সুইডেন ও ফিনল্যান্ডে পড়াশোনা

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২৩ । ১৫:৪০ | প্রিন্ট সংস্করণ

হাসান রিয়াজ, সুইডেন থেকে

আমি সুইডেনে আছি প্রায় দুই বছর ধরে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে টেলিকমিউনিকেশন নিয়ে পড়ছি। পরিবেশবিজ্ঞান, ভাষাশিক্ষা, কৃষি গবেষণা ও ইঞ্জিনিয়ারিং- এসব বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সুইডেনকে আদর্শ বলা হয়। আরও কিছু বিষয় যেমন এমবিএ, টেলিকমিউনিকেশন, আইন, ম্যাথমেটিকস, জনস্বাস্থ্য, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, মেডিকেল, অর্থনীতি, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, হেলথকেয়ার ম্যানেজমেন্ট, ফিল্ম ও মিডিয়া বিশ্বমানের। উত্তর ইউরোপে বাল্টিক সাগরতীরের দেশ সুইডেন। শিক্ষা, গবেষণা, চাকরি ও ব্যবসার জন্য পৃথিবীর বহু দেশ থেকে মানুষ জড়ো হয়েছেন এ দেশে। প্রতি বছর সাধারণত অক্টোবর থেকে জানুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা থাকে।

তবে বিভিন্ন প্রোগ্রাম অনুযায়ী, সময়সীমা ভিন্ন হতে পারে। সুইডেনে আবেদন-প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। একজন আবেদনকারীকে Universityadmissions.se এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে Apply to Swedish universities-এ গিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং এই অ্যাকাউন্ট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীকে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। স্নাতক শেষ বর্ষে থাকা অবস্থায়ও আবেদন করতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে মাস্টার্স শুরুর আগে অবশ্যই স্নাতক সম্পন্ন হতে হবে, না হলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই ব্যয়বহুল। তাই সুইডেনে পড়তে গেলে বেস্ট অপশন হলো স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাওয়া। সুইডেনের ইউনিভার্সিটির অনেকগুলোই ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরের সারিতে। তাই ইউনিভার্সিটি থেকে দেওয়া স্কলারশিপ বা বৃত্তিগুলো কিছুটা প্রতিযোগিতামূলক।

বিশ্ববিদ্যালয় ও টিউশন ফি :সুইডেনে বেশ কয়েকটি বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যার প্রায় সবক'টিই দেশীয় সরকারি তহবিলে পরিচালিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৩ বছরমেয়াদি ব্যাচেলর, দুই বছরমেয়াদি মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার সুযোগ আছে। সুইডেনের শিক্ষাব্যবস্থা সব স্তরেই অনেকটা গবেষণানির্ভর। আর এ কারণেই সারাবিশ্বের ছাত্রছাত্রীদের কাছে এর চাহিদাও অনেক বেশি। এখানে ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য ১২ বছরের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ১৬ বছরের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় এখানে টিউশন ফি অনেক কম। তবে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। স্কলারশিপ বা বৃত্তিভেদে বিনা খরচে পড়াশোনা করার সুবিধা ছাড়াও রয়েছে স্নাতক পর্যায়ে নূ্যনতম ৩০ ক্রেডিট সম্পন্ন করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার সুবিধা। তবে কাজের ক্ষেত্রে সুইডিশ ভাষা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সুইডেনে বিভিন্ন বৃত্তির মধ্যে অন্যতম এসআই স্কলারশিপ। আবেদনের জন্য প্রথমে সুইডেনে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদন করতে হবে। প্রায় সব বিষয়েই ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য লাগবে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং আইইএলটিএস। ভর্তির জন্য বিষয়ভিত্তিক বেশকিছু শর্ত (স্নাতক ডিগ্রি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোটিভেশন লেটার/স্টেটমেন্ট অব পারপাস, রেফারেন্স লেটারস, সিভি ইত্যাদি) পূরণের পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাগত যোগ্যতা যেমন- নূ্যনতম আইইএলটিএস বা টোফেল স্কোরের কথা বলা থাকে।

সুইডেনের প্রথম সারির কয়েকটি ইউনিভার্সিটি


Stockholm University-https://www.su.se/cmlink/stockholm-university
Lund University
https://www.lunduniversity.lu.se/
Uppsala University
https://www.uu.se/en/admissions/
The University of Gothenburg
https://www.gu.se/en

ফিনল্যান্ডে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে প্রতিবছর আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী পড়তে আসেন। ব্যাচেলর ছাড়াও মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আসার সুযোগ এখানে আছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য ফিনল্যান্ডে দুই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউনিভার্সিটি, অন্যটি ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স, যা ইউএএস নামেই বেশি পরিচিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রোগ্রাম হচ্ছে- ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, প্লাস্টিক টেকনোলজি, ইনফরমেশন টেকনোলজি, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, নার্সিং, সোশ্যাল সার্ভিস, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, বিজনেস ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং ইলেকট্রনিকস। ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য বিশেষ করে স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য কেন্দ্রীয় একটি প্রতিষ্ঠান আছে। (https://www.admissions.fi) যার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফলিত বিজ্ঞানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হয়। এই ওয়েবসাইটে এ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা তথ্য পাওয়া যাবে। তা ছাড়া সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আরেকটি ওয়েব পোর্টাল আছে (http://universityadmissions.fi) যার মাধ্যমে যে কোনোটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে কাজ করার নানা সুযোগ যা ইউরোপের যে কোনো দেশের তুলনায় নিঃসন্দেহে অনেক ভালো।

ফিনল্যান্ডের অফিসিয়াল ভাষা ফিনিশ এবং সুইডিশ আর অধিকাংশ মানুষের মুখের ভাষা হচ্ছে ফিনিশ। কিন্তু দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ইংরেজি কোর্স বাধ্যতামূলক হওয়ায় ফিনল্যান্ডের সবাই ইংরেজি ভাষার সঙ্গে পরিচিত। ফিনল্যান্ডের বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয় এমন কোর্স রয়েছে। ফলে ফিনিশ ভাষা না জেনেও বাইরের শিক্ষার্থীরা পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। সেখানকার প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনিশ এবং সুইডিশ ভাষা শেখার জন্য ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার আছে।

University of Helsinki (http://www.helsinki.fi/university/)
Aalto University
(http://www.aalto.fi/en/)
Arcada University of Applied Sciences (http://arcada.fi/en)
Haaga-Helia University of Applied Sciences (http://www.haaga-helia.fi/en)
Helsinki Metropolia University of Applied Sciences
(http://www.metropolia.fi/en/)  

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com