
চট্টগ্রামে যুবলীগের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ, হতাশা
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ০১:৪৭ | প্রিন্ট সংস্করণ
তৌফিকুল ইসলাম বাবর, চট্টগ্রাম

সংগঠনের পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে এর ভিত্তিতে কমিটি ঘোষণা করছে যুবলীগ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটি করার জন্য জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হলে সভাপতি পদের জন্য তা জমা দেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক। একই পদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী। গত ১৬ নভেম্বর ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয় এবং এতে দু'জনকেই সহসভাপতি করা হয়। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে পদত্যাগ করেন এই দুই নেতা। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণার পরও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার কেন্দ্র থেকে উত্তর জেলার ৩২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এতে সহসভাপতি করা হয় নুরুল মোস্তফা মানিক ও রাজীবুল আহসানকে। কিন্তু কমিটি ঘোষণার পরপরই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাঁরা। সভাপতি পদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। আগের কমিটিতে সহসভাপতি ছিলেন মানিক ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন রাজীবুল।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, সব দিক বিবেচনা করে যতটা পারা গেছে সবাইকে রেখে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সবার মনও রক্ষা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মী বলেছেন, কেন্দ্র থেকে চাপিয়ে দেওয়া কমিটি মন রক্ষা নয়, অনেকের মন ভাঙছে। কমিটিতে সিনিয়র-জুনিয়রের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি। আগের কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করা নেতাকে পরের কমিটিতে সহসভাপতি পদ দেওয়া হয়েছে। তাই বিষয়টি মেনে নেওয়া কঠিন।
জানতে চাইলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ সমকালকে বলেন, 'সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ দুটি। চাইলেই সবার মন রক্ষা করা যায় না। তবে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করে সবাইকে নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পদত্যাগ করা ব্যক্তিগত বিষয়। তাঁদের পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল আলমকে সভাপতি ও সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. শাহজাহানকে সাধারণ সম্পাদক করে উত্তরের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের প্রায় সাড়ে আট মাস পর কমিটি ঘোষণা করা হলো। কিন্তু কমিটি ঘোষণার পরই অনেকের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়। পদত্যাগ করেন দুই সহসভাপতি নুরুল মোস্তফা মানিক ও রাজীবুল আহসান সুমন। কমিটি ঘোষণার পর সোমবার রাতেই ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগের কথা জানান মানিক। তিনি উত্তর জেলা যুবলীগের বিদায়ী কমিটিতে চার নম্বর সহসভাপতি ছিলেন। নতুন কমিটিতে সিনিয়র-জুনিয়র বিবেচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাজীবুল আহসান সুমনও জানিয়েছেন, সভাপতি পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলেন তিনি। সহসভাপতি করায় বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারেননি।
গত ১৬ নভেম্বর দক্ষিণ যুবলীগের কমিটি ঘোষণার পর পদত্যাগ করা মোহাম্মদ ফারুক জানিয়েছেন, নতুন কমিটিতে সভাপতি পদ চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে মূল্যায়ন তো করাই হয়নি, উল্টো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়া হয়। তাই সহসভাপতি পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। যাদের সভাপতি-সম্পাদক করা হয়েছে তারা যুবলীগের নয়, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সহসভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করা পার্থ সারথী চৌধুরী বলেন, 'আমি সহসভাপতি পদের জন্য আবেদন করিনি। তাই পদত্যাগ করেছি।'
গত বছরের ২৮ মে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, ২৯ মে উত্তর জেলা এবং ৩০ মে মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ সময় পর জাঁকজমকভাবে সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও তিন সাংগঠনিক জেলার কোনোটির কমিটিই সম্মেলন থেকে ঘোষণা করতে পারেননি কেন্দ্রীয় নেতারা। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com