ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২১

সৃষ্টিশীলতার উদযাপন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২৩ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

--

[বাঁ থেকে] জুরিবোর্ডের সদস্য ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, মঞ্জু সরকার, কিযী তাহ্‌নিন, সালেক খোকন, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর. এফ. হোসেন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত রেহমান সোবহান, ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ। ছবি :: মাহবুব হোসেন নবীন

এক দশকের বেশি পথযাত্রায় 'ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার' পরিণত হয়েছে দেশের সাহিত্যজগতের অন্যতম প্রেরণার নাম। এবার ছিল বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের আরাধ্য এ পুরস্কারের একাদশতম আসরের আয়োজন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির পুরোধা ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে পুরস্কৃত করা হয় ২০২১-এর বিজয়ী তিন সাহিত্যিককে। প্রথমবারের মতো দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা। জমকালো এই আয়োজনের আদ্যোপান্ত নিয়ে লিখেছেন আশিক মুস্তাফা

বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের অনুপ্রাণিত করতে ২০১১ সালে সমকালের উদ্যোগে এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের আর্থিক সমর্থনে প্রবর্তিত হয় 'ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার', যা আজ তার এগারোটি সফল আয়োজন পেরিয়ে প্রেরণার অনন্য এক অবস্থানে অধিষ্ঠিত। দশকব্যাপী বিস্তৃত সেই প্রেরণাসঞ্চারের ঐতিহ্য বাংলাদেশের সাহিত্যচর্চার পৃষ্ঠপোষকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। কোনো সাহিত্যিকই পুরস্কার বা প্রতিযোগিতার জন্য সাহিত্য রচনা করেন না- এ কথা যেমন সত্যি, তেমনি এও সত্যি যে, পুরস্কার সাহিত্যিকদের কাজের প্রতি পাঠক ও সমাজের এক প্রকার স্বীকৃতি হিসেবেই কাজ করে। দেশের মৌলিক সাহিত্যকর্মকে স্বীকৃতি দিতে সমকালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের প্রেরণায় একদিন যে সাহিত্য পুরস্কারের আয়োজনটি আলোর মুখ দেখেছিল; এগারো বছর পেরিয়ে আজ তা দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে।

সাহিত্যচর্চার তিনটি বিভাগে এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। এ বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছে আজীবন সম্মাননা। পুরস্কারের বিভাগ তিনটি হচ্ছে :এক- 'কবিতা ও কথাসাহিত্য', দুই- 'প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ' এবং তিন- 'তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার'। অনূর্ধ্ব ৪০ বছর বয়সী সাহিত্যিকরা এ শ্রেণিতে পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হন। এ বয়সসীমার লেখকদের যে কোনো সাহিত্যকর্মকেই এ পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়। প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ নিয়ে মননশীল শাখা এবং কবিতা ও কথাসাহিত্য নিয়ে সৃজনশীল শাখা। এ দুই শাখাতে বিজয়ী লেখকরা প্রত্যেকে পেয়েছেন দুই লাখ টাকা অর্থমূল্যের চেক। তরুণ সাহিত্যিক শাখায় বিজয়ীকে দেওয়া এক লাখ টাকার চেক। সেই সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে দেওয়া হয় পদক এবং সম্মাননাপত্র।

২০১১ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে পুরস্কারের জন্য জমা পড়া ৫৭০টি গ্রন্থ থেকে নির্ধারিত তিনটি শাখায় নির্বাচন করা হয়েছে সেরা তিন লেখককে। দেশের প্রথিতযশা চার সাহিত্যিকের সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ডের বিবেচনায় তাঁরা পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। প্রায় তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় পূজা সেনগুপ্তের নৃত্য-ভাবনা ও নির্দেশনায় তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের নৃত্য দিয়ে। এরপর লালনশিল্পী ফরিদা পারভীন একে একে গেয়েছেন চারটি গান আর জীবনের আবাহনে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। পুরস্কার আয়োজনের আদ্যোপান্ত দুটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেন সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান ও ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশনস ইকরাম কবীর।

