
সমাবেশে ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগ পালানোর দল নয়, পালাবে না
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২৩ । ০৫:০৯ | প্রিন্ট সংস্করণ
সমকাল প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের - সমকাল
বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে মরণযাত্রা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। তাই আওয়ামী লীগ ও সরকারকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেবেন- এমন দিবাস্বপ্ন দেখে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ পালানোর দল নয়, আওয়ামী লীগ পালাবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির গণজোয়ারে ভাটা পড়েছে। তাদের পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা শুরু হয়েছে। এভাবেই তারা পরাজিত হবে, আন্দোলনে হবে, নির্বাচনেও হবে। আগামী নির্বাচনে তাদের মরণ হবে, রাজনৈতিক মরণ।
গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরা থানার আজমপুর আমিন মার্কেটের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সমাবেশ এবং দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। পদযাত্রায়ও তারা ব্যর্থ হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কখনও বলে ৫৪ দল, আবার বলে ১০ দফা। আবার বলে, রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা। শুক্রবার দেখলাম ১৪ দফা। ৫১ দফার আন্দোলন চলছে, দল হচ্ছে ৫৪টা জগাখিচুড়ি, ঐক্যজোট জগাখিচুড়ি। এ দেশে জগাখিচুড়ি কর্মসূচি কখনও সফল হবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করছে না। বিএনপি বাড্ডায় পদযাত্রা করছে, আওয়ামী লীগ উত্তরায় শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।
বিএনপির চার দিনের পদযাত্রা কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানীতে এই সমাবেশ ও শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পাল্টা শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ। যেখানে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কার্যত বিশাল গণসমাবেশে পরিণত হয়। একই দিন যুবলীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনগুলোও আলাদাভাবে মিছিল-সমাবেশ করেছে।
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এত লাফালাফি, এত ছোটাছুটি, এত লোটা-কম্বল, এত কাঁথা-বালিশ, সমাবেশ হলে সাত দিন ধরে সমাবেশস্থলে শুয়ে পড়ে আর পাতিলের পর পাতিল খাবার তৈরি হয়! কোথায় গেল সেদিন? কোথায় গেল লালকার্ড? কোথায় গেল গণঅভ্যুত্থান? কোথায় গেল গণজোয়ার? গণজোয়ারে এখন ভাটার টান। তাই এটা বিএনপির পদযাত্রা নয়, পেছন যাত্রা।
তিনি বলেন, বিএনপি তো এখন কথার রাজা। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল, যাঁর কাজ নেই শুধু কথা আর কথা। শুধু কথামালার চাতুরী। আমরা কাজ করছি, আর বাধ্য হয়ে তাদের কথার জবাব দিচ্ছি। তারা একতরফা মিথ্যাচার ও বিষোদ্গার করে আসছে। আওয়ামী লীগ কি চুপচাপ বসে থাকবে?
নেতাকর্মীর উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে শান্তি সমাবেশ থেকে বলব, ডাক দিলে চলে আসবেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়াই করছি। রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ আমরা ছাড়ব না। আমরা মানুষের পাশে ছিলাম, এ শীতের কষ্টেও মানুষের পাশে আছি।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি আবারও রাস্তায় নেমেছে। আমরা বারবার বলেছি, আগামী সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিএনপির জনগণের ওপর আস্থা থাকলে নির্বাচনে আসুক। নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুল রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিব হাসান প্রমুখ।
যুবলীগের শান্তি সমাবেশ: শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে 'বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের' প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করেছে যুবলীগ। সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুর রশীদ, রফিকুল ইসলাম, মৃনাল কান্তি জোদ্দার প্রমুখ।
লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশকে পেছনের দিকে নিতে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের মিথ্যা প্রচারণা ও গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং ইউনিটে শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। বলতে হবে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়নি, উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শেখ হাসিনা ও নৌকার পাশে থাকুন, নৌকায় ভোট দিন।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, বিএনপির মুখে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা মানায় না। আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রধান শত্রু এ দেশের সাধারণ জনগণ।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com