসটি অনূদিত হয়ে 'The Woman Who Flew’ নামে বিশ্বখ্যাত পেঙ্গুইন থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
তাঁর রচিত অন্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সোনালি মুখোশ (১৯৯৬), করুশকাঠে কন্যা (১৯৯৮), উড়ে যায় নিশিপক্ষী (১৯৯৯), নিকুন্তিলা (২০০১), দূর পৃথিবীর গন্ধে (২০০৪), ঈশ্বরের বামহাত (২০০৭), আঁধারে রঙিন রাখাল (২০০৯), সিসেম দুয়ার খোল (২০১৩)। এ ছাড়া 'স্বপ্নবাজ', 'রূপবতী', 'অচিন পাখি নদী'- তিন নাটকের সমন্বয়ে 'তিনটি মঞ্চনাটক (২০১৫) নামে তাঁর একটি নাট্যগ্রন্থ প্রকাশিত ও মঞ্চায়িত হয়েছে।
সাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য নাসরীন জাহান ১৯৯৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। অন্যান্য সম্মাননার মধ্যে ফিলিপস পুরস্কার (১৯৯৪), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৫ উল্লেখযোগ্য)।
- দূর শৈশবের প্রথম স্মৃতি-
-- নানাবাড়ির অবারিত প্রান্তরের কথা মনে পড়ে। আমার তখন আড়াই বছর বয়স। শর্ষে ক্ষেতে শুয়ে আকাশের মেঘের মধ্যে মানুষ দেখতাম। অন্যান্য জন্তুও দেখতে পেতাম। যখন বলতাম সবাইকে, সবাই খুব অবাক হতো।
- শৈশব কৈশোরের বন্ধু যাঁরা-
-- শৈশবের বন্ধু রুবী, রেহানা, ঊর্মি।
- আপনি মূলত কথাসাহিত্যিক। কিন্তু সম্প্রতি কবিতাও লিখছেন...
-- মূলত কথাসাহিত্যিক আমি। নিজেকে শিল্পের আরেক খাতে নেওয়ার জন্যই কবিতা লিখতে শুরু করি। তবে কবি মাসুদুজ্জামান না লেগে থাকলে বোধ হয় আমার কবিতা লেখা হতো না।
- প্রথম বই প্রকাশের স্মৃতি-
-- খুব কষ্টের স্মৃতি। প্রকাশক খুব আগ্রহে বই করার ফাঁকে ক্যাজুয়ালভাবে লোন নিলেন। ফেরত দেননি। তখন সিলেট ছিলাম। প্রথম বইয়ের আবেগে জীবনের প্রথম প্লেনে করে ঢাকায় আসা। মেলায় বই হাতে নিতেই দেখি খারাপ বাইন্ডিংয়ের জন্য বই ভেঙে ভেঙে পড়ছে।
- যে বইগুলো বারবার পড়েছি ও পড়ব-
-- আমি কোনো বই-ই বারবার পড়ি না। একবার পড়লেই পছন্দের বই ভেতরে গেঁথে থাকে। তবে দেশ ও দেশের বাহির মিলিয়ে আমার প্রিয় বই অনেক।
- যে লেখকের লেখা পড়ে ঈর্ষা বোধ হয়-
-- এমন অনেকেই আছেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জগদীশ গুপ্ত, অমলেন্দু চক্রবর্তী, জীবনানন্দ দাশ, সন্দীপন চক্রবর্তী, জয় গোস্বামী, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, অ্যাডগার এলান পো, দস্তয়েভস্কি, ফ্রাঞ্জ কাফকাসহ আরও অনেকের লেখা পড়ে ঈর্ষা হয়েছে। কাফকার মেটামরফোসিসের প্রতি ঈর্ষা বোধ করি।
- এখন বন্ধু যাঁরা-
-- এখন বন্ধু সীমিত পরিসরে, অর্চি- মানে আমার কন্যা। আশরাফ আমার জীবনের সঙ্গী, রুবী, ঝর্ণা, ফরিদ, ঝর্ণা-ফরিদ। ঝর্ণা-ফরিদ ওরা বোন, বোনের বর হলেও আমার জীবনের অপরিহার্য বন্ধু।
- লেখক ছাড়া আরও যা হতে পারতাম বলে মনে হয়-
-- আমার গান করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ইনফেকশনে গলা নষ্ট হয়ে যায়। অভিনয় করার সুযোগ পেলেও করতাম। কিন্তু মফস্বলে ছিলাম বলে সেই আবহে আর এগোনো যায়নি।
