
৬ মসজিদের নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২৩ । ১২:৩২ | প্রিন্ট সংস্করণ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ফাইল ছবি
সাড়ে তিন বছরেও টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় ১৩ মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের একটিরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। জমি নিয়ে জটিলতা, মামলাজনিত কারণে ছয়টি মসজিদের নির্মাণকাজ এখনও শুরুই হয়নি। তিনটি মসজিদের কাজ শুরু হলেও নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় কাজ করতে পারবে না বলে গণপূর্ত বিভাগে চিঠি দিয়েছে সংশ্নিষ্ট ঠিকাদার।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৪ কোটি ৮৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা চুক্তি মূল্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুরানি ও বীথি যৌথভাবে টাঙ্গাইল জেলা সদর মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ করছে। ২০১৯ সালের ১৫ মে নির্মাণ শুরু হয়ে বর্তমানে মসজিদটির ৯২ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
বাসাইলে ১৩ কোটি ২১ লাখ টাকা চুক্তি মূল্যে দেশ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি মসজিদ নির্মাণ করছে। ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল কাজ শুরু হয়ে বর্তমানে মসজিদটির ৭৩ ভাগ শেষ হয়েছে। ১৩ কোটি ৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা চুক্তি মূল্যে জুয়েল সিকদার এন্টারপ্রাইজ সদর উপজেলায় মসজিদটির কাজ করছে। ২০১৯ সালের ১০ জুন থেকে কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালের ১০ জুন ১২ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নুরানী কন্ট্রাকশন ধনবাড়ীতে মসজিদের নির্মাণকাজ করছে। ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
সখীপুরে ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে কেএসবিএল ও আরএসএল যৌথভাবে ২০১৯ সালের ১৫ মে কাজ শুরু করে। এ সময় তারা মাত্র ৩৭ ভাগ কাজ করেছে। কালিহাতীতে ২০১৯ সালের ৬ জুন ১২ কোটি ৯০ লাখ ৬ হাজার টাকা মূল্যে মাহফুজ খান লিমিটেড ও মেসার্স দাস ট্রেডার্স যৌথভাবে নির্মাণকাজ শুরু করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মসজিদটির মাত্র ১৮ ভাগ কাজ শেষ করেছে। দেলদুয়ারে ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কেএসবিএল ও আরএসএল যৌথভাবে ২০১৯ সালের ৩০ জুন নির্মাণকাজ শুরু করে। কাজ হয়েছে ৩৩ ভাগ।
ধীরগতি, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ না করার কারণে এ তিনটি মসজিদের নির্মাণকাজের চুক্তি বাতিল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী বাবু কুমার বিশ্বাস।
দেলদুয়ার মডেল মসজিদের ঠিকাদার সরোয়ার হোসেন খান বলেন, গত এক বছরে নির্মাণ সামগ্রীর দাম অনেক বেড়েছে। কাজ করলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাই কাজ না করতে চিঠি দিয়েছেন।
স্থান নির্বাচন করা হলেও ২৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করার জন্য প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা পাওয়া না যাওয়ায় মধুপুরে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। নাগরপুর ও ভুঞাপুর উপজেলায় মসজিদ কোথায় হবে- এ নিয়ে আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ, প্রশাসনিক জটিলতা ও মামলার কারণে এখনও স্থান নির্বাচন হয়নি। গোপালপুর ও মির্জাপুর মসজিদের জন্য স্থান নির্বাচন হলেও অধিগ্রহণ না হওয়ায় শুরু হয়নি কাজ।
ঘাটাইল উপজেলায় এখনও মসজিদের জন্য নির্ধারিত স্থান নির্বাচন না হওয়ায় নির্মাণকাজ শুরু করা যায়নি।
দেলদুয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মারুফ বলেন, দেলদুয়ারে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারের জন্য সরকারের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গণপূর্ত বিভাগকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নজর দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ঠিকাদার রফিক মিয়া বলেন, 'কাজে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ায় ঠিকাদারদের পথে বসতে হবে।'
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, বিভিন্ন জটিলতার কারণে এখনও কোনো মসজিদ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, যে ক'টি মসজিদের কাজ শুরু হয়েছে, সেগুলোর ফান্ডের সমস্যা ছিল। বর্তমানে কাজ চলমান রয়েছে। স্থান নির্ধারণ ও জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কারণে যে ছয়টি মসজিদের কাজ শুরু হয়নি, সেগুলো দ্রুত জটিলতা কাটিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করতে পারবেন।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com