ভালোবাসা দিবসে পরিবারবঞ্চিত শিশুদের পাশে সস্ত্রীক তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ২৩:৩৩ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ২৩:৩৩

সমকাল প্রতিবেদক

ছবি: সমকাল

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে পারিবারিক স্নেহবঞ্চিত প্রায় দুইশ শিশুর সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি ও তাঁর স্ত্রী তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন ফুল ও উপহারসামগ্রী, শুনেছেন তাদের কথা, কবিতা ও গান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম দেখে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ এলাকার বরইখালীতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আবাসন ও শিক্ষা সহায়তা প্রতিষ্ঠান মাস্তুল ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড অরফানেজ শেল্টার হোমে যান তথ্যমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী নুরান ফাতেমা। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুরে নুরান ফাতেমা তাদের জন্য রান্না করা খাবার পাঠান আর অফিস শেষে মন্ত্রী সস্ত্রীক সেখানে যাওয়ার সময় নিয়ে যান জামাকাপড়সহ উপহারসামগ্রী ও নানা ধরনের খেলনা। মাস্তুলের প্রতিষ্ঠাতা কাজী রিয়াজ রহমান, উপদেষ্টা কাজী মাইনুর রহমান ও প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা তাঁদের স্বাগত জানান। মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী প্রত্যেক শিশুর হাতে রজনীগন্ধার ছড়া তুলে দেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমাজে পরিবারের স্নেহ-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত যারা স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়, কেউ যাদের স্বপ্ন দেখাতেও চায় না, সেইসব শিশু ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে নিয়ে এসে মাস্তুল ফাউন্ডেশন আশ্রয় দিয়েছে, শিশুশিক্ষা ও বয়স্কদের কর্মের সুযোগ করে দিয়েছে। সেই জন্য এই পয়লা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আমি এখানে তাদের কাছে এসেছি।’

‘আমি শুধু একজন মানুষ হিসেবেই এখানে এসেছি, তবুও আমার রাজনৈতিক পরিচয় আছে’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমার পরিবার যেমন আমাকে মমত্ববোধ শিখিয়েছে, তেমনি আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও দেখেছি। আজ আমরা ক্ষমতায়, যখন ক্ষমতায় ছিলাম না তখন দেখেছি, বিশাল গাড়িবহর নিয়ে চলার সময় জননেত্রীর গাড়ির সামনে যদি কোনো ভিক্ষুক এসে পড়ত, পুরো বহর থেমে যেত। শেখ হাসিনা তাকে সাহায্য করতেন।’

যে ঘটনা মন্ত্রীকে মাস্তুল ফাউন্ডেশনে যেতে উৎসাহিত করেছে সেটির বর্ণনা দিতে গিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি, ঢাকায় বিমানবন্দরের পাশে এক আশ্রয়ে বাবার সঙ্গে থাকা অল্পবয়সী ছেলে রোজ বিমান ওড়া দেখত। একদিন সে বাবাকে বলল বাবা আমি বড় হয়ে পাইলট হতে চাই। বাবা ধমক দিয়ে বললেন- যা, কাজে যা। সেই ছেলেটিকে মাস্তুল ফাউন্ডেশন নিয়ে এসেছে, পড়াশোনা করাচ্ছে। আমি তার স্বপ্নপূরণের জন্য প্রার্থনা করি।’

ড. হাছান মাহমুদ মাস্তুল স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র এবং এতিমখানা উদ্বোধন করেন এবং অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে স্থাপনাগুলো পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় মাস্তুল ফাউন্ডেশনের স্বাবলম্বী প্রকল্পের দুজন বিধবাকে দুটি সেলাই মেশিন এবং স্বাস্থ্য প্রকল্পে সেবার আওতায় থাকা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একজন রোগীর হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন মন্ত্রী। স্কুল এবং শেল্টার হোমের শিশুরা এ সময় গান ও ছড়া পরিবেশন করে। সংস্থার পরিদর্শন বইতে মন্ত্রী লেখেন, ‘এই অসাধারণ কার্যক্রমের জন্য মাস্তুল ফাউন্ডেশনকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’

মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে অতিথি হিসেবে পেয়ে আমরা অভিভূত এবং তাঁকে আমাদের প্রকল্পগুলো দেখাতে পেরে খুবই উচ্ছ্বসিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আজকে মন্ত্রী এসে আমাদের আরও অনুপ্রেরণা দিলেন। দুই লাখ টাকা দিলেন। এই অনুপ্রেরণাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আগামীতে আরও কাজ করে যাব।’

মাস্তুল উপদেষ্টা মাইনুর রহমান বলেন, ‘দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত মাস্তুল ফাউন্ডেশন ২০১৩ সাল থেকে নিজস্ব স্কুল ও এতিমখানায় দুইশত শিশুর শিক্ষা, আহার ও আবাসনের পাশাপাশি ১২ জেলার ২২টি স্কুলে সহস্রাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাগ, জুতা-মোজা বই-খাতাসহ সকল শিক্ষা উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। এর স্বাবলম্বী প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৭৫০ জন স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়া সংস্থাটি মৃত ব্যক্তিদের জানাজা, দাফন ও সৎকার করে থাকে।’

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com