- প্রিয় সংগীতশিল্পী-
-- নানা রকম গান শুনি। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, ক্লাসিক্যাল, গজল, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত। প্রিয় কত শিল্পী! অত নাম বলা মুশকিল।
- ব্যক্তিগত যে সীমাবদ্ধতা আমাকে কষ্ট দেয়-
-- আমি একাডেমিক কিছু তেমন মনে রাখতে পারি না। মঞ্চে গুছিয়ে কথা বলতে পারি না। এটা কষ্ট দেয়। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে আমি ইংরেজি জানি না বলে।
- চরিত্রের শক্তিশালী দিক-
-- আত্মবিশ্বাস আর আশাবাদ। সহজেই ক্ষমা করতে পারি।
- প্রিয়জনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি শোনা প্রশংসাবাক্য-
-- আপনার উড়ুক্কু এই- আপনার উড়ুক্কু সেই; অন্য বইয়ের পাঠকও আছে, কিন্তু এই বইয়ের যত পাঠক সেই স্তরের নয়- প্রশংসা হিসেবে অনেকে এমন বলেন। (উল্লেখ্য, উড়ূক্কু ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত নাসরীন জাহানের প্রথম উপন্যাস)
- প্রিয়জনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি শোনা অভিযোগবাক্য-
-- আপনার বা তোমার দেখা পাই না। কোথায় লুকিয়ে থাকো?
- মানুষের ব্যক্তিত্বের যে দিকটি আমাকে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী করে তোলে-
-- বুদ্ধিমত্তা আমাকে আকৃষ্ট করে। যথেষ্ট যোগ্য কিন্তু আপস করেন না, তদুপরি সরলতায় ভরপুর- এমন মানুষ আমাকে টানে।
- প্রিয় উদ্ধৃতি-
-- একটা বাক্য খুব ছোটবেলা থেকে পছন্দ : পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়।
- আমার প্রস্থানের পর এপিটাফে যা লেখা থাকবে-
-- আমার এপিটাফ থাকবে না। মরেও জায়গা দখল করার মধ্যে আমি নেই। জীবনকে জায়গা করে দিয়ে চলে যাওয়া দরকার।
তাঁর রচিত অন্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সোনালি মুখোশ (১৯৯৬), করুশকাঠে কন্যা (১৯৯৮), উড়ে যায় নিশিপক্ষী (১৯৯৯), নিকুন্তিলা (২০০১), দূর পৃথিবীর গন্ধে (২০০৪), ঈশ্বরের বামহাত (২০০৭), আঁধারে রঙিন রাখাল (২০০৯), সিসেম দুয়ার খোল (২০১৩)। এ ছাড়া 'স্বপ্নবাজ', 'রূপবতী', 'অচিন পাখি নদী'- তিন নাটকের সমন্বয়ে 'তিনটি মঞ্চনাটক (২০১৫) নামে তাঁর একটি নাট্যগ্রন্থ প্রকাশিত ও মঞ্চায়িত হয়েছে।
সাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য নাসরীন জাহান ১৯৯৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। অন্যান্য সম্মাননার মধ্যে ফিলিপস পুরস্কার (১৯৯৪), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৫ উল্লেখযোগ্য)।
- দূর শৈশবের প্রথম স্মৃতি-
-- নানাবাড়ির অবারিত প্রান্তরের কথা মনে পড়ে। আমার তখন আড়াই বছর বয়স। শর্ষে ক্ষেতে শুয়ে আকাশের মেঘের মধ্যে মানুষ দেখতাম। অন্যান্য জন্তুও দেখতে পেতাম। যখন বলতাম সবাইকে, সবাই খুব অবাক হতো।
- শৈশব কৈশোরের বন্ধু যাঁরা-
-- শৈশবের বন্ধু রুবী, রেহানা, ঊর্মি।
- আপনি মূলত কথাসাহিত্যিক। কিন্তু সম্প্রতি কবিতাও লিখছেন...
