
‘মাসুম বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমাদের স্বামীকে ফিরিয়ে দেন’
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ২২:৫২ | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ২২:৫২
যশোর অফিস

সংবাদ সম্মেলনে পল্লিচিকিৎসকের স্ত্রী- সমকাল
যশোরে এক পল্লিচিকিৎসককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করে তাঁর দুই স্ত্রী ফেরত চাইলেন স্বামীকে। অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘মাসুম বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমাদের স্বামীকে ফিরিয়ে দেন।’
মঙ্গলবার প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ পল্লিচিকিৎসকের স্ত্রীদ্বয় জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের খড়কি গাজীর বাজারের রিনা মেডিকেল নামে নিজ চেম্বার থেকে তাঁদের স্বামী সেলিম হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় অস্ত্রধারীরা। এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দপ্তরে ঘুরে ঘুরে স্বামীর সন্ধান না পেয়ে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রথম স্ত্রী আলজিয়া খাতুন রিনা ও দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা খাতুন ছাড়াও তাঁদের চার সন্তান ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
পল্লিচিকিৎসক সেলিম হোসেন (৪৫) সদর উপজেলার বি-পতেঙ্গালী গ্রামের মৃত আলা বক্সের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পল্লিচিকিৎসক সেলিম হোসেন দীর্ঘদিন ধরে যশোর শহরতলি গাজীর বাজারে রিনা মেডিকেল নামে একটি চেম্বারে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে দোকানের সামনে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস থামে। গাড়ি থেকে ৩৫-৪৫ বছর বয়সী ১০ থেকে ১২ জন নেমে সেলিম হোসেনকে পরিচয় দেয়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক। এখনই তাদের সঙ্গে যেতে হবে। সেলিম রেজা তাদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তারা কোনো কার্ড না দেখিয়ে দোকানের শাটার বন্ধ করে সেলিম হোসেনকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায়। এরপর স্ত্রী ও স্বজনরা তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে কয়েক দফা সেলিমের পরিবার যশোর ডিবি-পুলিশ, পিবিআই, র্যাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজ নিয়েও কোনো সন্ধান পায়নি। সেলিম হোসেনের রাজনৈতিক কোনো সংযুক্ততা নেই বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা খাতুন বলেন, ‘দুটি পরিবারে তাঁদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যে একটি বাক্প্রতিবন্ধী। দুই পরিবারই পল্লিচিকিৎসকের উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল। তাঁর অনুপস্থিতিতে পরিবার দুটি অসহায়ভাবে দিন অতিবাহিত করছে। প্রতিবন্ধী ছেলে ও মাসুম বাচ্চাদের মুখের দিকে চেয়ে আমাদের স্বামীকে আমাদের বুকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসন ও সরকারপ্রধানের সহযোগিতা কামনা করছি।’
জেলা পল্লিচিকিৎসক সমিতির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সেলিমকে আমরা স্বজন হিসেবেই চিনি। আমাদের এক সহকর্মী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। এ ছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও র্যাবকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সাত দিন পার হলেও কোনো ফলাফল না পেয়ে আমরা হতাশ।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যাপস) বেলাল হোসাইন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com