প্রশাসনিক অখণ্ডতায় নজর নির্বাচন কমিশনের

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ১২:০২ | প্রিন্ট সংস্করণ

সমকাল প্রতিবেদক

প্রশাসনিক অখণ্ডতাকে প্রাধান্য দিয়েই সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার কমিশন সভার বৈঠকে সীমানা পুনর্নির্ধারণের কর্মপন্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।

এ ক্ষেত্রে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে আদমশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করবে না কমিশন। তবে আপাতত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে পাঠানো খসড়া প্রতিবেদনের তথ্য ধরেই কাজ শুরু হচ্ছে। আবেদন আহ্বান না করলেও ইতোমধ্যে সীমানার পরিবর্তন চেয়ে ইসিতে ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা বলেছেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে গেলে নানা ধরনের প্রশাসনিক অসুবিধা সৃষ্টি হবে। তাই সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অখ তার বিষয়টি এবার সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইসি সূত্র জানায়, জনশুমারি ও গৃহগণনার খসড়ার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হতে আরও সময় লাগতে পারে। এরই মধ্যে জেলাভিত্তিক জনসংখ্যার হিসাবও প্রকাশিত হয়েছে। উপজেলাভিত্তিক হিসাব প্রস্তুতের কাজ চলছে। তাই চূড়ান্ত জনশুমারি প্রকাশ না হলেও এসব ধরেই সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে।

এ ব্যাপারে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, বিবিএস থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হয়তো জুনের আগে পাওয়া যাচ্ছে না। খসড়া প্রতিবেদনের তুলনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পাঁচ ভাগ পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাতে কাজ করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য একটা সফটওয়্যারের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

২০২১ সালে নির্বাচন কমিশনকে আইনের অধীনে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দিয়ে 'জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ' আইন পাস হয়। আইনের ৭ ধারায় বলা হয়েছে, 'ইসির সীমানা নির্ধারণের বিষয় নিয়ে দেশের কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলা যাবে না।' তবে ইসিকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হলেও বিতর্ক ও ঝামেলা এড়াতে এবার জনসংখ্যার ভিত্তিতে নয়, প্রশাসনিক এবং ভৌগোলিক অখ তাকে গুরুত্ব দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। সে অনুযায়ী জাতীয় সংসদের অন্তত ৪০ থেকে ৪৫টি আসনের এলাকা পরিবর্তন হতে পারে।

সংশ্নিষ্ট সূত্র আরও জানায়, গতকাল পর্যন্ত সীমানা পুনর্নির্ধারণ চেয়ে ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে ইসিতে। সংশ্নিষ্ট এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আইনজীবীসহ বিভিন্ন মহল থেকেই আবেদন জমা পড়ছে। অনেকেই বর্তমান সীমানা বহাল রাখার আবেদন করেছেন। আবার কেউ কেউ আগের সীমানা বহাল রাখার আবেদনও জানিয়েছেন। তবে এমপিদের কেউ এখনও লিখিত আবেদন করেননি।

এ ব্যাপারে সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান ও নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, 'আমরা এখন পর্যন্ত আবেদন আহ্বান করিনি। তার পরও অনেকে ব্যক্তিগতভাবে দরখাস্ত দিচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতারা যোগাযোগ করছেন।

দশম সংসদ নির্বাচনের আগে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন ৫০টি আসনে পরিবর্তন আনে। এর পর একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কে এম নূরুল হুদা কমিশন ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনে। এর আগে ২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ১৩২টি আসনে বড় ধরনের

পরিবর্তন এনেছিল।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com