-- মূলত কথাসাহিত্যিক আমি। নিজেকে শিল্পের আরেক খাতে নেওয়ার জন্যই কবিতা লিখতে শুরু করি। তবে কবি মাসুদুজ্জামান না লেগে থাকলে বোধ হয় আমার কবিতা লেখা হতো না।
- প্রথম বই প্রকাশের স্মৃতি-
-- খুব কষ্টের স্মৃতি। প্রকাশক খুব আগ্রহে বই করার ফাঁকে ক্যাজুয়ালভাবে লোন নিলেন। ফেরত দেননি। তখন সিলেট ছিলাম। প্রথম বইয়ের আবেগে জীবনের প্রথম প্লেনে করে ঢাকায় আসা। মেলায় বই হাতে নিতেই দেখি খারাপ বাইন্ডিংয়ের জন্য বই ভেঙে ভেঙে পড়ছে।
- যে বইগুলো বারবার পড়েছি ও পড়ব-
-- আমি কোনো বই-ই বারবার পড়ি না। একবার পড়লেই পছন্দের বই ভেতরে গেঁথে থাকে। তবে দেশ ও দেশের বাহির মিলিয়ে আমার প্রিয় বই অনেক।
- যে লেখকের লেখা পড়ে ঈর্ষা বোধ হয়-
-- এমন অনেকেই আছেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জগদীশ গুপ্ত, অমলেন্দু চক্রবর্তী, জীবনানন্দ দাশ, সন্দীপন চক্রবর্তী, জয় গোস্বামী, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, অ্যাডগার এলান পো, দস্তয়েভস্কি, ফ্রাঞ্জ কাফকাসহ আরও অনেকের লেখা পড়ে ঈর্ষা হয়েছে। কাফকার মেটামরফোসিসের প্রতি ঈর্ষা বোধ করি।
- এখন বন্ধু যাঁরা-
-- এখন বন্ধু সীমিত পরিসরে, অর্চি- মানে আমার কন্যা। আশরাফ আমার জীবনের সঙ্গী, রুবী, ঝর্ণা, ফরিদ, ঝর্ণা-ফরিদ। ঝর্ণা-ফরিদ ওরা বোন, বোনের বর হলেও আমার জীবনের অপরিহার্য বন্ধু।
- লেখক ছাড়া আরও যা হতে পারতাম বলে মনে হয়-
-- আমার গান করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ইনফেকশনে গলা নষ্ট হয়ে যায়। অভিনয় করার সুযোগ পেলেও করতাম। কিন্তু মফস্বলে ছিলাম বলে সেই আবহে আর এগোনো যায়নি।
- প্রিয় সংগীতশিল্পী-
-- নানা রকম গান শুনি। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, ক্লাসিক্যাল, গজল, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত। প্রিয় কত শিল্পী! অত নাম বলা মুশকিল।
- ব্যক্তিগত যে সীমাবদ্ধতা আমাকে কষ্ট দেয়-
-- আমি একাডেমিক কিছু তেমন মনে রাখতে পারি না। মঞ্চে গুছিয়ে কথা বলতে পারি না। এটা কষ্ট দেয়। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে আমি ইংরেজি জানি না বলে।
- চরিত্রের শক্তিশালী দিক-
-- আত্মবিশ্বাস আর আশাবাদ। সহজেই ক্ষমা করতে পারি।
- প্রিয়জনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি শোনা প্রশংসাবাক্য-
-- আপনার উড়ুক্কু এই- আপনার উড়ুক্কু সেই; অন্য বইয়ের পাঠকও আছে, কিন্তু এই বইয়ের যত পাঠক সেই স্তরের নয়- প্রশংসা হিসেবে অনেকে এমন বলেন। (উল্লেখ্য, উড়ূক্কু ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত নাসরীন জাহানের প্রথম উপন্যাস)
- প্রিয়জনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি শোনা অভিযোগবাক্য-
-- আপনার বা তোমার দেখা পাই না। কোথায় লুকিয়ে থাকো?
- মানুষের ব্যক্তিত্বের যে দিকটি আমাকে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী করে তোলে-
-- বুদ্ধিমত্তা আমাকে আকৃষ্ট করে। যথেষ্ট যোগ্য কিন্তু আপস করেন না, তদুপরি সরলতায় ভরপুর- এমন মানুষ আমাকে টানে।
- প্রিয় উদ্ধৃতি-
-- একটা বাক্য খুব ছোটবেলা থেকে পছন্দ : পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়।
- আমার প্রস্থানের পর এপিটাফে যা লেখা থাকবে-
-- আমার এপিটাফ থাকবে না। মরেও জায়গা দখল করার মধ্যে আমি নেই। জীবনকে জায়গা করে দিয়ে চলে যাওয়া দরকার।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com