আদালত ভবনে পুড়ল মামলার আলামত

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ০১:৪৭ | প্রিন্ট সংস্করণ

সমকাল প্রতিবেদক

ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালত ভবনের নিচতলার মালখানায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বিভিন্ন মামলার আলামত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভান। তবে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত এবং কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এগুলো খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে ফায়ার সার্ভিস। আদালত ও পুলিশের পক্ষ থেকেও আলাদা তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি মামলার আলামত ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল। তদন্তের পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে আদালতের বেজমেন্টে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে আরও তিনটি ইউনিট গিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। দুপুর ২টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে পুরোপুরি নেভাতে আরও আধা ঘণ্টা সময় লাগে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আদালত সূত্র জানায়, আগুন লাগার সময় সেখানে আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম চলছিল। বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তখন কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারপাশ। কেউ কেউ পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে কাজ শুরু করেন। আগুন লাগার পরপরই ভবনের দোতলার হাজতখানায় থাকা আসামিদের বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায় পুলিশ।

সংশ্নিষ্টরা জানান, ১০ তলা আদালত ভবনের বেজমেন্টের মালখানায় মামলা-সংক্রান্ত বিভিন্ন আলামত রাখা থাকে। আলামত বলতে বোঝায়, অপরাধ সংঘটনে ব্যবহূত বা সেই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত জিনিসপত্র। এর মধ্যে সাধারণ ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে শুরু করে দলিলপত্রও থাকে।

সিজেএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির সমকালকে বলেন, কোন কোন মামলার কী কী আলামত পুড়ে গেছে তা এখনও জানা যায়নি। এগুলো পরে তদন্তে বেরিয়ে আসবে। আদালতের পক্ষ থেকেও এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

আগুন নেভানোর পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নিকাে র সূত্রপাত ও কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করবে ফায়ার সার্ভিস।

কোতোয়ালি থানার ওসি শাহীনুর রহমান সমকালকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নেভানোর প্রক্রিয়ায় সহায়তার পাশাপাশি লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

সীমান্ত স্কয়ার ও টেক্সটাইল মিলে আগুন :রাজধানীর ধানমন্ডির জিগাতলায় সীমান্ত স্কয়ার শপিংমলে গতকাল বিকেলে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। বিকেল ৫টা ২ মিনিটের দিকে বেজমেন্টের ময়লার স্তূপে আগুনের সূত্রপাত। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়। বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এদিকে শ্যামপুর এলাকার অটবির মোড়ের চাঁদনি টেক্সটাইল মিলে গতকাল সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পাওয়ার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ছুটে যায়। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, দুই ঘটনাতেই আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। এতে কেউ হতাহত হননি।



© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com