শিল্পকলায় পিঠার পসরা, ঐতিহ্যের ঘ্রাণ

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২৩ । ১০:২৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

সমকাল প্রতিবেদক

শিল্পকলায় পিঠা উৎসব

আবহমান বাংলার লোকসংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ পিঠাপুলি। কনকনে শীতের সঙ্গে পিঠাপুলির নিবিড় সম্পর্কের চিত্র দেখা যায় গ্রামীণ বাংলায়। শীত মৌসুমে পিঠা পাঠানো হয় আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাড়িতেও। তবে বাঙালির এ শিকড়ের সংস্কৃতি অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে নগরের জীবনে। পিঠার সঙ্গে ঐতিহ্যের যোগ তুলে ধরতে কয়েক বছর ধরে রাজধানীতে পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছে জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ ও শিল্পকলা একাডেমি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ১০ দিনের জাতীয় পিঠা উৎসব।


এটি উৎসবের নিয়মিত আয়োজনের ১৬তম আসর। মাঘের পড়ন্ত বিকেলের হিম শীতল পরিবেশে আকাশে রংবেরঙের বেলুন উড়িয়ে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবারের উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। একাডেমির মহাপরিচালক ও উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নাট্যজন ম. হামিদ। আরও বক্তব্য দেন নৃত্য প্রশিক্ষক আমানুল হক ও উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম।


মেড়া পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুর পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিফা, রসফুল পিঠা, সুন্দরী পাকান, সর ভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, নারকেলের সের পুলি, নারকেল জিলাপি, তেজপাতা পিঠা, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ছিট পিঠা, পানতোয়া, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ছাঁচ পিঠা, ছিটকা পিঠা, দুধ চিতই, বিবিখানা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, মালপোয়া, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, দুধরাজ, ফুলঝুরি পিঠাসহ শতাধিক রকমের পিঠা দিয়ে সাজানো হয়েছে উৎসবের স্টলগুলো।


উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পিঠা খাওয়া ও বিকিকিনির পাশাপাশি প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে নাচ-গান, আবৃত্তি, অ্যাক্রোবেটিক, পথনাটকসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২৮ জানুয়ারি শেষ হবে এ পিঠা উৎসব।


মধুসূদন ও জয়নুলকে নিয়ে আলোচনা

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। গতকাল একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় 'উত্তর-ঔপনিবেশিক চোখে মধুসূদনের কবিমন' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান। এতে 'জয়নুলের রেখার শক্তি ও স্থানিক আধুনিকতার সূত্রপাঠ' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী মোস্তফা জামান। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব কুমার সরকার। একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।


রফিকউল্লাহ খান বলেন, মধুসূদনের মহাকাব্য-খণ্ডকাব্য এবং নাটকে আবহমান বাংলার ইতিহাস-পুরাণ-লোকাচার বৈশ্বিক রূপরীতিতে ফুটে উঠেছে।


জয়নুলকে নিয়ে প্রবন্ধে মোস্তফা জামান বলেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন রেখা ও রঙে গণজীবনের কথা বলেছেন। তাঁর চিত্রকর্মে নিবিড় অবলোকন করলে সেখানে দেশজ আধুনিকতার সূত্রসার পাওয়া যায়।


মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বাংলা সাহিত্য এবং বাঙালির সংস্কৃতির উৎসমুখ।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com