গবেষণা ও অর্থনীতিবিষয়ক রচনায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক ও সমকালের পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক রেহমান সোবহান। স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান এবং ৬৫ বছরের বেশি সময় ধরে লেখালেখি ও গবেষণায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে দেশসেবায় অবদান রাখা রেহমান সোবহান বলেন, মার্চে ৮৮ ছুঁবো আমি। এই বয়সে এমন সম্মাননা প্রশংসনীয়। ভেবেছিলাম, আমার জ্ঞান দিয়ে, কলম দিয়ে লিখে যাব। এই কলমই হবে আমার অস্ত্র। তবে এ অস্ত্র ব্যবহার করতে গিয়ে আমি এমন যুদ্ধে পড়ে যাব, তেমনটা ভাবিনি। এখন তা ইতিহাস হয়ে গেছে। এরই মধ্যে পঞ্চাশ বছর চলে গেছে। এখন আমি দেখছি, কোন পথে দেশ এগিয়েছে। অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে রবার্ট ফ্রস্টের কবিতার মতোই, প্রান্তিক মানুষের কাছে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আরও বহু পথ যেতে হবে।

এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। কোলাহলমুখর পুরো হলে নিমেষেই নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। ঘোষণা করা হয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিকদের নাম। জুরি বোর্ডের সদস্যরা পর্যায়ক্রমে নাম ঘোষণা করতে থাকেন আর তুমুল করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে মিলনায়তন। ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ পেয়েছেন তরুণ কথাসাহিত্যিক শাখায় কিযী তাহ্‌নিন। মুক্তিযুদ্ধ গবেষণায় সালেক খোকন এবং কথাসাহিত্যে মঞ্জু সরকার।

কবিতা ও কথাসাহিত্য শাখায় নির্বাচিত হয় কথাসাহিত্যিক মঞ্জু সরকারের উপন্যাস 'উজানযাত্রা'। বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। প্রবন্ধ, গবেষণা, অনুবাদ, ভ্রমণ ও আত্মজীবনী শাখায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয়েছে সালেক খোকনের গবেষণাগ্রন্থ '৭১-এর আকরগ্রন্থ'। বইটি প্রকাশ করেছে কথাপ্রকাশ। তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানানো হয় এবং দুই লাখ টাকার চেক, পদক ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা। কিযী তাহ্‌নিনের লেখা 'বুধগ্রহে চাঁদ উঠেছে' গল্পগ্রন্থ তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার পেয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে পাঠক সমাবেশ। এ পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা।

তিনটি শাখায় পুরস্কারের জন্য ২০২১ সালে প্রকাশিত জমা পড়া ৫৭০টি বই থেকে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কবি আবিদ আনোয়ার, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস এবং লেখক ও গবেষক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ড শ্রেষ্ঠ বিবেচনায় তিনটি বই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করে।

দেশের সাহিত্যাঙ্গনের অন্যতম সেরা এ পুরস্কার ঘোষণা ও বিতরণ অনুষ্ঠানে সমবেত হয়েছিলেন দেশসেরা সাহিত্যিক, কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মীসহ সাহিত্যমনস্ক বিজ্ঞজন। গুণী ও বিশিষ্টজনের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমের এই অনুষ্ঠানস্থল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও টাইমস মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হোসেন। জুরি বোর্ডের সম্মানিত সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সমকালের ফিচার সম্পাদক মাহবুব আজীজ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, 'বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিশ্বদরবারে উজ্জ্বলতর করে প্রকাশ করতে সৃজনশীল সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলার সাধারণ মানুষের জীবনকাহিনি সাহিত্যে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মের নারীরা সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন, তরুণরা মুক্তিযুদ্ধের গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন- এগুলো আশাব্যঞ্জক। একটি জাতির সব মানুষের চাওয়া-পাওয়ার অপূর্ব সম্মিলন সাহিত্য। সাহিত্যিকরাই তৈরি করেন আগামীর মননজগৎ। এছাড়াও তিনি ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান।

সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিজয়ীরা আরও মহৎ সাহিত্য সৃষ্টিতে আত্মনিয়োগ করবেন। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় সাহিত্য পুরস্কার দিচ্ছে সমকাল। আগামীতেও সমকালের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ও সমকালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের কথা স্মরণ করে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও টাইমস মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ বলেন, যাঁরা এ বছর পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরা প্রকৃতই এ পুরস্কারের যোগ্য। সমকাল লেখক-সাহিত্যিকদের অনুপ্রাণিত করতে পারছে- এটাই আমাদের বড় পাওয়া। গুণীজনকে যে সম্মানিত করতে পেরেছি, সেটিই আমার জন্য বড় আনন্দের এবং গর্বের। তিনি আরও বলেন, লেখক-সাহিত্যিকরা এই সাহিত্য পুরস্কার অনুষ্ঠানের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত রেহমান সোবহানসহ পুরস্কার বিজয়ীদের সাফল্যও কামনা করেন এ. কে. আজাদ।

ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর বলেন, শিল্প-সাহিত্যের চর্চা রাজধানীকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এতে লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ সংস্কৃতি। নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা যত কমবে, জাতির মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি তত প্রকট হবে। আমরা গ্রাম থেকে লালনকে ঢাকায় এনেছি। এখন সময় এসেছে তাঁকে আবার সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার।

ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে পরিণত হয়েছে। ৫৭০টি বই থেকে যে তিনটি বই বেছে নেওয়া হয়েছে, নিশ্চয়ই এই তিনটি বই সাহিত্যের মানে অনেক ওপরে। তিনি শিশুদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ জুরি বোর্ডের পক্ষে বক্তব্যে ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, নিভৃতচারী সাহিত্যিকদের তুলে আনার প্রচেষ্টা ছিল ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কারে। এই পুরস্কার তরুণদের সাহিত্য চর্চায় উৎসাহিত করবে।

পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মঞ্জু সরকার বলেন, যোগ্য সাহিত্যিককে পুরস্কৃত না করার প্রচলিত 'রীতি' ভেঙে দিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার। ১৯৯৮ সালে বাংলা একাডেমির পুরস্কারের পর এটিই আমার প্রথম কোনো পুরস্কার। যদিও আমি এই পুরস্কারের জন্য বই জমা দিইনি। পুরস্কার পেতে চেষ্টাও করিনি। সেই ক্ষমতা ও যোগ্যতা আমার নেই। তারপরও পুরস্কার পেয়েছি। সেই সঙ্গে এই প্রথম পাঁচতারকা হোটেলের কোনো অনুষ্ঠানে এসেছি।

মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সালেক খোকন বলেন, আমার ১১ বছরের এই গবেষণাগ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক মানুষের গৌরবগাথা তুলে আনার চেষ্টা করেছি। ১১১ মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধ জয়ের গল্প, বীরত্ব, তাঁদের আনন্দ-বেদনা ও স্বপ্নভঙ্গের কথা রয়েছে এ বইয়ে। ১৯৭১ সালে আমরা একটি স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি। একটি মানচিত্র ও পতাকা পেয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সেটি চলবে আরও কয়েক দশক ধরে। এবং সেই লড়াইয়ের পথে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসই আমাদের পথ দেখাবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি যতদিন আমি বেঁচে থাকব, ততদিন পর্যন্ত ৭১-এর সঙ্গে থাকব।

তরুণ কথাসাহিত্যিক কিযী তাহ্‌নিন বলেন, আজকের দিনটি ভীষণ আনন্দের। অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ব্র্যাক ব্যাংক এবং সমকালকে, আমাকে আজকের এই দিনটি উপহার দেওয়ার জন্য। আমি আবারও নতুন করে বিশ্বাস করলাম, আমি লিখে যেতে চাই। এটি আমার প্রথম সাহিত্য পুরস্কার। প্রথম যেকোনো কিছুই ভীষণ আনন্দের ও আকর্ষণীয়। পুরস্কারটিও ঠিক তাই।

এগারো বছর পেরিয়ে পেছনের দিকে তাকিয়ে বলা যায় 'ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার'-এ ভূষিত সাহিত্যিকবৃন্দ বাংলাদেশের এবং বাংলা ভাষার সমসাময়িক সাহিত্যের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিত্ব। তাঁদের সম্মানিত করার মাধ্যমে মূলত বাংলা সাহিত্যের সৃজনচর্চাকেই সম্মানিত করা হয়েছে। প্রাণিত করা হয়েছে ভবিষ্যতের সাহিত্যসাধনার পথকে। এ পুরস্কারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যও তাই। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে যে সাহিত্যিকরা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন, তাদের নিয়মিত উৎসাহিত ও সম্মানিত করার জন্য এ আয়োজনটি এগিয়ে যাবে বছরের পর বছর।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com